السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

স্বস্তিপুর মসজিদ, ঝিনাইদহ

| comments

কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে ঝিনাইদহগামী সড়ক ধরে প্রায় ১১ কিলোমিটার এগিয়ে স্বস্তিপুর গ্রামে পৌঁছলাম। সামান্য হাঁটতেই স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি যে মোগল যুগের, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি যে একটি পুরনো মসজিদ, তারও অনেক প্রমাণ রয়েছে। এর দেয়ালের পুরুত্ব ০.৯১ মিটার এবং পিলারসহ তা ১.০১ মিটার। এটি একটি ছোট মসজিদ এবং তাতে মাত্র এক সারি মানুষ দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারেন। এখন অবশ্য মসজিদের পূর্ব দেয়াল সংলগ্ন বড় একটি বারান্দা যুক্ত করে আয়তন বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটিতে যথেষ্ট সংস্কার কাজ হয়েছে। একজন মুসলি্লর কাছে জানা গেল, মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে বর্তমানে যে তিনটি মেহরাব দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে কেন্দ্রীয়টি শুধু আদি মেহরাব, অন্য দুটি পরে নির্মিত হয়েছে। তবে এ কথার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। কারণ মোগল আমলের ৩ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে পূর্ব দেয়ালে ৩টি প্রবেশপথ ও পশ্চিম দেয়ালে ৩টি মেহরাব দেখা যায়। কিন্তু এমন মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে একটি মাত্র মেহরাব থাকার ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক নয়।
মসজিদের দেয়ালের গায়ে উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ২টি করে মোট ৪টি জানালা এবং প্রতি পাশে দুটি জানালার মাঝখানে এটি করে কুলুঙ্গি আছে। মুসলি্লদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এ জানালা ও কুলুঙ্গি সবই দেয়াল কেটে হাল আমলে বানানো হয়েছে। মসজিদের ৪ কোণে ৪টি মিনার ছিল, যা এখন ধ্বংস হয়ে গেছে। আর পূর্ব দেয়ালের প্রবেশপথগুলোও সংস্কারের সময় দেয়াল কেটে বড় করা হয়েছে। আগেকার প্রবেশপথগুলো এতই ছোট ছিল যে, তা দিয়ে কুঁজো না হয়ে ঢোকা যেত না। তবে মসজিদটির পূর্ব দেয়ালে যে ৩টি প্রবেশপথ রয়েছে, তা পত্রাকার খিলান আকৃতির এবং আধুনিক প্রবেশপথের চেয়ে পুরোপুরি আলাদা। কাজেই দেয়াল কেটে প্রবেশপথ বড় করার ব্যাপারটা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া কঠিন বলে মনে হলো।
'কুষ্টিয়ার ইতিহাস' প্রণেতা শ ম শওকত আলীর মতে, মূল মসজিদে একটি বড় মসজিদের পাশে ৪টি ছোট গম্বুজ ছিল। বাংলাদেশ জেলা গেজেটিয়ার কুষ্টিয়া (১৯৯১, পৃ. ৩৯৪) থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়ার আলামপুর ইউনিয়নের স্বস্তিপুর গ্রামে নবাব শায়েস্তা খানের আমলে এ মসজিদটি নির্মাণ সম্পর্কে জনপ্রবাদ আছে। আদি মসজিদটি আকারে ছোট ছিল। সেটি ধ্বংস হয়ে গেলে নতুন করে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। এসব বক্তব্যের সর্বাংশে সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়েও বলা যায়, বর্তমান মসজিদটিও মোগল আদলকে কিছুটা হলেও ধরে রেখেছে।

Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template