السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

অপরিসীম ফজিলতপূর্ণ ইবাদত নামাজ

| comments

দু'রাকা'আত নামাজই জান্নাত প্রাপ্তির জন্য যথেষ্ট (বুখারী)। নবী (স.) কর্তৃক বেলাল (রা.) কে জান্নাতে সম্মূখে চলার সময় জুতার শব্দ শ্রবণের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে বিলাল (রা.) জবাবে বললেন, আমি যখন অজু করি রাত্রে অথবা দিনে তখন সেই অজু দ্বারা সালাত আদায় করি (বুখারী, মুসলিম মেশকাত হা. ১৩২২)। এটাই হল তাহিয়্যাতুল অজু নামাজের ফজিলাত যা জান্নাতী হওয়ার সহায়ক। আর ইবাদতের জগতে সর্বোত্তম ইবাদত হল (ফরজ) সালাত। কেয়ামতের প্রথম হিসাব হবে নামাজের, যার নামাজের হিসাব ঠিক-ঠিক কাঁটায়-কাঁটায় মিলে যাবে তার পরবর্তী হিসাব সহজ হবে বা জান্নাতের রাস্তা সহজ হবে।

মহিলা (মা-বোনদের) ৪টি আমলে, ৮টি জান্নাতের দরজা খোলা থাকবে তন্মোদ্ধে ৫ওয়াক্ত সালাতই অন্যতম। "যদি তোমাদের বাড়ির সামনে কারো নদী থাকে এবং সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তবে কি তার শরীরে কোন ময়লা থাকবে? সাহাবায়ে কেরামগণ জবাবে বললেন না; রসূলুল্লাহ (স.) বললেন, এটাই পাঁচ ওয়াক্ত (ফরজ) নামাযের উদাহরণ (বুখারী হা. ৫২৮ ও মুসলিম হা.৬৬৭)।

ইবনে মাস্উদ (রা.) -এর প্রশ্নের জবাবে আমাদের প্রিয়নবী (স.) বললেন,আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা অধিক পছন্দনীয় আমল হল সময়মত সালাত আদায় করা (মুসলিম১/৮৯)।
"নামাজ দ্বীন ইসলামের স্তম্ভ অতএব নামাজ কায়েমকারীই দ্বীন কায়েমকারী, নামাজ ধ্বংসকারীই দ্বীন ধ্বংসকারী। ঘুটঘুটে অন্ধকার, চতুর্দিক চুলের মত চিকন ধারালো অস্ত্রের ফলার মত পথ; তুমি সামনে অগ্রসর হতে পারবেনা সেদিন মানুষ পলায়ন করবে তাঁর ভাই, মাতা-পিতা, স্ত্রী, সন্তান হতে (আবাসা-৩৪-৩৬) এমন সময় সালাতকে তুমি হেফাজত করে থাকলে সে-ই তোমাকে আলোকবর্তিকা হয়ে জান্নাতে নিয়ে যাবে।

প্রিয়নবী (স.) মহাররম ও সফর মাসে অসুস্থ (মাথা ব্যথা) হলে সতের ওয়াক্ত নামাজ আবু বকর (রা.) কে ইমামতির আদেশ করেন। ইবনে আব্বাস ও আলীর (রা.) ধরাধরির মাধ্যমে এক ওয়াক্ত নামাজ আবু বকরের (রা.) পাশে বসে ইমাম হয়ে আদায় করেন। আয়েশা (রা.) বলেন, আমার দু'চোখ এখনো সাক্ষী দেয়, (অসুস্থতার কারণে) তাঁর দু'টি পা মাটি দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল (বুখারী-২য় হা. ৬৩১,৬৩২) এ অবস্থায় তিনি জামা'আতে সালাত আদায় করেছেন কারণ "সালাতই ছিল তাঁর চক্ষু ঠান্ডাকারী" ক্রমেই অসুস্থতা বেড়ে গেলো। হাসান-হুসাইনকে (রা.) কাছে ডেকে আদর করে চুম্বন দিলেন। সকল স্ত্রীগণকে ডেকে নসীহত করলেন। তিনি উম্মতকে সর্বশেষ উপদেশ দিয়ে বারবার বললেন, "নামাজ, নামাজ আর তোমাদের অধীনস্থ দাসদাসিগণ (সম্বন্ধে সতর্ক হও)। হিজরি সনের ১১বর্ষের রবিউল আওয়াল মাসের ১২তারিখ সোমবার তাঁর আদর্শ জীবনের চিরঅবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন অসিয়াত পালনে গুরুত্ব বেশি আর মহানবীর (স.) মৃত্যুকালীন অসিয়াত নামাজ।

আল্লাহকে অন্তরে হাজির-নাজির জেনে, যথাযথ ভয় রেখে শুধু তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য চরম আনুগত্যের ধ্যানসহ রসূলুল্লাহর দেখানো পদ্ধতিতে এই নামাজ আদায় করতে হবে তাহলেই আসল ফজিলত জান্নাত লাভ হবে। এই নামাজের আসল ফজিলত প্রাপ্যদের সম্পর্কে কুরআনে (সূরা মু'মিনুনের- ১,২,৯,১১ আয়াতে) বলা হয়েছে "অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ, যারা বিনয়-নম্র, যত্নবান থাকে নিজের নামাজে। তাঁরাই হবে জান্নাতুল ফিরদউসের অধিকারী যেস্থানে তাঁরা স্থায়ী হবে।" নবী (স.) বলেছেন, তোমরা আল্লাহর নিকট জান্নাতের জন্য প্রার্থনা করলে ফেরদাউসের জন্য প্রার্থনা কর" যা নামাজ হিফাজত-কারীদের জন্য নির্ধারিত। এধরনের নামাজ নিশ্চিতভাবে মানুষকে অন্যায়-অপকর্ম থেকে বিরত রেখে আত্মাকে কলুষমুক্ত করে (সূরা আনকাবুত-৪৫)। রসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, "পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমু'আ হতে অন্য জুমু'আ এক রমজান থেকে অপর রমজান এবং এক ঈদ থেকে পরবর্তী ঈদের মধ্যে সে সকল গুনাহ মার্জনাকারী, যে সকল গুনাহ্ মধ্যবর্তী সময়ে হয়ে থাকে। যদি কবীরা গুনাহ্সমূহ থেকে বেঁচে থাকা হয়, আর "যে ব্যক্তি দিনে-রাতে ১২রাক'আত (সুন্নত) নামাজ পড়বে, তার জন্য জান্নাতে একটি গৃহ নির্মাণ করা হবে (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ ও সহীহুল জামে)।

শীতের মৌসুমে গাছের পাতা ঝরতে ঝরতে গাছ যেমন পাতা শূন্য হয়ে যায় ঠিক তেমনি নিয়মিত নামাজ আদায়কারীর নামাজই তার আমলনামা পাপশূন্য করে দেয়। ঈশা ও ফজরের নামাজ জামা'আতে পড়ার কত ফযিলত তা যদি তারা জানত তা হলে হামা গুঁড়ি দিয়ে হলেও জামা'আতে উপস্থিত হতো।

আবদুল আলিম আল-আসাদ
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template