নাস্তিকতা কিঃ নাস্তিকতা এক ধরনের অহংকারী মানসিকতা। যেখানে কেও নিজেকে/মানুষকে শ্রেষ্ঠ মনে করে এবং নিজের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কোন স্রষ্টার অস্তিত্ব মেনে নিতে পারে না। فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ اللَّهُ مَرَضًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ [٢:١٠] তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচারের দরুন।
নাস্তিকতা কেন হয়ঃ এমন মানসিকতা তৈরি হয় যে “আমি একাই যথেষ্ট, আলাদা কোন স্রষ্টার সাহায্য ছারাই আমার চলে”। আস্তিকদের তখন অন্যের দাস এবং নিজেকে ইচ্ছাস্বাধীন বলে মনে হয়।
নাস্তিকতা কিভাবে হয়ঃ إِلَّا إِبْلِيسَ اسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ কিন্তু ইবলীস; সে অহংকার করল এবং অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। (Saad: 74)
১। অন্যের দ্বারাঃ বিভিন্ন নাস্তিক মানুষের কথায় প্রভাবিত হয়ে বা নাস্তিক লেখকের বই পড়ে। এরা না বুঝেই নাস্তিক।
২। অপর্যাপ্ত জ্ঞ্যানের কারনেঃ এরা বিজ্ঞানের কিছু তথ্য জানার পর তার আলোকে দুনিয়া বিশ্লেষন করার চেষ্টা করে। কিছুজিনিষ মিলে গেলে ভাবে সবকিছুই এভাবে মেলানো যাবে। তাদের কাছে তখন সৃষ্টিকর্তা অপ্রয়োজনিয় মনে হয়। নিজেকে তখন তারা সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করে আর তাদের মনে শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার তৈরি হয়। এই অহংকারের কারনে পরবর্তিতে সত্যজ্ঞান লাভ করলেও আর নিজের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কোন স্রষ্টার অস্তিত্ব মেনে নিতে পারে না।
৩। হতাশার থেকেঃজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের দুঃখ, অপ্রাপ্তি ও ব্যার্থতার কারনে মানুষ অনেক সময়ই স্রষ্টার রহমতের উপর নিরাশ হয়ে যায়। ভাবে যে তারা নিজের যোগ্যতাতেই টিকে আছে। এবং তারা হতাশার কারনে স্রষ্টাকেই অস্বিকার করে। নিজেকে তখন তারা শ্রেষ্ঠ মনে করে আর শ্রেষ্ঠত্বের অহংকারের কারনে পরবর্তিতে শ্রেষ্ঠতর কোন স্রষ্টার অস্তিত্ব মেনে নিতে পারে না।
(Az-Zumar: 53) বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(Al-Hijr: 56) তিনি বললেনঃ পালনকর্তার রহমত থেকে পথভ্রষ্টরা ছাড়া কে নিরাশ হয় ?
(Al-Ankaboot: 23) যারা আল্লাহর আয়াত সমূহ ও তাঁর সাক্ষাত অস্বীকার করে, তারাই আমার রহমত থেকে নিরাশ হবে এবং তাদের জন্যেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
৩। অতিরিক্ত বিশ্বাস যুক্ত আস্তিকতাঃ وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُم بِاللَّهِ إِلَّا وَهُم مُّشْرِكُونَ অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে (Yusuf: 106)। এরা এক স্রষ্টা ছারাও আরও অনেক কিছুকেই অদ্রিষ্টের উপর দায়িত্বশিল বলে বিশ্বাস করে। যেমন অনেকেই বসের উপর অতিরিক্ত বিশ্বাস রাখে, ভাবে “বস খুশি হলেই আমার প্রমোশন হবে, কাজ/নৈতিকতা কোন ব্যপার না”। এরকম স্রষ্টা ছারা অন্য কিছুকে নিয়তি পরিবর্তন করতে পারে বিশ্বাস করাকেই শিরক বলা হয়।
লিখেছেন : যাযাবরমন