এ মাসের মাহাত্ম্য ও মর্যাদা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন “রমজান মাস, উহাতেই কুরআন মজীদ নাযিল হয়েছে। তা গোটা মানবজাতির জীবন যাপনের জন্য বিধান স্বরূপ এবং তা এমন সুস্পষ্ট উপদেশাবলীতে পরিপূর্ণ যা সঠিক ও সত্য পথ প্রদর্শন করে এবং সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য পরিষ্কাররূপে তুলে ধরে। অতএব, তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে, তারা যেন রোজা রাখে। আর যদি কেউ অসুস্থ বা সফরে থাকে, তাকে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করতে হবে (এ রোজাগুলো রাখতে হবে)।” (সূরা বাকারা-১৮৫) এ মাসের মর্যাদা রক্ষার্থে প্রত্যেক মুমিনেরই অবশ্য কর্তব্য যে, সারা মাস রোজা রাখা এবং তারাবীহের নামাজ আদায় করা। এ মাস ইবাদতের মাস। এ মাসের ইবাদতে অন্যান্য মাসের ইবাদতের চেয়ে বহুগুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। কেননা, হাদীসে কুদসীতে বলা হয়েছে যে, প্রিয় নবী (সা:) বলেছেন আল্লাহ তা’আলা বলেন, “রোজা আমার জন্য, আমি স্বয়ং এই রোজার সওয়াব দান করবো।”
এ মাস মানুষের আত্ম শুদ্ধির মাস। এ মাসে রোজা রাখলে, সেই রোজায় মানুষের পাপকে জ্বালিয়ে দেয় পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। তাতে আত্মাশুদ্ধ হয়। কেননা রমজান, রমজ ধাতু থেকে উৎপন্ন। যার অর্থ কোন কিছুকে পুড়িয়ে দেয়া। তাই এ সম্পর্কে বলা হয়েছে- হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসূলে করিম (সা:) ঘোষণা করেছেন, যে লোক রমজান মাসের রোজা রাখবে ঈমানের দৃঢ়তা ও আত্মচেতনা সহকারে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাযাহ ও মসমদে আহমদ)
এ মাস মুমিনের আত্মশুদ্ধির মাস। এ মাস মুমিনের গুনাহ মাফের মাস এবং ঈমানকে দৃঢ় বা শক্তিশালী করার মাস। এ মাস কুরআন পাঠের মাস এবং অধিক সাদকা বা দানের মাস ও যাকাত আদায় করার মাস। এ মাস অধিক পূর্ণ বা সওয়াব অর্জন করার মাস। রমজান মাসের রোজা বা সওম পালনে আত্মশুদ্ধি হয় এবং তাকওয়া অর্জিত হয়। ফলে মুমিনের আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথ অতিশয় সহজ হয়।
এ মাসের সওম বা রোজার ফজিলত বা মর্যাদা ও মুমিনের রোজা পালনের উপকার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা আলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী নবীদের উম্মতগণের উপর। আশা করা যায় যে, (এ রোজার মাধ্যমে) এর দ্বারা তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণ ও বৈশিষ্ট্য জাগ্রত হবে। (সুরা বাকারা-১৮৩ আয়াত)
হযরত আবু উমামাহ বাহেলী বলেছেন, শাবান মাস এসে গেলে রাসূল (স:) বলতেন, এ মাসে তোমরা তোমাদের অন্তরকে পবিত্র ও নির্মল করে নাও এবং তোমাদের নিয়তকে দুরস্ত কর। হে মহান আল্লাহ আগত রমজান মাসের রোজারগুলোকে নিখুঁতভাবে পালন করার তাওফিক আমাদের দান করুন।
মাওলানা লুৎফর রহমান ইবনে ইউসুফ
Post a Comment