السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

ফিতরায় রোজার অপূর্ণতা দূর হয়

| comments

শেষ দশ দিনের বরকত লাভের জন্য রোজাদাররা ইতিকাফ, শবেকদরের অনুসন্ধানে রাতে রাতে ইবাদত আর তেলাওয়াত ও মোনাজাতে সময় পার করছেন। একইসঙ্গে এ সময়টায় অনেকেই আর্থিক ইবাদত-ফিতরা দান করছেন। ফিতরা মূলত রমজান শেষে ঈদুল ফিতরের সঙ্গে যুক্ত একটি আর্থিক আমল। তবে ঈদের আগেই অভাবি ও গরিব মানুষের হাতে ফিতরার টাকা তুলে দিয়ে তাদের ঈদ-প্রস্তুতিতে সহায়তা করার অবকাশ শরিয়তে রয়েছে। সে হিসেবে রমজানের শেষ দশ দিনে এই আমলটি অনেকেই শুরু করেন। ফিতরা বা সদকাতুল ফিতরের মধ্য দিয়ে ঈদের আনন্দে গরিব, অসহায় মানুষকেও অংশীদার বানানোর ব্যবস্থা বিদ্যমান। এক হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, একদিনের জন্য হলেও গরিব মানুষের অসহায়ত্ব দূর করতে ফিতরা দেয়ার জন্য সচ্ছল মুসলমানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাই ফিতরার জন্য বর্ণিত পাঁচ ধরনের খাদ্য খেজুর, পনির, যব, কিশমিশ ও গমের মধ্য থেকে যে কোনো একটির নির্দিষ্ট পরিমাণ উত্তম জিনিস অথবা তার মূল্য ফিতরা হিসেবে দান করতে সচ্ছল মুসলমানদের প্রস্তুত হওয়া কর্তব্য। বর্তমানে গম বা আটার মূল্য ধরেও যে কেউ ফিতরা দিতে পারেন।
সাধারণত বাজারমূল্য ধরে প্রতি বছর ফিতরার সর্বনিম্ন হার প্রচারিত হয়। দেশের অভিজ্ঞ মুফতি এবং দারুল ইফতার পক্ষ থেকে এ হারটির ঘোষণা দেয়া হলেও এটিকে ফিতরার একমাত্র হার মনে করা ঠিক নয়। এটি সর্বনিম্ন হার। যাদের ওপর ফিতরা দেয়া ওয়াজিব, তারা কমপক্ষে এ হারে ফিতরা দেবেন। অপেক্ষাকৃত সচ্ছল ও বিত্তবানরা এর অধিক অঙ্কের হিসাবেও ফিতরা দিতে পারেন। তাদের জন্য সেটাই উত্তম। তবে ফিতরার জন্য হাদিসে বর্ণিত বস্তুগুলো কিংবা সেগুলোর মূল্য বিবেচনা করতে হবে। এক্ষেত্রে মনগড়া কিছু করা ঠিক নয়।
জাকাত ফরজ হয় নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার পর এক বছর পার হলে। ফিতরা ওয়াজিব হয় কেবল ঈদের দিন সকালে নিসাব পরিমাণ সম্পদ হাতে থাকলে। এজন্যই জাকাত ফরজ নয়—এমন অনেকের ওপরও ফিতরা দেয়া ওয়াজিব হয়ে থাকে। ঈদের দিন সকালে যার নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে, তিনি মাহে রমজানের শেষ দিনগুলোতে ফিতরা দিতে পারেন। ঈদের অনুমোদিত আনন্দ-আয়োজনে গরিবদের শরিক করার এই ইসলামী বিধানটিকে গুরুত্ব ও আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করা আমাদের সবার কর্তব্য। হাদিস শরিফের ভাষ্য অনুযায়ী, রমজানের রোজায় মান ও পূর্ণতাগত যেসব বিচ্যুতি সংঘটিত হয়, ফিতরায় তার ক্ষতিপূরণ হয়। ফিতরা তাই যেমন স্বতন্ত্র একটি ইবাদত, তেমনি ঈদের আনন্দে গরিবের পাশে দাঁড়ানো আর রোজার সৌভাগ্য ও পূর্ণতা লাভের এক অনন্য উপায়।
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template