السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

সিয়াম সাধনা

| comments

মাহে রমজানের রোজা হলো গুনাহ মাফ করার, মাগফেরাত লাভের তথা চির শান্তি, চির মুক্তি লাভের একটি সুনিশ্চিত ব্যবস্থা, একটি নির্ভরযোগ্য সুযোগ। প্রিয় নবী করিম (স.) এরশাদ করেছেন মিথ্যা এবং পরনিন্দা রোজার গুণগত মানকে নষ্ট করে দেয়। অতএব রোজার হেফাজত করতে হবে মিথ্যা, গীবত (পরনিন্দা) অন্যায় অশ্লীলতা প্রভৃতি পাপাচারকে বর্জনের মাধ্যমে।

মাহে রমজানে আল্লাহর হেদায়াত, মাগফেরাত ও রহমত লাভের জন্য আমাদেরকে সর্বদা সচেষ্ট হতে হবে। ফজিলতের দিক থেকে আলেমগণ রমজান মাসকে তিনটি অংশে বিভক্ত করেছেন। রমজানের প্রথম অংশ রহমত অর্থাৎ এই অংশ আল্লাহ নিয়ামত ও পুরস্কার তার সেই সকল বান্দাদের সুরা ইব্রাহিমের ৭ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এরশাদ করেছেন “তোমরা শোকর আদায় করলে অবশ্যই আমি নেয়ামত ও পুরস্কার বাড়িয়ে দিব”। অর্থাৎ হে আল্লাহ আমরা আপনার রহমত বেশী বেশী করে চাই। রমজান মাসের মাঝের দশদিন মাগফেরাতের অর্থাৎ গুনাহমাফের সময়। দয়াময় প্রভু তার বান্দাদের প্রতি সদয় হয়ে রোজার প্রতিদান স্বরূপ ক্ষমা করেন। অতএব আমাদের সেই সুযোগ গ্রহণ করে এস্তেগফার অর্থাৎ তওবা বা কৃত অন্যায়ের জন্য আল্লাহর দরবারে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে বেশী বেশী করে তওবা করতে হবে ও ভবিষ্যতে এমন অন্যায় না করার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করতে হবে। বেশী করে পড়বো “আলাহুম্মা ইন্নাকা আ’ফুউন তুহিব্বুল আ’ফওয়া ফা’ফুআন্নি” অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে অপনি ভালবাসেন। তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।

তাছাড়া “আসতাগ ফিরুল্লাহ” অর্থাৎ আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আলাহর নিকট বেশী বেশী করে পড়তে হবে এবং অন্তর থেকে এর অর্থের প্রতি ধ্যান রেখে পড়তে হবে।

রমজানের শেষ দশদিন নাজাতের অর্থাৎ দোজখ ও তার আগুন থেকে পরিত্রাণ বা মুক্তি লাভের সুযোগ। আর তাই আমরা দোজখ ও এর বীভৎস আগুন থেকে পানাহ চাইবো ও বেহেশত কামনা করবো। অতএব, রমজানে বেশী বেশী করে জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করা ও কোরআন তেলাওয়াত, এস্তেগফার, দরুদ ও নফল এবাদত করা উচিত। রমজান মাসে আল্লাহর স্মরণকারী ব্যক্তি ক্ষমাপ্রাপ্ত হয় এবং এই মাসে আল্লাহর নিকট দোয়াকারী ব্যক্তি ব্যর্থ হয় না। নবী (স.) এরশাদ করেছেন “রোজাদার ইফতারের সময়ে যে দোয়া করে, আল্লাহ পাক তা কবুল করেন। তাই প্রতিদিন বিশেষ করে ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে দোয়া করা রোজাদারের কর্তব্য। আল্লাহ পাক বলেছেন, “রোজা আমার জন্য আর আমি এর প্রতিদান দিব।” অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভই হবে এর সত্যিকার প্রতিদান যা রোজদার লাভ করবে।

দুর্ভাগা সেই ব্যক্তি যে রোজা রেখেও তার ভেতরের কু-প্রবৃত্তিকে দমনে ব্যর্থ হলো ও অন্যায় অবিচারে লিপ্ত থাকলো তার রোজার সাধনা ব্যর্থ হলো এবং উদ্দেশ্য বিনষ্ট হলো। প্রিয় নবী (স.) এরশাদ করেছেন যে রোজাদার রোজা রেখে মিথ্যা কথা ও অন্যায় পাপাচার থেকে বিরত থাকে না তার রোজা আল্লাহ পাকের কোন প্রয়োজন নেই। আর তাই আমাদের সকলের প্রচেষ্টা থাকবে পবিত্র রমজান মাসে আমরা আমাদের ভিতরের কু-প্রবৃত্তিকে দমনে সচেষ্ট হই। আমরা জানি না আগামী রমজান আমাদের ভাগ্যে আসবে কিনা। তাই এই রমজানকে জীবনের শেষ রমজান মনে করে রমজানের পরিপূর্ণ ফায়দা অর্জনে সচেষ্ট হই। যাবতীয় অকল্যাণকর কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করে আল্লাহ পাকের অনন্ত অসীম রহমতের যোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারি এবং এ উদ্দেশ্যেই যেন আমরা আমাদের রোজাব্রত পালন করতে পারি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনে সফল হতে পারি। -আমীন
**এ্যাডভোকেট খালেদা সিদ্দিকা**
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template