মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের হাতে লেখা কোরআন শরিফ
সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে সংরক্ষিত আছে মোগল আমলের নিদর্শন এ দুর্লভ কোরআন শরিফটি। প্রতিদিন দেশি-বিদেশি বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী মোগল সম্রাটের হাতে লেখা কোরআন শরিফটি দেখতে মুসলিম সাহিত্য সংসদে আসেন।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ সূত্রে জানা যায়, সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হেমু গ্রামের বিশিষ্ট দানবীর ও ব্যবসায়ী মৌলভি খান সাহেব আবদুল করিম এ কোরআন শরিফটি মুসলিম সাহিত্য সংসদে দান করেন। এ কোরআন শরিফটি সংগ্রহে রয়েছে চমকপ্রদ এক কাহিনী। মৌলভি খান সাহেব আবদুল করিম মুম্বাই শহরে আগর-আতরের ব্যবসা করতেন। সেসময় মৌলভি সাহেবের সঙ্গে পরিচয় হয় নেপালি এক ব্যবসায়ীর। সে নেপালির সংগ্রহে ছিল মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের হাতে লেখা একটি কোরআন শরিফ। নেপালি দুর্লভ এ পবিত্র গ্রন্থটি কাশ্মির থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। মৌলভি খান সাহেব আবদুল করিম মোগল সৈন্যদের যুদ্ধ পোশাক ও ঢালের বিনিময়ে নেপালি ব্যাবসায়ীর কাছ থেকে ওই কোরআন শরিফটি ১৯৪৬ সালে সংগ্রহ করেন। পরে তিনি কোরআন শরিফটি নিজ বাড়ি সিলেটের জৈন্তাপুরের হেমু গ্রামে নিয়ে আসেন। নিয়মিত মৌলভি খান সাহেব আবদুল করিম কোরআন শরিফটি তেলাওয়াত করতেন বলে জানা যায়। পরে তিনি ১৯৪৯ সালে সংরক্ষণের প্রয়োজনে ে দুর্লভ কোরআন শরিফটি সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের তৎকালীন সম্পাদক নুরুল হকের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে দান করেন। সেই থেকে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের হাতে লেখা কোরআন শরিফটি কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে সংরক্ষিত আছে। সাহিত্য সংসদের পড়ার কক্ষে কাচঘেরা একটি সুদৃশ্য বাক্সে বর্তমানে দুর্লভ পবিত্র ধর্মগ্রন্থটি রয়েছে। সম্রাটের হাতে লেখা এ পবিত্র গ্রন্থে রয়েছে চমৎকার নকশা আঁকা। সে সঙ্গে সম্রাট সংক্ষিপ্তভাবে প্রতিটি আয়াতের তফসির করেছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী বই সংগ্রহের জন্য আসেন এ মুসলিম সাহিত্য সংসদে। দেশি-বিদেশি বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী আসেন মোগল সম্রাটের হাতে লেখা কোরআন শরিফটি দেখতে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, মুসলিম সাহিত্য সংসদে সংরক্ষিত মোগল সম্রাটের হাতে লেখা কোরআন শরিফটি সবারই নজর কাড়ছে। মোগল আমলের নিদর্শন কোরআন শরিফ সংরক্ষণে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সভাপতি রাগীব হোসেন চৌধুরী যায়যায়দিনকে বলেন, সম্রাটের হাতে লেখা কোরআন শরিফের বাংলাদেশে একমাত্র কপি এটি। মোগল আমলের দুর্লভ নিদর্শন বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংরক্ষণের জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।�
Post a Comment