السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

ইতিকাফ

| comments

নাজাতের এই দশ দিন ইতিকাফ করা সুন্নতে কেফায়া। রমজানের শেষ দশকের পরিপূর্ণ ফায়দা হাসিল করতে হলে ইতেকাফের কোনো বিকল্প নেই। হযরত রাসূল (সা.) জীবনভর প্রত্যেক রমজানে দশ দিন ইতেকাফ করতেন এবং জীবনের শেষ রমজানে বিশ দিন ইতেকাফ করেছেন। ইতেকাফকারীর সারা জীবনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে বলে হাদিসে ঘোষণা এসেছে। কাল সন্ধ্যা থেকে ইতেকাফে বসার সুযোগ যাদের হয়েছে নিঃসন্দেহে তারা সৌভাগ্যবান। তবে অনেকেই ইতেকাফের নিয়ম-কানুন যথার্থভাবে অনুসরণ না করার পরিপ্রেক্ষিতে ইতেকাফের পুরোপুরি ফায়দা অর্জন থেকে বঞ্চিত থাকেন। এজন্য যারা দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে আল্লাহকে পাওয়ার জন্য আল্লাহর ঘর মসজিদে এসে অবস্থান নিয়েছেন তাদের এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া খুবই জরুরি।
বিশ রমজান সূর্যাস্তের আগে মসজিদে অবস্থান করা থেকে নিয়ে শাওয়ালের চাঁদ উদয় হওয়া পর্যন্ত পুরোটা সময়ই ইতেকাফের অন্তর্ভুক্ত। ইতেকাফকারী এ সময়টুকুতে ইচ্ছে করলেই নিজের মতো চলতে পারবেন না। ইতেকাফের যে বিধান ও নীতিমালা আছে সে অনুযায়ীই তাকে চলতে হবে। ইতেকাফের সময়টা ইবাদতের মধ্যে গণ্য। কেউ যদি কোনো ইবাদত না করে চুপ হয়ে বসেও থাকেন তবুও তিনি সওয়াব পেতে থাকবেন। তবে প্রত্যেকের উচিত এ সময়টুকু সুবর্ণ সুযোগ মনে করে ইবাদতে মশগুল থাকা। মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা ইতেকাফকারীর প্রধান দায়িত্ব। প্রয়োজনীয় কথাবার্তা ছাড়া সাথীদের সঙ্গে খোশগল্পে লিপ্ত হওয়া যাবে না। অধিক ঘুম যদিও ইতেকাফের জন্য ক্ষতিকারক নয় তবুও ইবাদতে বিঘ্ন ঘটার কারণে ঘুমিয়ে বেশি সময় নষ্ট করা উচিত নয়। পার্থিব কোনো বিষয়ে ভাবনায় ডুবে থাকাও বাঞ্ছনীয় নয়। সব সময় আল্লাহর ধ্যানে নিমগ্ন থাকার চেষ্টা করতে হবে।
ইতেকাফকারীর করণীয় হলো_ ইতেকাফ অবস্থায় বেশি বেশি নফল ইবাদত করা। যেমন_ নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, বিভিন্ন ধরনের তাসবিহ, তাওবা, ইস্তেগফার, নবীর প্রতি দরুদ পাঠ ও দোয়া প্রভৃতি আমলের মধ্যে নিবিষ্টভাবে মগ্ন থাকা। ধর্মীয় পুস্তকাদি পাঠ ও এর তালিমও ইবাদতের মধ্যে গণ্য হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইতেকাফের পুরো সময়টা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাটাতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ইতেকাফকারী জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মসজিদের বাইরে আসতে পারবে না, তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হতে পারবে না। জানাজায় শরিক হওয়া এবং রোগী দেখতে যাওয়া তার জন্য জরুরি নয়। হজরত আলী (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি ইতেকাফ করবে সে যেন গালিগালাজ না করে, অশল্গীল কথা না বলে।
ইতেকাফের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো লাইলাতুল কদর প্রাপ্তি। যেহেতু মহিমান্বিত এ রাতটি নিশ্চিত নয় এজন্য ইতেকাফকারীকে প্রত্যেক রাতে তা অন্বেষণ করতে হবে। বিশেষত বেজোড় রাতগুলো ইবাদতের মধ্যে কাটানো অপরিহার্য। কারণ ইতেকাফের উসিলায় সারা জীবনে যদি একটি লাইলাতুল কদর নিশ্চিতভাবে লাভ করা যায় তবে এটাই জীবনের জন্য যথেষ্ট হবে।
ইতেকাফ আল্লাহর ঘরে বসে আল্লাহকে পাওয়ার অনুশীলন। এজন্য ইতেকাফকারীর উচিত আল্লাহর জন্য নিবেদিত এ সময়টুকু শুধুই তাকে পাওয়ার আকুলতায় ব্যয় করা। নিজের মধ্যে গায়রুল্লাহ যেন স্থান করে নিতে না পারে সে দিকে খেয়াল রাখা।
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template