আল্লাহ ত'আলা খারাপ লোকের খারাবি থেকে বাঁচার জন্য এমন একটি হাতিয়ার ব্যবহার করতে বলেছেন যা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না, কিনতে টাকা-পয়সাও লাগে না। যা বহন করতে কোন কষ্ট বা ঝামেলা হয় না। আর এই হাতিয়ার দ্বারা যে সুন্দর মিমাংসা হবে অন্য কোন হাতিয়ারদ্বারা তা হবে না বরং হাতিয়ার যত বড় হবে বিপদ ততই ভয়ংকর হবে। অশান্তি ততই বাড়বে। হাতিয়ারটি হচ্ছে 'সুন্দর ব্যবহার'।
আল্লাহ তা'আলা বলেন: আপনি সদ্ব্যবহার দ্বারা (অসদ্ব্যবহারের) মোকাবিলা করুন, (তারপরে হঠাৎ দেখবেন) আপনার ও যার মধ্যে শত্রুতা ছিল সে ব্যক্তি আপনার আন্তরিক বন্ধুরূপে গণ্য হয়েছে। (সুরা-হা-মীম সেজদাহ: ৩৪)
মন্দের জওয়াবে মন্দ না করে বরং ক্ষমা করা উত্তম কাজ। অতি উত্তম কাজ এই যে, যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে মন্দ ব্যবহার করে তুমি তাকে ক্ষমা তো করবেই এবং তার সাথে সুন্দর ব্যবহারও করবে এতে সে ব্যক্তি লজ্জিত হবে এবং যদি তোমার প্রতি কোন খারাবির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তাহলে সে তা থেকে বিরত থাকবে। এমনকি যদি তুমি এই সুন্দর ব্যবহার করতেই থাক আর সে যদি সত্যিই দুষ্ট লোক হয় তাহলে সে অন্যদের ক্ষতি করবে বটে কিন্তু তোমার কোন ক্ষতি করবে না, বরং তোমার আন্তরিক বন্ধুরূপে গণ্য হবে এবং তোমার বিপদে সে যথাযথ সাহায্য করবে। উলেস্নখিত আয়াতের নির্দেশে ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি তোমার প্রতি ক্রোধ প্রকাশ করে তার মোকাবিলায় তুমি সবর কর। যে তোমার প্রতি মূর্খতা প্রকাশ করে, তুমি তার সহনশীলতা প্রদর্শন কর এবং যে তোমাকে জ্বালাতন করে, তুমি তাকে ক্ষমা কর। (মাআরিফুল কুরআন ) রেওয়াতে আছে, হযরত আবু বকর সিদ্দিকীকে (রা.) জনৈক ব্যক্তি গালি দিল অথবা মন্দ বলল, তিনি জওয়াবে বললেন, যতি তুমি সত্যবাদী হও এবং আমি অপরাধী ও মন্দ হই, তবে আলস্নাহ তা'আলা যেন আমাকে ক্ষমা করেন। পক্ষান্তরে, যদি তুমি মিথ্যা বলে থাক, তবে আলস্নাহ তা'আলা যেন তোমাকে ক্ষমা করেন। (কুরতুবী)
হযরত হোযায়ফা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (স.) এরশাদ করেছেন, তোমরা অন্যদের অনুসারী হয়ো না। এরূপ চিন্তা করো না যে, লোকে আমাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করলে আমরাও তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবো। আর লোকে যদি আমাদের ওপর জুলুম করে তবে আমরাও জুলুম করবো। না, বরং তোমরা এই দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ কর যে মানুষ যদি তোমাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে, তাহলে তোমরাও তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। আর তারা যদি তোমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে তাহলে তোমরা তাদের উপর কোন জুলুম করবে না। (তিরমিযি)
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূল (স.) এরশাদ করেন, সেই আলস্নাহর কসম, যিনি আমাকে সত্য-দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন। কেয়ামতের দিন আলস্নাহ তা'আলা সেসব লোকদের আজাব দেবেন না যারা পৃথিবীতে এতিমদের প্রতি রহম করেছে, তাদের সাথে কোমলভাবে কথা বলেছে, তাদের এতিমি ও কমজোরির প্রতি হূদয়ে সহানুভূতি রেখেছে এবং নিজের সম্পদের প্রাচুর্যের কারণে প্রতিবেশির মোকাবেলায় নিজের বড়াই ভাব দেখায়নি।
-হোসাইন আল খালদুন
Post a Comment