السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

প্রতিবেশীর প্রতি কর্তব্য

| comments

হযরত শুরায়হ কা'বী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুলস্নাহ (স:) বলেন, যে ব্যক্তি আলস্নাহতা'য়ালার প্রতি এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন কল্যাণকর কথা বলে, না হয় চুপ থাকে। যে ব্যক্তি আলস্নাহর প্রতি এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, যে যেন প্রতিবেশীকে সম্মান করে। যে ব্যক্তি আলস্নাহর প্রতি এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন কমপক্ষে একদিন হলেও মেহমানের মেহমানদারি করে। আর সর্বোচ্চ মেহমানদারী হল তিনদিন। এর বেশি মেহমানদারী করা সওয়াবের কাজ।

প্রতিবেশি কারা এ সম্পর্কে নবী করিম (স.)কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, 'সামনে, পেছনে, ডানে ও বামে চলিস্নশ বাড়ি পর্যন্ত সবাই প্রতিবেশি।' অধিকারের দিক থেকে প্রতিবেশী তিন প্রকার। তিন হকের প্রতিবেশী দুই হকের প্রতিবেশী ও এক হকের প্রতিবেশী। এর মধ্যে তিন হকের প্রতিবেশী আত্মীয় মুসলিম প্রতিবেশী, দুই হকের প্রতিবেশি মুসলিম প্রতিবেশী এবং এক হকের প্রতিবেশী অমুসলিম প্রতিবেশী। প্রতিবেশীর সাথে মিলেমিশে থাকা, তাদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করা প্রতিটি মুসলমানের নৈতিক দায়িত্ব। সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার খাতিরে পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। প্রতিবেশী যে কোন পর্যায়েরই হোক না কেন সকলের প্রতি আলস্নাহ সৌজন্যমূলক আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। যারা প্রতিবেশীর হক আদায় করে না, তাদের সম্পর্কে নবীজী (স.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তির প্রতিবেশী তার অত্যাচার ও অন্যায় আচরণ হতে রক্ষা পায় না, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।' প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া ইসলামের দৃষ্টিতে জঘন্য অপরাধ। প্রতিবেশী যদি এ অপরাধ ক্ষমা না করেন, তাহলে বেহেশতে যাওয়ার অধিকার হারাতে হবে। কাজেই তা কবীরা গুণাহ। প্রতিবেশী সৎকাজে সাহায্য চাইলে সাহায্য করতে হবে। অভাবে থাকলে অভাব মোচনের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। রাসুলুলস্নাহ বলেছেন, 'যে ব্যক্তি নিজে পেট ভরে খায় অথচ প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে, সে প্রকৃত ঈমানদার নয়।' হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) রাসুলুলস্নাহ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, নিশ্চয় কেয়ামত দিবসে প্রতিবেশী তার প্রতিবেশীকে জাপটে ধরে বলবে, হে আমার রব! আপনি আমার এই ভাইকে বিত্ত-সম্পদ দান করেছিলেন, আর আমাকে বিত্ত ও সম্পদহীন বানিয়েছিলেন, আমি অনাহারে রাত কাটাতাম, আর সে আরামে পরিতৃপ্ত হয়ে রাত কাটাতো। সুতরাং আপনি জিজ্ঞাসা করুন, কেন সে আমার সামনে তার দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। কেন সে আপনার প্রদত্ত সম্পদ থেকে আমাকে বঞ্চিত করেছিল।

প্রতিবেশী সম্পর্কে পূর্বযুগের লোকদের মাঝে একথা প্রচলিত ছিল যে, কেউ মৃতু্যবরণ করলে তার তিন প্রতিবেশীর সবাই যদি তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকে, তবে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। রাসুলুলস্নাহ (স.)-এর নিকট এক ব্যক্তি এসে তার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো। রাসুলুলস্নাহ (স.) তখন বললেন, তুমি তাকে কষ্ট দিয় না। সে কষ্ট দিলে ধৈর্য ধারণ করবে। আর মৃতু্যই তোমাদের মাঝে বিচ্ছেদের জন্য যথেষ্ট।

প্রতিবেশীর মত আপন আর কেউ হয় না। আমাদের সুখ-দুঃখে, আপদে-বিপদে তারাই প্রথম এগিয়ে আসে। কোন বিপদ হলে, অসুখ হলে তারা সেবা করেন, যত্ন নেন। বিবাহ-সাদী বা যে কোন অনুষ্ঠানে তারা সাহায্য-সহযোগিতা করেন। অতএব, প্রতিবেশীর হক পালন করা সবারই কর্তব্য।

-অধ্যাপক এনায়েত আলী বিশ্বাস
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template