আলস্নাহতায়ালা যুগে যুগে পথহারা মানুষদেরকে পথের দিশা দেওয়ার জন্য অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরণ করেছিলেন। তাদের মধ্যে প্রথম নবী ছিলেন হযরত আদম (আ.) আর শেষ নবী ছিলেন হযরত মুহাম্মদ (স.)। নবী এবং রসূলরা নিজ নিজ কওমের জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। কিন্তু মুহাম্মদ (স.) ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি ছিলেন সমগ্র বিশ্বের জন্য নবী ও রাসূল। প্রত্যেক নবী ও রাসূলের মধ্যে আলস্নাহতায়ালা কিছু কিছু মুজিজাহ দিয়েছিলেন। আবার তাদের ইন্তেকালের সঙ্গে সঙ্গে সে সমস্ত মুজিজাহ আলস্নাহতায়ালা উঠিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু মুহাম্মদ (স.) -ই একমাত্র এর ব্যতিক্রম। তার ওপরে আলস্নাহতায়ালা অসংখ্য মুজিজাহ দিয়েছিলেন। তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ মুজিজাহ হলো মহাগ্রন্থ আল কুরআন। তিনি (স.) ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু তার মুজিজাহকে আলস্নাহতায়ালা উঠিয়ে নেননি। বরং কেয়ামত পর্যন্ত এই মুজিজাহর গ্রন্থ আল কুরআন পৃথিবীতে বিদ্যমান থেকে মানুষদেরকে আলোর পথের দিশা দান করবে। আলোচ্য প্রবন্ধে কেবলমাত্র রাসূল (স.) এর বিস্ময়কর মুজিজাহসমূহ আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি পাঠক হূদয়ে ইহা রসূল প্রেম প্রবৃদ্ধির সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, ইনশাআলস্নাহ।
১। দাদা আবদুল মুত্তালিবের স্বপ্ন: দাদা আবদুল মুত্তালিব বলেছিলেন, একরাতে কাবা ঘরে ঘুমানো অবস্থায় একটি স্বপ্ন দেখলাম। তারপর কুরাইশ বংশের এক পুরোহিত মহিলার কাছে এসে স্বপ্নের বর্ণনা করলাম। আমি দেখেছি যে, হঠাৎ একটি বৃক্ষ জমিন হতে উদগত হলো এবং দেখতে দেখতে এর শাখা-প্রশাখাগুলো আসমান পর্যন্ত সুউচ্চ হলো। তারপর পূর্ব ও পশ্চিমে ছড়িয়ে পড়ল এবং ঐ বৃক্ষ হতে এমন একটি নূর বের হলো যার আলো সূর্যের আলো হতে সত্তর গুণ অধিক মনে হলো। অতঃপর আরব-অনারব সবাই উহার সামনে সিজদায় অবনত হলো। নূরটি ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হতে লাগলো। কতিপয় কুরাইশ ঐ বৃক্ষটির নিকট পেঁৗছালে জনৈক সুদর্শন যুবক তাদেরকে প্রতিহত করত। আমি ঐ বৃক্ষ শাখা ধারণ করার সুযোগ পেলাম কিন্তু তা ধরতে পারলাম না। তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইহা কার অংশ? বলা হলো এটা তাদের অংশ যারা ইতিপূর্বে ধারণ করেছে। এই অদ্ভুত স্বপ্নটি দেখে আমি ভীত সন্ত্রস্তভাবে জাগ্রত হলাম। আমার দেখা স্বপ্নের বিবরণ শুনে উক্ত পুরোহিত মহিলার চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। সে বললো হে আবদুল মুত্তালিব তোমার এই স্বপ্ন সত্য হলে তোমার ঔরস হতে এমন একজন ব্যক্তির উদ্ভব ঘটবে যে মাশরিক ও মাগরিবের কর্ণধার হবে এবং সমস্ত মানুষ তার আদর্শের কাছে নতি স্বীকার করবে। আব্দুল মুত্তালিব রাসুলের চাচা আবু তালেব কে বলতেন আমার মনে হয় তুমিই সেই সন্তান। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) নবুওয়াত পাওয়ার পর আবু তালেব লোকদিগকে এই ঘটনা শুনিয়ে বলতেন, আলস্নাহর কসম, সেই বৃক্ষটি হলো আল আমীন বা মুহাম্মদ (স.)। তখন লোকেরা তাকে বলতেন তাহলে আপনি তার ওপর ঈমান আনছেন না কেন? তিনি জবাবে বলতেন, ভাল হয় না মন্দ হয় সেই ভয় করছি এবং আমার কিছুটা লজ্জাও অনুভূত হচ্ছে। (চলবে)
-আল বাকী
Home
রাসূল(সাঃ)
বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স.) এর বিস্ময়কর মুজিজাসমূহ
Post a Comment