السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

মৌলবাদ কী এবং মৌলবাদী কে ?-ডা: জাকির নায়েক

| comments

মিডিয়া এখন মুসলিমদেরকে বলে মৌলবাদী। এই মৌলবাদী শব্দটির অর্থ কী ? মৌলবাদী শব্দের অর্থ হলো যেকোন নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর মূলনীতিগুলো মেনে চলা। যেমন ধরুন, যদি কোন লোক সে হতে চায় একজন বিজ্ঞানী, তাহলে তাকে বিজ্ঞানের মূলনীতিগুলো মেনে চলতে হবে। যদি সেই লোক বিজ্ঞানের বিষয়ে মৌলবাদী না হয়, সে তাহলে ভাল বিজ্ঞানী হতে পারবে না। যদি একজন লোক গণিতজ্ঞ হতে চান, তাহলে তাকে গণিতের মূলনীতিগুলো অনুসরণ করতে হবে। যদি সে লোক গণিতের সব মূলনীতি মেনে না চলে তাহলে সে ভালো গনিতবিদ হতে পারবে না । আপনি সব মৌলবাদীকেই এক কাঠিতে মাপতে পারবেন না যে তারা সবাই ভাল বা সবাই খারাপ।

মৌলবাদীরা যে যে ক্ষেত্রে মৌলবাদী, সেটা দেখে তারপর আপনার বিচার করতে হবে। যেমন ধরুন, একজন মৌলবাদী ডাকাত তার কাজ ডাকাতি করা। সে সমাজের জন্য ক্ষতিকর এবং অন্যদিকে একজন লোক মৌলবাদী ডাক্তার যে লোক হাজারও মানুষের জীবন বাঁচায়। সে সমাজের জন্য উপকারী, সব মৌলবাদীকেই এক মাপকাঠিতে মাপতে পারবেন না। আপনাকে দেখতে হবে যে, কোন ক্ষেত্রে মৌলবাদী। তারপর বলবেন সে ভাল না খারাপ। আমি আমার নিজের কথা বলতে পারি। আমি একজন মুসলিম এবং আমি একজন মৌলবাদী মুসলিম হিসেবে গর্বিত। কারণ আমি সব সময় ইসলামের মূলনীতিগুলো মেনে চলার চেষ্টা করি। আর আমি জানি যে, ইসলাম ধর্মে এমন কোন মূলনীতি নেই যা সামগ্রিকভাবে মানবতার বিরুদ্ধে যায়। ইসলাম ধর্মের বিছু মূলনীতি আছে, সেগুলোকে অমুসলিমরা মনে করে মানবতার বিরুদ্ধে। কিন্তু আপনি যদি সেই নীতিগুলোকে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলেন, আর বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলেন, এমন একজনও নিরপেক্ষ লোকও পাবেন না, যে লোক ইসলাম ধর্মের একটিমাত্র মূলনীতি খুঁজে বের করবে, যেটি সামগ্রিকভাবে মানবতার বিরুদ্ধে যায়। এজন্য আমি একজন মৌলবাদী মুসলিম হিসেবে গর্বিত।

ওয়েবস্টার ডিকশনারী পড়লে সেখানে দেখতে পাবেন এই মৌলবাদী শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল এজন প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টানদের বুঝাতে। আমেরিকাতে সেটি ছিল বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। এর আগে খ্রিস্টান চার্চ বিশ্বাস করতো শুধু বাইবেলের কথাগুলো ঈশ্বর প্রদত্ত। এই প্রোটেস্ট্যান্টরা বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে আমেরিকাতে প্রতিবাদ করেছিল এই বাইবেলের আদেশগুলোই শুধু নয় বাইবেলে প্রত্যেকটি শব্দ এবং প্রত্যেকটি অক্ষরই এসেছে ঈশ্বরের কাছ থেকে। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে যে বাইবেলের কথাগুলো ঈশ্বরের প্রদত্ত এই আন্দোলনটি ভাল আন্দোলন এবং অন্যদিকে বলা হয়েছে যে মৌলবাদী হলো একজন ব্যক্তি , যে ধর্মের প্রাচীন নিয়মগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করে, বিশেষভাবে ইসলামে এই কথাটি এখন জুড়ে দেয়া হয়েছে। যখনি আপনি মৌলবাদী কথাটি শুনবেন। আপনি কোন মুসলিমের কথা ভাববেন। সে চরমপন্থী, সে সন্ত্রাসী, মিডিয়া বলে বেড়ায় যে মুসলিমরা চরমপন্থী।

আমি তা স্বীকার করবো যে আমি চরমপন্থী, চরমভাবে দয়ালু, চরমভাবে ক্ষমাশীল, চরমভাবে সৎ, চরমভাবে ন্যায়বান। তবে কোন সমস্যা নেই আমি হই চরম দয়ালু, চরম ন্যায়বান, চরম সৎ। অসুবিধা কোথায় ? আপনারা কেউ কি বলতে পারবেন যে, চরমভাবে সৎ হওয়াটা খারাপ? এমনভাবে কেউ কি আমাকে বলতে পারবে যে চরমভাবে ন্যায়বান হওয়া খারাপ দিক? কোরআন বলছে তোমরা চরম ন্যায়বান হও। আমরাতো আংশিকভাবে সৎ হবো না। যে লোক আমার বন্ধু তার কাছে সৎ থাকবো, আর যে আমার শত্রু তার কাছে সৎ থাকবো না।

পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারার ২৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, ইসলামে প্রবেশ করো সর্বাত্মকভাবে। তাহলে চরমপন্থী হতে অসুবিধা কোথায় ? কিন্তু আমাদের চরমপন্থী হতে হবে সঠিক নিয়মে। আমরা অন্যায় বা ভুল পথে চরমপন্থী হবো না। আমরা দয়া মায়াহীন হবো না। আমরা নিষ্ঠুর হবো না। আমরা চরমপন্থী হবো সঠিক উপায়ে এবং পবিত্র কোরআনও আমাদের সে কথাই বলছে।
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template