السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

কারবালার শিক্ষা

| comments

কারবালার যুদ্ধের প্রেক্ষাপট এতই বিস্তৃত যে, তা স্থান ও কালকে অতিক্রম করে বর্তমান সময়ে প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়েছে। হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) বলেছেন, 'আমি সৎকাজের আদেশ দান ও অসৎ কাজে বাধা প্রদানের উদ্দেশ্যে সংগ্রামে নেমেছি।' সে হিসেবে বলা যায়, হোসাইন (রা.) নৈতিক ও মানবীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার লক্ষ্যেই এই আন্দোলন ও যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
কারবালার যুদ্ধে হোসাইন (রা.) ও তার সঙ্গীরা ধৈর্যের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন। কারবালায় শাহাদতের কয়েক দিন আগে থেকেই তিনি সঙ্গীদের ধৈর্য ধারণের শিক্ষা দিয়ে আসছিলেন। আল্লাহর ওপর নির্ভরতা ও তার প্রতিশ্রুত পুরস্কারপ্রাপ্তির আশায় তার সঙ্গীরাও এ ব্যাপারে ছিলেন দৃঢ়চিত্ত।
হোসাইনের (রা.) সঙ্গীরা কারবালার ময়দানে আনুগত্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। যুদ্ধের আগের রাতে তিনি সঙ্গীদের লক্ষ্য করে বলেন, যার ইচ্ছা সে চলে যেতে পারে। কারণ, তার সঙ্গে থাকার অর্থ হচ্ছে নির্ঘাত মৃত্যু। কিন্তু সঙ্গীরা আনুগত্যের শপথ করে তাকে ত্যাগ করবেন না বলে ঘোষণা দেন। মুসলিম ইবনে উজ্জাহ নামে এক সঙ্গী বলেন, 'আমাকে যদি একবার হত্যা করে পুনরায় জীবিত করা হয় এবং ৭০ বার এ প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয়, তবুও আমি আপনাকে ছেড়ে যাব না। আমি নিজের জীবন দিয়ে আপনাকে রক্ষার চেষ্টা করব, যাতে কিয়ামতের ময়দানে বিশ্বনবীকে (সা.) বলতে পারি, নিজের অস্তিত্ব দিয়ে আমি আপনার বংশধরকে রক্ষার চেষ্টা করেছি!'
কারবালার ময়দানের এসব ঘটনা প্রমাণ করে_ হোসাইন (রা.) ও তার সঙ্গীরা পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর আরও কাছে পেঁৗছতে সচেষ্ট ছিলেন। শত্রু শিবিরকে উপদেশ দান অথবা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় হোসাইন (রা.) ও তার সঙ্গীরা বিন্দুমাত্র মানবীয় ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ বিসর্জন দেননি। তার শিবিরে যখন পানি ছিল, তখন তিনি পিপাসার্ত শত্রুসেনাদের তৃষ্ণা মেটাতে কার্পণ্য করেননি। আবার যুদ্ধের ময়দানে চরম সাহসিকতার সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। হোসাইনের (রা.) এ নমনীয়তা ও দৃঢ়তা প্রমাণ করে_ তিনি অতি উচ্চ লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। মানবতার মুক্তি এবং মানবীয় ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ জাগ্রত করাই ছিল হোসাইনের (রা.) উদ্দেশ্য। এই মহান লক্ষ্য অর্জনের প্রয়োজনীয়তা কিয়ামত পর্যন্ত শেষ হবে না বলে ইমামের শিক্ষা মানব জাতির পাথেয় হয়ে থাকবে চিরকাল। 

শাহীন হাসনাত
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template