আল্লাহ পাক আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। শুধু তার এবাদত করবার জন্য। তার মধ্যে আল্লাহ পাক এবাদতকে বিভিন্নভাবে ভাগ করে দিয়েছেন। যেমন- ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল ইত্যাদি। পরহেজগার মুমিনগণ প্রতিদিনই আল্লাহ নির্ধারিত অবশ্যই করণীয় এবাদতগুলো পালন করে ও অতিরিক্ত নফল ইবাদত জিকির-আজকার করে থাকেন। সকল মুমিন মুসলমানই কিন্তু অতিরিক্ত এবাদত করতে পারে না। এছাড়া উম্মতে মুহাম্মদীর হায়াত অন্যান্য নবী রাসূলগণের উম্মতের হায়াতের চেয়ে অনেক কম থাকায় আল্লাহপাক উম্মতে মুহাম্মদীর হায়াত অন্যান্য নবী রাসূলগণের উম্মতের হায়াতের চেয়ে অনেক কম থাকায় আল্লাহপাক উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য বিশেষ বিশেষ কতগুলো তাৎপর্যপূর্ণ ফজিলতপূর্ণ দিন বা রজনিকে গুরুত্ব দিয়ে মহিমান্বিত করে দিয়েছেন এবং অনেক আমল, অফুরন্ত নেয়ামত হিসেবে দান করেছেন তার মধ্যে কয়েকটি দিন বা মাসের কথা আমরা জানি এবং তা ঘটা করেই পালন করে থাকি। এই বিশেষ দিনগুলোতে এবাদত-বন্দেগী করে আল্লাহর রহমত, বরকত হাসিল করে থাকে মুমিন মুসলমানগণ। আবার অনেক মুসলমান অতিরঞ্জিত করে পুণ্যের পরিবর্তে, বেদাতী, কুফরী বা শেরেকী কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। অথচ অন্যান্য মাসের কোন খোঁজ থাকে না। আজকে এখানে এমনি একটি মাসের কথা বলছি পুণ্যময় মহিমান্বিত মাস রবিউল আউয়াল মাসের পরে আসে মুসলিম মিলস্নাতে রবিউচ্ছানী মাস। আরবী বার মাসের মধ্যে এই মাসটি চতুর্থ মাস। রবিউচ্ছানী অর্থ হচ্ছে দ্বিতীয় বসন্ত বা সমারোহের প্রত্যাগমন। সুতরাং এই মাসের ফজিলত ও গুরুত্ব রয়েছে বিশেষ মাসগুলোর মতই। এ মাসেও আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে অধিক নফল এবাদত-বন্দেগী ও আমল করা উচিত। আল্লাহপাক সৃষ্ট জগতে মানুষের কর্মময় জীবনে ঘর-সংসার, আহার-বিহার, কাজ-কর্ম, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি ইত্যাদি দুনিয়াবী কতই না কাজে নিমগ্ন থাকতে হয়। তথাপি দুনিয়াবী জিন্দেগীতে ফুরসৎ পাওয়া সম্ভব হয় না। দুনিয়াবী জীবন বড় কঠিন বড় দুর্বিষহ। তাই বলে দুনিয়ার পেছনে জিন্দেগী পাড় করে দিলে চলবে না। বরঞ্চ এ জীবনের ফাঁকে ফাঁকে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহপাকের দরবারে ফিরে আসতে হবে এবং হাজিরা দিতে হবে বার বার। আল্লাহর অফুরন্ত নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে হবে।
ইসলাম ধর্মে বৈরাগ্য বলতে কিছুই নেই। সংসার বিরাগী জীবন যেমন ছন্নছাড়া, বাঁধনহারা, উচ্ছৃঙ্খল তেমনি মানব সমাজের কল্যাণের কোন দিকও ইহাতে পরিদৃষ্ট হয় না। এ প্রসঙ্গে এক প্রখ্যাত ফার্সী কবি বলেন, আমি তোমাদেরকে এই কথা বলছি না যে, সর্ব অবস্থায় তোমরা পৃথিবী থেকে পৃথক থাক বা পৃথিবীর প্রতি উদাসীনতা প্রকাশ কর। বরঞ্চ যখন যে অবস্থায় থাকা যায় সে অবস্থায়ই আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। জীবনের প্রতিটি কাজেই আল্লাহর নৈকট্য লাভে সচেষ্ট হতে হবে এবং তা করতে হবে প্রতিদিনে প্রতি মাসে। জিকির-আজকার, আজকারের মোজাহাদার উন্নতিকল্পে এই মাসে বেশি করে নফল এবাদত করা প্রয়োজন।
_মনসুর আহমদ আকন্দ
Post a Comment