السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

মহররম ও আশুরার তাৎপর্য

| comments

আরবি মাসের মধ্যে মহররম এমনই একটি মাস, কোরআনের ভাষায় যাকে 'হারাম মাস' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজাই ছিল মুসলমানদের ওপর ফরজ। অনেকেই মনে করে থাকেন, রাসূলের নাতি হোসাইন (রা.) শহিদ হওয়ার কারণেই এদিনের মর্যাদা। অথচ এটা সঠিক নয়। রাসূল (সা.) এদিনের তাৎপর্যের কথা বলেছেন। কোরআনেও এর কথা উল্লেখ হয়েছে। আর হোসাইনের (রা.) শহিদ হওয়ার ঘটনা রাসূলের ইন্তেকালের অনেক পরের। তবে এই ঘটনা এদিনের তাৎপর্যকে আরও বাড়িয়েছে নিঃসন্দেহে। আশুরার দিনটিকে অন্য দিনের ওপর কেন প্রাধান্য দিয়েছেন_ এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য আল্লাহই ভালো জানেন। তবে লোকমুখে প্রসিদ্ধ যে, এদিনে বিভিন্ন নবীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো ঘটেছে। কিয়ামতও এদিনে হবে। কিন্তু এসবের পক্ষে শক্তিশালী কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। শুধু ফেরাউনের কবল থেকে মুসার (আ.) সম্প্রদায়ের মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি এদিনে হয়েছে বলে শক্তিশালী বর্ণনায় পাওয়া যায়। মূলত, আল্লাহতায়ালা ইচ্ছা করলে যে কোনো দিনকে অন্য দিনের ওপর মর্যাদাবান ও প্রাধান্য দিতে পারেন। আমাদের উচিত সেদিনের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য বুঝে এর ওপর আমল করা। যেহেতু আল্লাহ এদিনটিকে তার রহমত ও বরকতের জন্য নাজিল করেছেন, এজন্য এদিনের পবিত্রতা হলো, দিনটি এমনভাবে কাটাবে, যেভাবে কাটানোর কথা রাসূলের হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। সুন্নত হিসেবে এদিনে শুধু রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে। এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, এদিন রোজা রাখলে সারা বছরের গোনাহর প্রতিদান হয়ে যায়। তবে রাসূলের নির্দেশ হলো, ইহুদিদের সামঞ্জস্যতা থেকে বাঁচার জন্য ১০ মহররমের সঙ্গে আগে-পরে মিলিয়ে আরও একদিনের রোজা রাখা। তবে কেউ শুধু আশুরার রোজা রাখলে গোনাহগার হবেন না। রাসূলের এ নির্দেশ দ্বারা আমাদের একটি শিক্ষা লাভ হয় যে, অমুসলিমদের সঙ্গে সামান্য বিষয়ে সামঞ্জস্যতাও আল্লাহর রাসূল পছন্দ করতেন না। সুতরাং একজন মুসলমানের বাহির এবং ভেতর অমুসলিমদের থেকে স্বতন্ত্র হওয়া চাই। তার চালচলন, লেনদেন, আমল-আখলাক_ সবই অমুসলিমদের চেয়ে সেরা হওয়া চাই। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আজকের মুসলমান রাসূলের এই শিক্ষা থেকে দূরে সরে পড়ার কারণে চারদিক থেকে নানা দুর্দশা নেমে এসেছে তাদের ওপর। আশুরার দিন রোজা ছাড়া অন্য কোনো আমলের কথা জোরালোভাবে প্রমাণিত নয়। যেমন অনেকেই মনে করেন, আশুরার দিন শিরনি পাকিয়ে বিতরণ করতে হবে। এসবের কোনোই ভিত্তি নেই। এগুলো দীনে সংযোজিত বিদআত হিসেবেই গণ্য। তবে একটি দুর্বল হাদিসের সূত্রে উল্লেখ আছে, যিনি এদিন পরিবার-পরিজন ও অধীনদের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করবেন, আল্লাহ তার উপার্জনে বরকত দেবেন। হাদিসটি সূত্রের দিক থেকে ততটা শক্তিশালী না হলেও এতে আমলে কোনো বাধা নেই। বরং এটা করলে আল্লাহর রহমত লাভের আশা করা যায়। শিয়ারা এদিনে তাজিয়া মিছিলসহ যেসব আনুষ্ঠানিকতা পালন করে, এর সঙ্গে ইসলামের কোনো যোগসূত্র নেই। প্রকৃত মুসলমান কারও জন্য এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া সমীচীন নয়।

জহির উদ্দিন বাবর
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template