السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

হজ্বের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

| comments

হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত, একদা নবী করীম (স.) কে প্রশ্ন করা হল যে, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। প্রশ্ন করা হল, তারপর কোনটি? তিনি জবাব দিলেন, আল্লাহর পথে সংগ্রাম করা। পুনরায় তাকে জিজ্ঞেস করা হল, এরপর কোন্টি? জবাবে তিনি বললেন, হজ্বে মাব্রূর অর্থাৎ মাকবুল হজ্ব। -(বুখারী ও মুসলিম)

অন্য হাদীসে আছে, মাকবুল হজ্বের প্রতিদান বেহেশ্ত ছাড়া কিছুই নয়।

অপর এক হাদীসে আছে- হযরত আবু হোরাইরা (রা) হতে বর্ণিত, নবী করীম (স.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্ব করল, হজ্বের কার্যাবলী আদায়কালে স্ত্রী-সম্ভোগ থেকে বিরত থাকল ও গুনাহের কাজ করল না, সে মাতৃগর্ভ হতে নবজাত শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরবে।

নবী করীম (স.) আরো বলেন, বাহ্যিক কোন কারণ, যালিম বাদশাহ কিংবা অসুস্থতা হজ্ব আদায়ের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক না হওয়া সত্ত্বেও কেউ যদি হজ্ব আদায় না করে মারা যায়, তবে সে ইহুদী হয়ে মৃতু্যবরণ করুক কিংবা খ্রিস্টান হয়ে মৃতু্যবরণ করুক। (তাতে কিছু আসে যায় না)।

আল্লাহতা'আলা হাকীম ও প্রজ্ঞাময়। তার কোন কাজই হিক্মত ও রহস্য থেকে খালি নয়। গবেষক আলিমরা অনেকেই হজ্বের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কথা আলোচনা করে কিতাব লিখেছেন। বস্তুত হজ্বের মধ্যে দু'টি বিষয়ই অধিক তাৎপর্যপূর্ণ। হজ্বের প্রতিটি আমলের মধ্যে এ দু'টি দৃশ্যের প্রকাশ সর্বত্র পরিলক্ষিত হয়, ১. হজ্ব পরকালের সফরের এক বিশেষ নিদর্শন এবং

২. হজ্ব আল্লাহর ইশ্ক ও মহব্বত প্রকাশের এক অনুপম বিধান।

মুহাক্কিক আলিমরা হজ্বের সফরকে আখিরাতের সফরের সাথে তুলনা করেছেন। কেননা, মানুষ যখন হজ্বের উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বের হয়, তখন আত্মীয়-স্বজন, বাড়ি-ঘর, বন্ধু-বান্ধব ত্যাগ করে তারা যেন পরকালের সফরে বের হয়। মৃতু্যর সময় যেমন বাড়ি-ঘর, দোকান-মাকান ত্যাগ করতে হয়, অনুরূপভাবে হজ্বের সময়ও এ জাতীয় সবকিছু ত্যাগ করতে হয়। যানবাহনে আরোহণ হাজীকে খাটিয়ায় সাওয়ার হওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ইহরামের দু'টুক্রা শুভ্র কাপড় হজ্বযাত্রীদের মনে কাফনের কাপড়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ইহ্হরামের পর লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক' বলা কেয়ামতের দিন আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেয়ার সমতুল্য। সাফা-মারওয়ার সাঈ হাশরের ময়দানে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করার সমতুল্য। সে দিন যেমন মানুষ দিশেহারা হয়ে নবী-রাসূলদের নিকট ছুটাছুটি করবে তদ্রূপ হাজীরাও সাফা-মারওয়া পর্বতদ্বয়ের মাঝামাঝি স্থানে দৌড়াদৌড়ি করে থাকে। আরাফার ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের অবস্থান হাশরের ময়দানের নমুনা বলে বোধ হয়। সূর্যের প্রচণ্ড তাপের মধ্যে আশার এক করুণ দৃশ্যের অবতারণা হয় এ ময়দানে। এক কথায়, হজ্বের প্রত্যেকটি আমল পরকালের সফরের কথা ভেসে উঠে হজ্বযাত্রীর হূদয়ে। এটাই হলো হজ্বের প্রধানতম তাৎপর্য ও রহস্য।

--আল বাকী
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template