السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

হজ্ব ও কুরবানি থেকে কী শিক্ষা পেলাম

| comments

চলে গেল হজ্ব-কুরবানির মহিমায় সমুজ্জ্বল ইবাদত-আত্ম নিবেদনের পর্ব। কিন্তু এগুলোর শিক্ষা শ্বাশত ও চিরজাগ্রত। প্রমোদ পর্যটন বা রসনা বিলাস-তৃপ্তির উদ্দেশ্য এতে থাকে না— কারো মধ্যে এমন উদ্দেশ্য থাকলে ইবাদতের মর্যাদা ক্ষুন্ন ও বিপন্ন হয়। কেননা, মহান আল্লাহ্ বলেন "আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ্ব ও ওমরা পূর্ণ কর" (বাকার: ১৯৬)। তাই যিনি মহান আল্লাহর ঘরের মেহমান, তাঁর 'হূদ-কাবা'য় বিশ্ব প্রভুর উপস্থিতি চির জাগরুক থাকা স্বাভাবিক।

হাজি সাহেবান তাদের আচরণ, ইবাদত, লেনদেন সবক্ষেত্রে একজন 'স্বেত-শুদ্ধ মনের মানুষ' হিসেবে সমাজে অভিভাবক-নির্দেশেকের ভূমিকা পালন করবেন। শুধু নামের আগে 'আলহাজ্ব' লেখা হজ্বের উদ্দেশ্য হতে পারে না। হজ্ব একটি মৌলিক ইবাদত— গর্ব করবার বিষয় বা পদবি-উপাধি নয়। একজন নামাযি বা রোজাদার নিজেকে 'মুসল্লি' বা 'সায়িম' নামে আত্ম প্রচার করেন না। তবু হজ্ব ও হাজি সাহেবানের গুরুত্বে হয়ে যায় 'হাজিপাড়া' বা 'হাজিগঞ্জ' ইত্যাদি। আর ইবাদত 'রিয়া' তথা লোক দেখানোর বিষয় নয়। বরং সমাজ সংস্কার, জাতিগঠন ও কর্তব্য নিষ্ঠায় নিবেদিত প্রাণগণ হয়ে ওঠেন প্রাতস্মরণীয়। যেমন হাজী শরিয়তুল্লাহ্, হাজী মোহাম্মদ মহসিন, হাজী দানেশ প্রমুখ।

হাজী সাহেবানকে মনে রাখতে হবে তাঁরা আল্লাহর ঘর সামনে রখে ভবিষ্যতে অন্যায় না করবার দৃঢ় সংকল্প 'তওবা' করেছেন। তাই হজ্বের পর যদি তাঁদের মধ্যে পূর্বে থাকা অনৈতিক বৈশিষ্ট্য ফিরে আসে তবে কি বুঝতে হবে তার লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় অর্থহীন বা লোক দেখানো? অথচ হাদিসে আছে "...সে নবজাতকের মত নিঃষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে" (বুখারি-মুসলিম)। প্রিয়নবী (স.) আরো বলেন "পানি যেমন ময়লা-আবর্জনা ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়, হজ্জ্বও তেমন পাপহীন ও পবিত্র করে দেয়"(বুখারি)।

ইবাদতের মর্মকথা — আত্ম নিবেদন। প্রিয়-প্রয়োজনীয় বস্তু , ধন-প্রাণ উত্সর্গের মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ ও বান্দার নৈকট্য তৈরী হয়। 'কুরবান' 'কিরবান' বা 'কুরবাত' অর্থ নৈকট্য। এ চেতনায় কুরবানি একটি উচ্চমর্যাদার ইবাদত। মহান আল্লাহ্ বলেন "তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামায আদায় কর এবং কুরবানি দাও" (কাওসার:০২)। লোক দেখানো, ভোগবাদীতা, ফ্রিজে সংরক্ষণ করে সারা বছর মেহমানদারি করা কুরবানির শিক্ষাকে ম্লান করে দেয়। বরং ত্যাগ-তাকওয়া (ধর্মভীরুতা) হলো কুরবানির লক্ষ। মহান আল্লাহ্ বলেন "(বল) আমার নামায, আমার কুরবানি, আমার বেঁচে থাকা, আমার মরে যাওয়া (সবকিছু) আল্লাহর জন্য" (আন-আম:১৬৩)।

শুধু পশু জবাই নয় বরং পাষবিকতা দমন ও প্রিয়বস্তু প্রিয়প্রাণ উত্সর্গের চেতনা শিক্ষা দেয় কুরবানি। ব্যক্তি-সমাজ তথা জীবনের সব ক্ষেত্রে এ চেতনা জাগিয়ে রাখা একটি সার্বক্ষণিক ইবাদত। জাতীয় কবির উচ্চারণ—

"দাও কুরবানি জান ও মাল

বেহেশত্ তোমার কর হালাল...." (শহীদি ঈদ)

অথবা—

"মনের পশুরে কর জবাই

পশুরাও বাঁচে বাঁচে সবাই"।

-মো. আলী এরশাদ হোসেন আজাদ
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template