السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়

| comments

হযরত ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু রুহম কুলসুম ইবনে হুসাইন গিফারী(রাঃ)কে মদীনার আমীর নিযুক্ত করে ১০ই রমজান মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন, তিনি নিজে এবং তাঁর সন্গে লোকেরাও রোযা রেখেছিলেন। উসফান ও আমাজ্জ এর মধ্যবর্তী কাদীদ নামক ঝর্ণার কাছে পৌঁছুনোর পর রোযা পরিত্যাগ করেন। সেখান থেকে দশ হাজার সৈন্যসহ রওয়ানা হয়ে মাররায যাহরান নামক স্থানে অবতরণ করেন। মুযাইনা ও সুলাইম গোত্রদ্বয়ের এক হাজার লোক এবং মুহাযিরীন ও আনসার সকলেই তাঁর সন্গে ছিলেন। প্রতিটি গোত্রই অস্ত্রশস্ত্রসজ্জিত ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোরাঈশদের অজান্তে মাররায যাহরান পর্যন্ত এসে পৌঁছুলেন তখনো পর্যন্ত তারা কোন সংবাদ পায় নি। এমনকি তারা এটাও জানতে পারেনি যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।

আবু সুফিয়ান ইবনে হারব, হাকীম ইবনে হিযাম ও বুদাইল ইবনে ওয়ারকা সে রাতে খবর সংগ্রহ ও পরিস্থিতি আঁচ করার জন্য বেরুলো। ওদিকে আবু সুফিয়ান ইবনে হারেস ইবনে আবদুল মুত্তালিব ও আবদুল্লাহ ইবনে উমাইয়া ইবনে মুগীরাহ এই দু'জনও মক্কা-মদীনার মধ্যবর্তী এক জায়গায় এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে দেখা করার সুযোগ খুঁজতে লাগল। হযরত উম্মে সালামা(রাঃ) তাদের দু'জনের ব্যাপারে সুপারিশ করতে গিয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! একজন আপনার চাচাত ভাই, অপরজন ফুফাত ভাই ও শ্বশুর পক্ষের আত্মীয় অতএব তাদের সাক্ষাতের অনুমতি দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাদের সাথে সাক্ষাতের আমার কোন প্রয়োজন নাই। কারণ আমার চাচাত ভাই সে তো মক্কায় আমাকে যথেষ্ট অপমান করেছে। আর আমার ফুফাত ভাই ও আমার শ্বশুর পক্ষের আত্মীয় সেও আমাকে মক্কায় যা ইচ্ছা বলেছে। তারা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই প্রতিউত্তর জানতে পারল তখন আবু সফিয়ানের সাথে একটা ছোট্ট ছেলে ছিল, সুফিয়ান বললেন, খোদার কসম, হয় আমাকে সাক্ষাতের অনুমতি প্রদান করবেন, আর না হয় আমি আমার এই ছেলের হাত ধরে খোলা ময়দানের দিকে চলে যাব এবং ক্ষুধা-তৃষ্ণায় স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করব।

একথা শুনে তাদের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মন নরম হল। তিনি তাদের সাক্ষাতের অনুমতি দিলেন। তারা সামনে উপস্থিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাররায যাহরানে অবতরণের পর হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, হায় কোরাঈশের ধ্বংস! খোদার কসম যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোরপূর্বক মক্কায় প্রবেশ করেন এবং কোরাঈশগণ তার আগেই নিজেদের জন্য নিরাপত্তা চেয়ে না নেয় তবে কোরাঈশ চিরদিনের জন্য ধ্বংস হয়ে যাবে। হযরত আব্বাস(রাঃ) বলেন, এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাদা খচ্চরের পিঠে চড়ে চললাম। আরাক নামক জায়গায় পৌঁছে ভাবলাম হয়ত কোন লাকড়ি সংগ্রহকারী অথবা দুধওয়ালা অথবা কোন দরকারে মক্কার পথে চলেছে এরকম কোন লোকের দেখা পেলে তাকে বলব, সে মক্কা পৌঁছেই মক্কাবাসীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমণ সংবাদ দিয়ে দেবে যাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কা প্রবেশের পূর্বেই তারা নিজেদের জন্য নিরাপত্তা চেয়ে নেয়।

হযরত আব্বাস(রাঃ) বলেন, খোদার কসম আমি এই খেয়ালে চলছিলাম এবং লোক পাই কিনা খুঁজছিলাম এমন সময় আবু সুফিয়ান এবং বুদাইল ইবনে ওয়ারকার কথাবার্তার আওয়াজ শুনতে পেলাম। আবু সুফিয়ান বলছিল, আমি আজকের মত এরকম অসংখ্য আগুণ জ্বলতে দেখি নাই এবং এত বিরাট বাহিনীও দেখি নাই। বুদাইল বলল, খোদার কসম, এটা খোযাআ গোত্রের আগুণ হবে। মনে হয় যুদ্ধাভিলাষই তাদের উ্ত্তেজিত করেছে। আবু সুফিয়ান বলল, খোদার কসম, এত অধিক সংখ্যক আগুণ এবং এত বিরাট বাহিনী খোযাআর হতে পারে না। কারণ তারা এর চেয়ে দূর্বল আর নগণ্য।

হযরত আব্বাস(রাঃ) বলেন, আমি তার কণ্ঠস্বর চিনতে পেরে বললাম, হে আবু হানযালাহ! সে আমার আওয়াজ চিনতে পেরে বলে উঠল, আবুল ফযল নাকি ? আমি বললাম, হ্যাঁ। আবু সুফিয়ান বলল, আমার মাতাপিতা তোমার ওপর কোরবান হোক, তুমি এখানে, কি ব্যাপার ? আমি বললাম, তোমার নাশ হোক ! হে আবু সুফিয়ান, এই যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজন সহকারে এসে পড়েছেন, খোদার কসম! হায় কোরাঈশের ধ্বংস! আবু সুফিয়ান বলল, আমার মাতাপিতা আপনার ওপর কোরবান হোক, এখন উপায় ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বলেন, আমি বললাম, তোমাকে গ্রেফতার করতে পারলে তো অবশ্যই তোমার গর্দান উড়ি্যে দেয়া হবে। কাজেই তুমি আমার সাথে এই খচ্চরের পিঠে সওয়ার হয়ে চল। তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে যাই এবং তোমার জন্য নিরাপত্তা চেয়ে নিই।

পরদিন সকালে আমি তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে গেলাম। তিনি বললেন, হে আবু সুফিয়ান, তোমার ভাল হোক। তোমার কি এখনও এই সাক্ষ্য দেওয়ার সময় আসে নাই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মা'বুদ নাই ? আবু সুফিয়ান বললেন, আমার পিতামাতা আপনার ওপর কোরবান হোক ! আপনি কতই না সম্মানিত, কতই না ধৈর্যশীল, আর কতই না উত্তম সম্পর্ক স্থাপনকারী ! এখন তো আমার দৃঢ়বিশ্বাস হয়ে গিয়েছে যে, যদি আল্লাহর সাথে কোন মা'বুদ শরীক থাকত তবে অবশ্যই আমার কোন কাজে আসত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবু সুফিয়ান ! তোমার ভাল হোক, এখনও কি তোমার আসে নাই যে, আমাকে আল্লাহর রাসূল বলে বিশ্বাস করবে ? আবু সুফিয়ান বললেন, আমার পিতামাতা আপনার ওপর কোরবান হোক ! আপনি কতই না সম্মানিত, কতই না ধৈর্যশীল, আর কতই না আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপনকারী ! এই ব্যাপারে এখনও মনে কিছুটা খটকা রয়েছে। হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, হে আবু সফিয়ান, তোমার নাশ হোক! তোমার গর্দান উড়িয়ে দেয়ার আগেই মুসলমান হয়ে যাও এবং সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মা'বুদ নাই, আর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। এবার আবু সুফিয়ান কালেমায়ে শাহাদাত পড়ে মুসলমান হয়ে গেলেন।

হযরত আব্বাস(রাঃ) বলেন, আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, এই আবু সুফিয়ান কিছুটা সম্মানপ্রিয় মানুষ। সুতরাং তাকে বিশেষ একটা কিছু দান করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাঁ, যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ হবে, যে নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে দেবে সে নিরাপদ হবে, এবং যে মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ হবে। অতঃপর আবু সুফিয়ান(রাঃ) চলে যেতে উদ্যত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আব্বাস, তাকে নাকের মত পাহাড়ের সেই বাড়তি অংশের ওপর দাঁড় করাও যেদিকে পাহাড়ি সরুপথ গিয়েছে, যাতে সে আল্লাহর বাহিনীগুলো অতিক্রম করার দৃশ্য অবলোকন করতে পারে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরাম(রাঃ)কে সুশৃংখল করলেন। প্রত্যেক গোত্র আপন আপন দলপতির সাথে এবং প্রত্যেক সৈন্যদল নিজ নিজ ঝান্ডা উত্তোলন করে রওয়ানা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাগ্রে হযরত খালিদ ইবনে ওলীদ(রাঃ) নেতৃত্বে বনু সুলাইম গোত্রের দল প্রেরণ করলেন। তাদের সংখ্যা এক হাজার ছিল। এই দলের একটি ঝান্ডা হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস(রাঃ) হাতে, একটি হযরত খুফাফ ইবনে নুদবাহ(রাঃ) এর হাতে ও অপর একটি হাজ্জাজ ইবনে ইলাত(রাঃ) এর হাতে ছিল। আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, ইনি খালিদ ইবনে ওলীদ(রাঃ)। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, সেই নওজোয়ান ছেলেটা ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, হাঁ। তাঁরা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন খালিদ(রাঃ) যখন সেখানে পৌঁছুলেন তখন তাঁর দল 'আল্লাহু আকবার' বলে তিনবার তাকবীর দিল এবং সম্মুখে অগ্রসর হয়ে গেল। তাদের পেছনে হযরত যুবাইর ইবনে আওয়াম(রাঃ) পাঁচশত জনের একটি দল নিয়ে অতিক্রম করলেন। এদের মধ্যে কিছু মুহাজিরীন ও কিছু বিভিন্ন গোত্রের অপরিচিত লোক ছিলেন। হযরত যুবাইর(রাঃ) এর হাতে কাল রংয়ের বড় একটি ঝান্ডা ছিল। তিনি যখন আবু সুফিয়ান(রাঃ) এর বরাবরে এলেন তখন আপন দল সহকারে 'আল্লাহু আকবার' বলে তিনবার তাকবীর দিলেন। আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, এই ব্যক্তি কে ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, ইনি যুবাইর ইবনে আওয়াম(রাঃ)। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, তোমার ভাতিজা ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, হাঁ। অতঃপর গিফার গোত্রীয় তিনশত জনের একটি দল অতিক্রম করল যাদের ঝান্ডা হযরত আবু যর গিফারী(রাঃ) বহন করছিলেন। কেউ কেউ বলেন তাদের ঝান্ডা হযরত ঈমা ইবনে রাহাদাহ(রাঃ) এর হাতে ছিল। তাঁরাও আবু সুফিয়ান(রাঃ) এর বরাবরে এসে তিনবার তাকবীর দিলেন। আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আবুল ফযল, এরা কারা ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, এরা বনু গিফার। আবু সফিয়ান(রাঃ০ বললেন, বনু গিফারের সাথে আমার কি সম্পর্ক ? তারপর আসলাম গোত্রীয় চারশত জনের দল অতিক্রম করল। এই দলের দু'টি ঝান্ডা ছিল। একটি হযরত বুরাইদা ইবনে হুসাইব(রাঃ) ও অপরটি হযরত নাজিয়া ইবনে আ'জম(রাঃ) বহন করছিলেন। এঁরাও বরাবরে এসে তিনবার তাকবীর দিলেন। আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, এরা আসলাম গোত্র। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, আসলাম গোত্রের সাথে আমার কি সম্পর্ক ? আমাদের ও তাদের মধ্যে তো কখনো ঝগড়া বিবাদ ছিল না। হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, এরা একটি মুসলমান কওম, যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে।

অতঃপর বনু কা'ব ইবনে আমর গোত্রীয় পাঁচশত জনের দল অতিক্রম করল। তাদের ঝান্ডা হযরত বিশর ইবনে শাইবানা(রাঃ) বহন করছিলেন। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, এরা কারা ? আব্বাস(রাঃ) বললেন, এরা বনু কা'ব ইবনে আমর গোত্র। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, হাঁ, এরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিত্র দল। এরাও বরাবরে এসে তিনবার তাকবীর দিলেন।

তারপর মুযাইনা গোত্রীয় এক হাজারের একটি দল অতিক্রম করল। তাদের মধ্যে একশত ঘোড়া ও তিনটি ছোট ছোট ঝান্ডা ছিল। হযরত নো'মান ইবনে মুকাররিন(রাঃ), হযরত বেলাল ইবনে হারেস(রাঃ) ও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর(রাঃ) এই ঝান্ডাগুলো বহন করছিলেন। তাঁরা আবু সুফিয়ান(রাঃ) এর বরাবরে এসে তিনবার তাকবীর দিলেন। আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, এরা মুযাইনা গোত্র। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, হে আবুল ফযল, মুযাইনার সাথে আমার কি সম্পর্ক যে তারা অস্ত্র খটখটিয়ে পাহাড়ের চূড়া থেকে আমার সম্মুখে এসে উপস্থিত হয়েছে ?

তারপর জুহাইনা গোত্রীয় আটশত জন তাদের দলপতিসহ অতিক্রম করল। তাদের মধ্যে চারটি ছোট ছোট ঝান্ডা ছিল যার একটি হযরত যুরআহ মা'বাদ ইবনে খালিদ(রাঃ) এর হাতে, একটি হযরত সুয়াইদ ইবনে সাখর(রাঃ) এর হাতে, একটি হযরত রাফে' ইবনে মাকীস(রাঃ) এর হাতে এবং একটি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে বদর(রাঃ) এর হাতে ছিল। এঁরা আবু সুফিয়ান(রাঃ) এর বরাবরে এসে তিনবার তাকবীর দিলেন। অতঃপর কেনানাহ, বনু লাইস, যামরাহ ও সা'দ ইবনে বকরের দুইশত জনের দল অতিক্রম করল। এদের ঝান্ডা হযরত আবু ওয়াকেদ লাইসী(রাঃ) বহন করছিলেন। এঁরাও আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, এরা বনু বকর। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, হাঁ, এরা বড় অশুভ লোক। খোদার কসম, এদের কারণেই হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ওপর আক্রমণ করতে এসেছেন। (*** হুদাইবিয়ার সন্ধির পর খোযাআহ গোত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে এবং বনু বকর কোরাঈশদের সাথে মৈত্রীসুত্রে আবদ্ধ হয়েছিলল। সন্ধির পর কোরাঈশদের মিত্র বনু বকর খোযাআহ গোত্রের ওপর আক্রমণ চালিয়ে অকথ্য্ অত্যাচার করে এবং কোরাঈশগণও তাতে মদদ যোগায়। ফলে কোরাঈশদের পক্ষ থেকে সন্ধি ভন্গ হওয়ার দরুণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য মক্কা অভিযানের পথ উম্মুক্ত হল। আবু সুফিয়ান(রাঃ) এই ঘটনার প্রতি ইন্গিত করে বললেন।)

আরেক বর্ণনায় ওয়াকেদী বলেন, আবু আমর ইবনে হিমাস থেকে আবদুল্লাহ ইবনে আমের(রহঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, আড়াইশত জনের একটি দল অতিক্রম করল। এরা সকলেই বনু লাইস গোত্রীয় ছিলেন এবং হযরত সা'ব ইবনে জাসসামাহ(রাঃ) এই গোত্রের ঝান্ডা বহন করছিলেন। তারা অতিক্রমকালে তিনবার তাকবীর ধ্বনি দিলেন। আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, এরা বনু লাইস। তারপর সর্বশেষ আশজা' গোত্রীয় তিনশত জনের দল অতিক্রম করল। এদের একটি ঝান্ডা হযরত মা'কিল ইবনে সিনান(রাঃ) ও অপর একটি ঝান্ডা হযরত নুআইম ইবনে মাসউদ(রাঃ) বহন করছিলেন। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, সমগ্র আরবের মধ্যে এরাই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধে সর্বাপেক্ষা কঠোর ছিল ! হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, আল্লাহতা'লা ইসলামকে তাদের অন্তরে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছেন। আর এটা আল্লাহতা'লার একটি অনুগ্রহ।

আবু সুফিয়ান(রাঃ) এই কথার পর কিছুক্ষণ নীরব রইলেন। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এখনও যান নাই ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, তিনি এখন ও যান নাই। তুমি যদি সেই বিশাল বাহিনী দেখ যাতে হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আছেন তবে তুমি শুধু লোহাই লোহা, ঘোড়াই ঘোড়া এবং বড় বড় বাহাদুরকে দেখবে। সেটি এমন বাহিনী যে, তাদের মোকাবেলা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। আবু সুফিয়ান বললেন, খোদার কসম ! হে আবুল ফযল, আমারও মনে হচ্ছে যে এদের সাথে মোকাবেলা কে করতে পারে !

যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাহিনী দৃষ্টিগোচর হল তখন বর্ম ও অস্ত্রশস্ত্রের দরুণ সেটা কালোবর্ণ দেখাতে লাগল। ঘোড়ার পদাঘাতে উথ্থিত ধূলিতে চারদিক আচ্ছন্ন হয়ে গেল। দলের পর দল অতিক্রম করতে লাগল। প্রত্যেক দলের অতিক্রমকালে আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করতেন যে, এখনও কি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যান নাই ? হযরত আব্বাস(রাঃ) জবাব দিতেন, না। এমন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর 'কাসওয়া' নামক উটে চড়ে হযরত আবু বকর(রাঃ) ও হযরত উসাইদ(রাঃ) এর সাথে আলাপরত অবস্থায় অগ্রসর হচ্ছিলেন। হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, এই যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন কালো বর্ণের দলের সাথে চলেছেন। এই দলে মুহাজির ও আনসারগণ রয়েছেন। ছোট বড় বহু ঝান্ডা পরিলক্ষিত হচ্ছিল। প্রত্যেক আনসারী বীরের হাতে একটি বড় ও একটি ছোট ঝান্ডা শোভা পাচ্ছিল। লোহার বর্ম ও শিরস্ত্রাণের দরুণ তাদের চোখ ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হযরত ওমর(রাঃ) আপাদমস্তক লোহার পোশাকে আবৃত ছিলেন। তিনি উচ্চ ও গুরুগম্ভীর আওয়াজে বাহিনীকে সুশৃংখলভাবে পরিচালনা করছিলেন। আবু সুফিয়ান(রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আবুল ফযল, উচ্চ আওয়াজে কথা বলছে, লোকটি কে ? হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, ইনি হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব(রাঃ)। আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, খোদার কসম, একসময় বনি আদি(অর্থাৎ ওমর রাঃ এর বংশ) নিতান্তই কমসংখ্যক ও দূর্বল ছিল। এখন তারা বেশ উচ্চসম্মান লাভ করেছে। হযরত আব্বাস(রাঃ) বললেন, হে আবু সুফিয়ান, আল্লাহতা'লা যাকে যেভাবে ইচ্ছা করেন উচ্চতর মর্যাদা দান করেন। হযরত ওমর(রাঃ) সেই সমস্ত লোকদের অন্তর্ভূক্ত যাদের ইসলাম উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।

বর্ণনাকারী বলেন, এই বাহিনীতে দুই হাজার বর্ম পরিহিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন ঝান্ডা হযরত সা'দ ইবনে ওবাদাহ(রাঃ) হাতে দিয়েছিলেন। তিনি ঝান্ডা হাতে বাহিনীর অগ্রভাগে চলছিলেন। হযরত সা'দ(রাঃ) যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঝান্ডা হাতে আবু সুফিয়ান(রাঃ) এর কাছে পৌঁছুলেন, তখ তিনি তাকে সম্বোধন করে বললেন, 'হে আবু সুফিয়ান, আজকের দিন রক্তারক্তির দিন। আজকের দিনে মক্কার হুরমত রহিত করা হবে। আজ আল্লাহতা'লা কোরাঈশকে অপদস্থ করবেন।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনে অগ্রসর হলে আবু সুফিয়ান(রাঃ) তাঁকে ডেকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি কি নিজ কাওমের লোকদের কতল করার আদেশ দিয়েছেন ? সা'দ এবং তার সন্গীগণ আমার কাছ দিয়ে অতিক্রমকালে বলে গেছেন যে, আজকের দিন রক্তারক্তির দিন। আজকের দিনে মক্কার হুরমত রহিত করা হবে। আজকের দিনে আল্লাহতা'লা কোরাঈশদের অপদস্থ করবেন। আমি আপনার কাওমের ব্যাপারে আপনাকে আল্লাহর দোহাই দিচ্ছি। আপনি সকল মানুষ অপেক্ষা নেক ও সর্বাপেক্ষা সৎসম্পর্কস্থাপনকারী। হযরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ(রাঃ) ও হযরত ওসমান ইবনে আফফান(রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলা্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! আমরা সা'দ সম্পর্কে আশংকা করছি যে, তিনি কোরাঈশের ওপর হামলা না করে বসেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবু সুফিয়ান, আজকের দিন অনুগ্রহের দিন। আজকের দিন আল্লাহতা'লা কোরাঈশকে সম্মান দান করবেন।

বর্ণনাকরী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সা'দ(রাঃ)কে অপসারণপূর্বক তাঁর পুত্র কায়েস(রাঃ) এর হাতে ঝান্ডা হস্তান্তরের নির্দেশ দিলেন। তাঁর এই নির্দেশের উদ্দেশ্য এই ছিল যে, আপন পুত্রের নিকট ঝান্ডা হস্তান্তরের দরুণ হযরত সা'দ(রাঃ) এর অন্তরে ঝান্ডা হারাবার ক্ষোভ থাকবে না।

কিন্তু হযরত সা'দ(রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন ব্যতীত ঝান্ডা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানালেন। অতএব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পাগড়ি মোবারক তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। হযরত সা'দ(রাঃ) তা চিনতে পারলেন এবং নিজের পুত্র হযরত কায়েস(রাঃ) এর কাছে ঝান্ডা দিয়ে দিলেন। (বিদায়াহ)

হযরত যুবাইর(রাঃ) আপন বাহিনী নিয়ে জাহুন নামক স্থানে এসে থামলেন। হযরত খালিদ(রাঃ) আপন বাহিনী নিয়ে মক্কার নীচু এলাকা দিয়ে প্রবেশ করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলের শেষে মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করল, যে ব্যক্তি আপন হাত সংবরণ করে নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে দেবে সে নিরাপদ থাকবে।

হযরত আবু সুফিয়ান(রাঃ)ও মক্কায় প্রবেশ করে ঘোষণা করতে লাগলেন, তোমরা ইসলাম গ্রহণ কর নিরাপদ থাকবে। প্রকৃতপক্ষে সেদিন আল্লাহতা'লা হযরত আব্বাস(রাঃ) এর দ্বারা মক্কাবাসীর হেফাজত করলেন। আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দ বিনতে উতবাহ এই ঘোষণা শুনে এগিয়ে এল এবং তার দাড়ি ধরে চিৎকার করে বলতে লাগল, হে গালেবের বংশধরগণ, এই আহাম্মক বুড়াকে কতল করে দাও। হযরত আবু সুফিয়ান(রাঃ) বললেন, আমার দাড়ি ছেড়ে দে। খোদার কসম করে বলছি, যদি তুই ইসলাম গ্রহণ না করিস তোর গর্দান উড়িয়ে দেয়া হবে। তোর নাশ হোক। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যবাণী নিয়ে এসেছেন। নিজের ঘরে গিয়ে পালন্কের ওপর চুপচাপ বসে থাক।(তাবারাণী)

বিজয়ের দিন মক্কাবাসীদের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যবহার

হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব(রাঃ) বলেন, বিজয়ের দিন মক্কায় পৌঁছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফওয়ান ইবনে উমাইয়া, আবু সুফিয়ান ইবনে হারব ও হারেস ইবনে হিশামকে ডেকে পাঠালেন। হযরত ওমর(রাঃ) বলেন, আমি মনে মনে বললাম, আল্লাহতা'লা এদেরকে আয়ত্তে এনে দিয়েছেন। অতএব আমি এদেরকে তাদের পূর্বেকার সকল দুষ্কর্মের কথা স্মরণ করিয়ে দেব।

এমন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাবাসীদের উদ্দেশ্যে বললেন, আমার ও তোমাদের উদাহারণ হচ্ছে ইউসুফ(আঃ) ও তাঁর ভাইদের মত। আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই। আল্লাহ তোমাদেরকে মাফ করুন। তিনি সকল মেহেরবান অপেক্ষা অধিক মেহেরবান।

হযরত ওমর(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাফের ঘোষনা শুনে আমি অত্যধিক লজ্জিত হলাম। ভাবলাম, আমি যা চিন্তা করছিলাম যদি এরকম কোন কথা আমার মুখ ফসকে বেরিয়ে পড়ত তবে কতই না খারাপ হত ! অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে কত সুন্দরভাবেই না বললেন।(কানয)

ইবনে আবি হুসাইন(রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের পর বাইতুল্লায় প্রবেশ করলেন। অতঃপর বের হয়ে দরজার চৌকাঠের দুই প্রান্তে হাত রেখে কাফেরদের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা এখন কি বলবে ? সুহাইল ইবনে আমর বললেন, আমরা সদ্ব্যবহারের আশা রাখব এবং বলব যে আপনি দয়াবান ভাই এবং দয়াবান ভাইয়ের পুত্র, আমাদের ওপর ক্ষমতা লাভ করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার ভাই ইউসুফ(আঃ) যেমন বলেছিলেন আমিও তেমনই বলব, আজকের দিনে তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই।(ইসাবাহ)

হযরত আবু হুরাইরা(রাঃ) থেকে এক দীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত, অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা'বা শরীফে এলেন এবং দরজার চৌকাঠের দুই প্রান্ত ধরে দাঁড়িয়ে বললেন, তোমরা কি বল, তোমাদের কিরুপ ধারণা হয় ? তারা বলল, আমরা বলি, আপনি আমাদের ভ্রাতুষ্পুত্র এবং আমাদের চাচাত ভাই, অত্যন্ত ধৈর্যশীল ও দয়াবান। হযরত আবু হুরাইরা(রাঃ) বলেন, তারা এই কথা তিনবার বলল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইউসুফ(আঃ) যেমন বলেছেন আমিও তেমনই বলব। আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই। আল্লাহ তোমাদেরকে মাফ করুন। তিনি সকল মেহেরবান অপেক্ষা অধিক মেহেরবান। হযরত আবু হুরাইরা(রাঃ) বলেন, এ কথা শুনে মক্কার কাফেরগণ মসজিদ থেকে বের হয়ে এলো, তারা এত খুশী হল যেন তাদেরকে কবর থেকে বের করে আনা হয়েছে। তারপর তারা ইসলাম গ্রহণ করল।

ইমাম বায়হাকী(রহঃ) বলেন, ইমাম শাফী(রহঃ) ইমাম আবু ইউসুফ(রহঃ) থেকে ঘটনার এই অংশ এরকম বর্ণনা করেছেন। মক্কার কাফেরগণ মসজিদে হারামে সমবেত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জিজ্ঞেস করলেন, আমি তোমাদের সাথে কিরকম ব্যবহার করব বলে তোমরা মনে কর ? তারা বলল, সদ্ব্যবহার করবেন বলে মনে করি। কারণ আপনি মেহেরবান ভাই এবং মেহেরবান ভাইয়ের পুত্র। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যাও আজ তোমরা সকলেই মুক্ত। (বাইহাকী)

লেখকঃ আহমেদ শরীফ আহমেদ
বিশ্ব মুসলিম ডেস্ক
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template