সোহরাওয়ার্দী
উদ্যানের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে তিন নেতার মাজারের পেছনে খয়েরি রঙের বেশ পুরনো
একটি মসজিদ ও সমাধিসৌধ রয়েছে। মোগল স্থাপত্যরীতি অনুসরণ করে হাজি খাজা
শাহবাজ (র.)-এর নামে এক ব্যবসায়ী ৩০০ বছর আগে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।
সুবেদার শাহ আজমের সময় (১৬৭৭-৭৮) খাজা শাহবাজ কাশ্মীর থেকে ঢাকায় এসে
ব্যবসা শুরু করেন। অচিরেই তিনি বিপুল ধনসম্পত্তির মালিক হন। মিতব্যয়ী এ
ব্যক্তি থাকতেন টঙ্গী। প্রতিদিন হেঁটে যাওয়া-আসা করতেন। তিনি রমনা এলাকায়
একটি চিত্তাকর্ষক মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। ১৬৭৯ সালে তিনি রমনায় তিন
গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। রমনার পূর্ব দিকে ছিল খাজা
শরফুদ্দিন চিশতি (র.)-এর মাজার এবং মাঠের মাঝখানে ছিল ৫০০ বছরের পুরনো
কালীমন্দির। এমন স্থানে মসজিদটি নির্মিত হওয়ার পরে এ এলাকার সৌন্দর্য আরো
বেড়ে যায়। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসত নামাজ পড়তে। খাজা শাহবাজও
টঙ্গী যাওয়া-আসার পথে নামাজ পড়তেন এ মসজিদে। ভূমি থেকে তিন ফুট উঁচুতে
নির্মিত এ মসজিদটি প্রায় এক বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। এর দক্ষিণ ও পূর্ব দিক
নিচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং পশ্চিম ও উত্তর প্রান্তটি লোহার রেলিং দিয়ে
ঘেরা। মসজিদে প্রবেশের জন্য পাঁচটি আকর্ষণীয় দরজা রয়েছে। এর প্রতি কোণে
একটি বড় মিনার ও দুটি ছোট মিনার রয়েছে। মসজিদের ২০ গজ দূরে এক
গম্বুজবিশিষ্ট সমাধিসৌধে শায়িত আছেন খাজা শাহবাজ (র.)। মৃত্যুর আগেই তিনি
এটি নির্মাণ করেন।
গ্রন্থনা : মাহমুদুল হাসান
Post a Comment