السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

একটি ছেলে ও তিনটি প্রশ্ন

| comments (1)

অনেক বছর আগে, তাবেয়ীনদের সময়ে (সাহাবীদের পরের সময়ে). সেই সময়ে বাগদাদ ছিল ইসলামের এক বিখ্যাত শহর. ইসলামিক সাম্রাজ্যের রাজধানী. কারণ বিখ্যাত সব আলেম এখানে বসবাস করতেন. এটি ছিল ইসলামিক জ্ঞানের কেন্দ্র. একদিন রোমের রাজা একজন দূতকে মুসলিমদের উদ্দ্যেশে তিনটি প্রশ্নসহ পাঠালেন; দূত শহরে এসে খলিফাকে জানালেন যে সে রোমের রাজার কাছ থেকে তিনটি প্রশ্ন এনেছেন মুসলিমদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন তার উত্তর দেওয়ার জন্য. খলিফা সকল আলেমদের একত্র হতে বললেন এবং রোমান দূত একটি উচু স্থানে দাড়ালেন এবং বললেন,আমি এসেছি তিনটি প্রশ্ন নিয়ে যদি আপনারা এর উত্তর দিতে পারেন আমি এ স্থান ত্যাগ করব প্রচুর সম্পদ রেখে যা আমাকে রোমের রাজা সংগে দিয়ে দিয়েছেন. প্রশ্নগুলো হল,


  • আল্লাহর আগে কি ছিল?

  • আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আছেন?

  • এই মুহুর্তে আল্লাহ কোন কাজে নিয়োজিত আছেন?
বাই চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলেন; এর মধ্যে এক আলেমের পুত্র তার বাবাকে বলল, বাবা আমি এ প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে পারব. ছেলেটি খলিফার কাছে এ প্রশ্নগুলির উত্তর দেবার জন্য অনুমতি চাইল; খলিফা তাকে অনুমতি দিলেন. প্রথম প্রশ্নের জবাবে ছেলেটি দূতকে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি গুণতে জানেন?


সে বলল, হ্যা. তাহলে ১০ থেকে উল্টো দিকে গুনুন. রোমান গুনছে,১০,৯,৮,….১ পর্যন্ত গিয়ে সে গুনা থামাল.
ছেলেটি জিজ্ঞেস করল, ১-এর আগে কি?
১-এর আগে তো কিছুই নেই, জবাবে বলল রোমান.
ঠিক আছে গাণিতিক একের আগে যদি কিছুই না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে আশা করেন কি থাকবে এই ‘এক’-এর আগে যা নিশ্চিত সত্য,শাশ্বত,চিরস্থায়ী,সুস্পষ্ট. ছেলেটির স্পষ্ট উত্তরে লোকটি হতবিম্বল হয়ে গেল কিছু অস্বীকার করতে পারল না.
এরপর সে জিজ্ঞেস করল, তাহলে এখন বল, আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আছেন?
বালকটি বলল, একটা মোমবাতি আনেন তাতে আগুন জ্বালান; মোমবাতি জ্বালানো হল; বালকটি দূতকে জিজ্ঞেস করল, এখন বলুন আগুনের শিখা কোন দিকে মুখ করে আছে?
সে বলল এটাতো চতুর্দিকেই আলো ছড়াচ্ছে; এটা কোন এক দিকে নির্দিষ্ট নেই.
তখন ছেলেটি বলল, যদি এই বস্তু চতুর্দিকেই আলো ছড়াতে পারে; তাহলে আপনি কিভাবে এরকম অনুমান করতে পারেন আল্লাহ সম্পর্কে যিনি আকাশ ও পৃথিবীর অধিপতি; সকল আলোর আলো; আল্লাহ সকল দিকে যেকোন সময় মুখ করে থাকেন.

রোমান দূত বোকা বনে গেল.
তিনি অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হলেন এতটুকু একটি ছেলে তার সব প্রশ্নের এত সাবলীলভাবে উত্তর দিচ্ছে যে তার যুক্তি-প্রমাণের কাছে সে কোনরুপ দ্বিমত পোষণ করতে পারছে না. তাই সে বেপরোয়াভাবে তার শেষ প্রশ্নটি করতে উদ্বত হল. কিন্তু প্রশ্ন করার আগে


ছেলেটি বলল, থামুন এখানে একমাত্র আপনি শুধু প্রশ্ন করছেন আর একমাত্র আমি সে প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি;এটা তখনই স্বচ্ছ হবে যদি আপনি উপর থেকে আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানে আসবেন আর আমি আপনার জায়গায় যাই যাতে উত্তরগুলো প্রশ্নগুলোর মত সবাই স্পষ্ট শুনতে পারে.
এ আহবান রোমান দুতের যুক্তিসন্মত মনে হল; তাই সে উপর থেকে নীচে নেমে এল ছেলেটি উচু স্থানে দাড়াল; তখন দূত কয়েকবার জোরে জোরে তার শেষ প্রশ্নটি করল, বল এখন আল্লাহ কি করছেন?


ছেলেটি বলল, এই মুহুর্তে যখন আল্লাহ কোন উচু জায়গায় এক মিথ্যাবাদী খুজে পান, তখন তিনি তাকে নীচে নামিয়ে আনেন; এবং যে আল্লাহর একত্ব বিশ্বাস করে তিনি তাকে উপরে উঠান ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত করেন; প্রতিক্ষণ আল্লাহ মহাবিশ্বময় শক্তির অনুশীলন করেন. (আল কুরআন-৫৫;২৯)


রোমান দুতের আর কিছু বলার থাকল না সেই স্থান ত্যাগ করা ছাড়া. এই ছেলেটি পরবর্তীতে বড় হয়ে ইসলামের এক মহান জ্ঞানী পন্ডিত হিসেবে আবির্ভূত হন; তার নাম ইমাম আবু হানিফা; আল্লাহ তার সহায় হোন.আমীন

Share this article :

+ comments + 1 comments

Anonymous
May 12, 2011 at 6:40 AM

wonderful. I want to share this post in my fb. I will quote your name and blog

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template