السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

লাইলাতুল কদর

| comments

হাদিস শরিফের বর্ণনা অনুযায়ী ২৭ রমজানের রাতটি পবিত্র লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা অধিক। তবে নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই, ২৭ রমজানের রাত রাতটিই পবিত্র লাইলাতুল কদর। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা শেষে অধিক সম্ভাবনার ভিত্তিতে এ রাতে সারাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করে থাকেন। মাহে রমজানের বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব অনেকাংশে মহিমান্বিত এ রাতের কারণেও বৃদ্ধি পেয়েছে। রমজানের শেষভাগে রাসূল (সা.)-এর আমলের মাত্রা আগের দিনগুলোর তুলনায় অনেক বেড়ে যেত। তিনি সাহাবায়ে কেরামদের (রা.) উদ্বুদ্ধ করতেন, তাঁরা যেন লাইলাতুল কদরের বরকত ও ফজিলত লাভে বিশেষ মনোযোগী হন।

হাজার মাসের চেয়েও উত্তম লাইলাতুল কদর উপলক্ষে এ রাতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ সারাদেশের মসজিদগুলোতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বিশেষ ইবাদত-বন্দেগির ভেতর কাটিয়ে দেবেন। কোরআন-হাদিসের আলোচনা, ব্যক্তিগত নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ এ রাতটি কাটিয়ে দেবেন তারা। বাদ ফজর আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মসজিদগুলোতে বিশেষ ইবাদতপর্ব শেষ হবে। লাইলাতুল কদরের গুরুত্বের কারণেই এ রাতের তারাবির নামাজে কোরআন খতম দেয়া হবে। এ উপলক্ষে কাল অফিস আদালতে সরকারি ছুটি থাকবে।

লাইলাতুল কদর বা শবেকদরের অর্থ হচ্ছে সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ রাত। বছরের যে ক’টি দিন ও রাত বিশেষভাবে মহিমান্বিত, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম ও বরকতময় হলো এ শবেকদর। পবিত্র রমজানের এ রাতে লাওহে মাহফুজ থেকে নিম্ন আকাশে মহাগ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ হয়। কোরআন নাজিলের মাস হিসেবে রমজান যেমন বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত, তেমনি কোরআন নাজিলের কারণেই শবেকদর অতি ফজিলত ও তাত্পর্য বহন করে। আল্লাহতায়ালা বলেন—‘এ কোরআন আমি লাইলাতুল কদরে নাজিল করেছি।’ লাইলাতুল কদরকে আল্লাহতায়ালা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম বলে অভিহিত করেছেন।

রাসূলে কারিম (সা.) থেকে হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে শবেকদর তালাশ কর।’ এ বর্ণনা মতে, ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের রাতগুলোতে শবেকদর তালাশ করতে হবে।

লাইলাতুল কদর উম্মতে মোহাম্মদির একক সৌভাগ্য। আর কোনো নবীর উম্মতকে এ ধরনের ফজিলতপূর্ণ কোনো রাত বা দিন দান করা হয়নি। আগেকার নবীদের উম্মতরা অনেক আয়ু পেতেন। এজন্য তাঁরা অনেকদিন ইবাদত করারও সুযোগ পেতেন। সে তুলনায় উম্মতে মোহাম্মদির আয়ু নিতান্তই কম। এজন্য আল্লাহতায়ালা তাঁর বিশেষ দয়ায় মহানবীর (সা.) উম্মতকে মহিমান্বিত এই রাত দান করেছেন। যারা এ রাতে ইবাদত করে কাটাবেন, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কারের ঘোষণা। আল্লাহ চান বান্দা যেন গোনাহ ও পাপমুক্ত হয়ে তাঁর দরবারে হাজির হয়। এজন্য তিনি এ ধরনের বিশেষ তাত্পর্যময় রাত বা দিনের ব্যবস্থা রেখেছেন আমাদের জন্য। আমাদের উচিত এ মহাসুযোগ কাজে লাগিয়ে জীবনকে সাফল্যের শীর্ষচূড়ায় উন্নীত করার চেষ্টা করা।

শবেকদরের রাতে নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত এবং নির্দিষ্ট সুরা পড়ে নফল নামাজের নির্ভরযোগ্য কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না। বরং এ রাতে কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, নফল নামাজ, দোয়া ইস্তিগফারে লিপ্ত থেকে কাটিয়ে দেয়া উচিত। মহান আল্লাহ আমাদের শবেকদরের মর্তবা ও মর্যাদা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখকঃ মুহাম্মদ তৈয়্যেব হোসাইন
সৌজন্যে: আমার দেশ
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template