السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

আল্লাহ'র জিকির-এর গুরুত্ব ও ফজিলত

| comments

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন-"তোমরা স্মরণ কর, আমি তোমাদের স্মরণ করব"। (সূরা আল-বাকারা. ১৫২) এই আয়াতে আল্লাহ তাকে স্মরণ করতে বলেছেন, তিনি স্মরণকারীদের ডাকে সাড়া দেবেন। হযরত মুয়ায (রা.) বলেন- "আল্লাহর আযাব থেকে মুক্ত করার ব্যাপারে মানুষের কোন আমলই যিকরুলস্নাহর সমান নয়। সূরা আল মুমিন এর ৬০ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন- "তোমরা আমায় ডাকো, আমি তা শুনব"। আল্লাহতায়ালা আরো বলেন- "তোমরা আল্লাহকে খাঁটি বিশ্বাসের সহিত ডাক"। আল্লাহ অন্যত্র বলেন- " আল্লাহ শুধু পরহেজগার লোকদের আমলকেই কবুল করেন"। এক হাদিসে মহানবী (স.) বলেন- আল্লাহ তায়ালা গাফেল ও অমনোযোগী লোকদের দোয়া কবুল করেন না। প্রসঙ্গত একটি বিষয়ের অবতারণা করা দরকার। অনেকে মনে করেন যে, উচ্চস্বরে আল্লাহকে স্মরণ করার নামই যিকির; মনে মনে বা চুপিসারে কোন কিছু বললে তা যিকির হয় না। এ ধারণা ভুল। যিকির এর শাব্দিক অর্থ 'স্মরণ'। যার আসল স্থান হচ্ছে ব্যক্তির মন বা অন্তকরণ। অর্থাৎ কোন কথা মনের ভেতর জাগ্রত হলে তাকেই বলা হয় যিকির। এই যিকিরের প্রকাশ ঘটতে পারে নানাভাবে। এটা যেমন মুখের ভাষায় প্রকাশ করা যেতে পারে তেমনি বাস্তব কাজের মাধ্যমেও এর অভিব্যক্তি ঘটে। যেমন আল্লাহ বলেন- তুমি নামায কায়েম কর আমার যিকিরের জন্য (ত্বাহা-১৪)। নামাযের প্রাণ হচ্ছে আল্লাহকে স্মরণ। সমগ্র নামাযে আমরা আল্লাহকে স্মরণ করে থাকি। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা আছে সবকিছুই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। আল্লাহর যিকির অনেক বড় জিনিস। আল্লাহর দরবারে উপস্থিত ফেরেশতাগণ সর্বদা আল্লাহর তাসবীহ্ পাঠ করতে থাকে। এ ব্যাপারে তারা বিন্দুমাত্র বিরত থাকে না। আল্লাহ বলেন- খোদার আরশ বহনকারী এবং যারা তার চারপাশে উপস্থিত, তারা সবাই তার প্রশংসা সহকারে তাসবীহ পাঠ করছে পাহাড়-পর্বত, পাখ-পাখিরাও আলস্নাহর যিকিরে মশগুল থাকে। আল্লাহ বলেন- 'দাউদের সঙ্গে আমরা পাহাড়-পর্বত ও পাখিদেরও নিয়ন্ত্রিত ও কাজে নিযুক্ত করে দিয়েছিলাম। তারা তাসবীহ পাঠ করতো। এ কাজের কর্তা আমরাই ছিলাম;। (আম্বিরা-৬৯) আল্লাহ'র স্মরণ থেকে গাফেল হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ (স.)কে সকাল ও সন্ধ্যায় আলস্নাহর প্রশংসা সহকারে তার তাসবীহ পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আলস্নাহ তার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.)কে যিকির করার নিয়ম বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, 'তোমার প্রভুকে স্মরণ করো অন্তরে বিনয় ও ভীতি সহকারে এবং উচ্চ আওয়াজের পরিবর্তে নিম্নস্বরে সকাল ও সন্ধ্যায়। আর তুমি গাফিল লোকদের মধ্যে শামিল হয়ো না (আরাফ-২০৫)। হযরত জাকারিয়া (আ.) কে আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে যিকিরের নির্দেশ দিয়েছিলেন। হযরত ইয়াহইয়া (আ.)-এর জন্মের নিদর্শন স্বরূপ আল্লাহ তার বৃদ্ধ পিতা জাকারিয়া (আ.)কে তিনদিন কথা বন্ধ রাখতে আদেশ দিয়েছিলেন এবং এই সময় বেশি করে সকাল-সন্ধ্যা তার তাসবীহ পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আল্লাহর যিকিরই হেদায়েতপ্রাপ্ত লোকদের বৈশিষ্ট্য। এ প্রসঙ্গ আল্লাহ বলেন- "আল্লাহ যে সব গৃহকে মর্যাদায় উন্নীত করার এবং সেগুলোতে তার নাম উচ্চারণ করার আদেশ দিয়েছেন সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে" (সূরা নূর-৩৬)। প্রকৃত ঈমানদার লোকের বৈশিষ্ট্য হলো, তারা বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করে। আর সে সব লোকদের অন্তর আলস্নাহর যিকির শূন্য তাদের অনুসরণ করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন। সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদিসে উলেস্নখ রয়েছে, হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেন_ যে ব্যক্তি তার প্রভুর যিকির করে আর যে ব্যক্তি তার প্রভুর যিকির করে না, তাদের দৃষ্টান্ত হয়েছে জীবিত ও মৃতের ন্যায়।

-মুহাম্মদ ইস্রাফিল
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template