বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব প্রফেসর মাওলানা মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন জুম্মা পূর্ব বয়ানে বলেন, আল্লাহ্ তা'আলার নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে আল্লাহ্র জিকির। ফরজ এবাদত করা সবার ওপরই বাধ্যতামূলক। এটা মানুষের করণীয় দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আল্লাহ তা'আলার প্রিয়ভাজন হতে হলে, তার খুব কাছের বান্দা হতে হলে নফল এবাদত করতে হয়। নফল এবাদতের মাধ্যমে মানুষ অতি সহজে আল্লাহ তা'আলার প্রিয়ভাজন হতে পারে। নফল এবাদতসমূহের মধ্যে অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ এবাদত হচ্ছে আল্লাহ তা'আলার জিকির। জিকির-এর নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন :
'হে মু'মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করা।' (৩৩:৪১-৪২)।
রাসূলুল্লাহ (সা.)কে সম্বোধন করে আল্লাহ তা'আলা বলেন :
'(হে রাসূল)! আপনি স্মরণ করুন আপনার রবকে মনে মনে বিনীতভাবে ভয়জড়িত অন্তরে, উচ্চরবে নয় সকালে ও সন্ধ্যায় তথা সার্বক্ষণিকভাবে এবং আপনি উদাসীন হবেন না' (৭:২০৫)। আয়াতে রাসুলুল্লাহ (সা.)কে সম্বোধন করা হলেও এর উদ্দেশ্য দুনিয়ার সকল মুসলমান। সকল মুসলমানকেই সকাল-সন্ধ্যা জিকিরের এ নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। মানুষ যখন গুণাহ করে তখন মানুষের হৃদয়ে একটি কালো দাগ পড়ে। আরেকটি গুনাহ করলে আরেকটি কালো দাগ পড়ে। এভাবে গুনাহর কারণে মানুষের হৃদয় কালিমাযুক্ত হয়ে যায়। অন্তরের এ কালিমা একমাত্র আল্লাহ তা'আলার জিকির-এর মাধ্যমেই দূর করা সম্ভব। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন :
'প্রত্যেক বস্তু পরিষ্কার করার যন্ত্র রয়েছে। আর অন্তরকে পরিষ্কার ও পবিত্র করার যন্ত্র হলো আল্লাহ তা'আলার জিকির। আর আল্লাহর আজাব থেকে অধিক মুক্তিদাতা আল্লাহ তা'আলার জিকির অপেক্ষা আর কোনো এবাদত নেই' (বায়হাকী শরীফ)।
আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন :
'শয়তান আদম সন্তানের ক্বলবের ওপর জেঁকে বসে থাকে। যখন সে আল্লাহ তা'আলাকে স্মরণ করে তখনই শয়তান সরে যায়। আর যখন সে আল্লাহ তা'আলা হতে গাফিল হয়ে যায় তখন শয়তান তার দিলে ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে' (বুখারী শরীফ)।
নিয়মিত আল্লাহ তা'আলার জিকির করলে আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য লাভের পাশাপাশি জাগতিক উন্নতি অর্জিত হয়। আল্লাহ তা'আলা নিয়মিত জিকিরকারীর রিজিক ও হায়াতের মধ্যে বরকত দান করেন। জাগতিক জীবনে মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। ঈমানের সঙ্গে মৃত্যু নসিব করেন।
আল্লাহ তা'আলা আমাদের নিয়মিত জিকির করার তওফিক দিন। আমীন।
Post a Comment