السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

দোয়া-ই-কুমাইল: ইতিবৃত্ত ও ফজিলত

| comments

কুমাইল ইবনে জিয়াদ নাখাঈ ছিলেন আমিরুল মোমিনীন হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (আঃ) এর একজন ঘনিষ্ঠ সহচর। এই অসাধারণ দোয়াটি প্রথম উচ্চারিত হয়েছিল হযরত আলী (আঃ) এর সমধুর অথচ যন্ত্রণাকাতর কণ্ঠে। আল্লামা মজলিসী (রহঃ) এর বর্ণনা অনুসারে বসরার মসজিদের যে মজলিসে হযরত আলী (আঃ) তাঁর ভাষণে ১৫ই শাবান রাতের তাৎপর্য সম্পর্কে বলছিলেন, সে মজলিসে উপস্থিত ছিলেন কুমাইল। হযরত আলী (আঃ) বলেছিলেন, " যে ব্যক্তি এই রাত জেগে এবাদত করবে এবং নবী খিজিরের দোয়া পড়বে নিঃসন্দেহে ঐ ব্যক্তির দোয়া কবুল হবে। "



মজলিস শেষে কুমাইল হযরত আলীর ঘরে এসে তাঁকে হযরত খিজিরের দোয়া শিখিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। হযরত আলী (আঃ) কুমাইলকে বসিয়ে দোয়াটি আবৃত্তি করেন এবং সেটা লিখে মুখস্থ করে রাখার নির্দেশ দেন।

তারপর হযরত আলী কুমাইলকে পরামর্শ দিলেন, প্রতি শুক্রবারের শুরুতে (অর্থাৎ আগের রাতে ) একবার করে কিংবা অন্ততঃ বছরে একবার এই দোয়াটি পড়তে যাতে করে "আল্লাহ তা'লা শত্রুর অনিষ্ট হতে এবং মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র হতে রক্ষা করেন।" তিনি আরও বলেন, হে কুমাইল! তোমার সাহচর্য এবং উপলব্ধির সম্মানে আমি এই দোয়াটি তোমার হেফাজতে উৎসর্গ করলাম।"







বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

আল্লাহুমা সাল্লি আ'লা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মদ।







اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْ‏ءٍ

হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আকুতি জানাই তোমার ‘রহমত'-এর উসিলায় যা সমস্ত কিছুকে পরিবৃত করে রেখেছে।

وَ بِقُوَّتِكَ الَّتِي قَهَرْتَ بِهَا كُلَّ شَيْ‏ءٍ

আর তোমার পরাক্রমের উসিলায় যা দিয়ে তুমি সমস্ত কিছুকে পদানত করো।

وَ خَضَعَ لَهَا كُلُّ شَيْ‏ءٍ وَ ذَلَّ لَهَا كُلُّ شَيْ‏ءٍ

এবং যার কাছে সমস্ত বস্তুনিচয় আনত হয় ও আনুগত্য প্রদর্শন করে।

وَ بِجَبَرُوتِكَ الَّتِي غَلَبْتَ بِهَا كُلَّ شَيْ‏ءٍ

এবং তোমার প্রতাপের উসিলায় যা দিয়ে তুমি সমস্ত কিছুকে বিজিত করেছো।

وَ بِعِزَّتِكَ الَّتِي لا يَقُومُ لَهَا شَيْ‏ءٌ

এবং তোমার মহামর্যাদার উসিলায় যার সম্মুখে কোন কিছুই দাঁড়াতে পারে না।

وَ بِعَظَمَتِكَ الَّتِي مَلَأَتْ كُلَّ شَيْ‏ءٍ

এবং তোমার অপার মহিমার উসিলায় যা সমস্ত কিছুর উপর প্রাধান্য বিস্তার করে আছে।

وَ بِسُلْطَانِكَ الَّذِي عَلا كُلَّ شَيْ‏ءٍ

এবং তোমার শাসনের উসিলায় যা সমস্ত কিছুর উপর কর্তৃত্বশীল।

وَ بِوَجْهِكَ الْبَاقِي بَعْدَ فَنَاءِ كُلِّ شَيْ‏ءٍ

এবং তোমার আপন সত্তার উসিলায় যা সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে যাবার পরও স্থায়ী থাকবে।

وَ بِأَسْمَائِكَ الَّتِي مَلَأَتْ [غَلَبَتْ‏] أَرْكَانَ كُلِّ شَيْ‏ءٍ

এবং তোমার নামসমূহের উসিলায় যা সমস্ত কিছুর উপর তোমার ক্ষমতা প্রকাশ করে।

وَ بِعِلْمِكَ الَّذِي أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْ‏ءٍ

এবং তোমার মহাজ্ঞানের উসিলায় যা সৃষ্টিজগতকে পরিবৃত করে রেখেছে।

وَ بِنُورِ وَجْهِكَ الَّذِي أَضَاءَ لَهُ كُلُّ شَيْ‏ء

এবং তোমার পবিত্র সত্তার নূরের উসিলায় যা সমস্ত কিছুকে আলোকিত করেছে।

يَا نُورُ يَا قُدُّوسُ يَا أَوَّلَ الْأَوَّلِينَ وَ يَا آخِرَ الْآخِرِينَ

হে নুর! হে পবিত্রময়! হে তুমি যে অনাদিকাল হতে বিরাজমান। হে তুমি যিনি সবকিছুর পরিসমাপ্তি।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيَ الذُّنُوبَ الَّتِي تَهْتِكُ الْعِصَم

হে আল্লাহ! আমার ঐ সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দাও যা (গোনাহ থেকে) সংযমের বাঁধ ভেঙ্গে দেয়।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيَ الذُّنُوبَ الَّتِي تُنْزِلُ النِّقَمَ

হে আল্লাহ! আমার ঐ সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দাও যা দুর্যোগ ডেকে আনে।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيَ الذُّنُوبَ الَّتِي تُغَيِّرُ النِّعَمَ

হে আল্লাহ! আমার ঐ সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দাও যা তোমার নেয়ামতসমূহকে (গজবে) পরিবর্তন করে দেয়।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيَ الذُّنُوبَ الَّتِي تَحْبِسُ الدُّعَاءَ

হে আল্লাহ! আমার ঐ সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দাও যা দোয়া কবুল হওয়ার পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيَ الذُّنُوبَ الَّتِي تُنْزِلُ الْبَلاءَ

হে আল্লাহ! আমার ঐ সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দাও যা বিপদ (বা কষ্ট) ডেকে আনে।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي كُلَّ ذَنْبٍ أَذْنَبْتُهُ

হে আল্লাহ! আমি যত গোনাহ করেছি সব ক্ষমা করে দাও।

وَ كُلَّ خَطِيئَةٍ أَخْطَأْتُهَا

এবং ভুল বশত: করা সকল ত্রুটি ক্ষমা করে দাও।

اللَّهُمَّ إِنِّي أَتَقَرَّبُ إِلَيْكَ بِذِكْرِكَ

হে আল্লাহ! আমি তোমাকে স্মরণের (জিক্‌র) মাধ্যমে তোমার নৈকট্য লাভের সাধনা করি।

وَ أَسْتَشْفِعُ بِكَ إِلَى نَفْسِكَ

আমি তোমাকেই তোমার কাছে শাফায়াতের জন্য উপস্থিত করছি।

وَ أَسْأَلُكَ بِجُودِكَ أَنْ تُدْنِيَنِي مِنْ قُرْبِكَ

এবং আমি তোমার অনুগ্রহ নিয়ে তোমার কাছেই প্রার্থনা করছি আমাকে তোমার নৈকট্যেরও নিকটবর্তী করে নাও।

وَ أَنْ تُوزِعَنِي شُكْرَكَ وَ أَنْ تُلْهِمَنِي ذِكْرَكَ

এবং তোমাকে কিভাবে কৃতজ্ঞতা জানাবো আমাকে শিখিয়ে দাও এবং তোমার প্রতি মনোযোগ ও স্মরণকে আমার অন্তরে উদ্ভাসিত করো।

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ سُؤَالَ خَاضِعٍ مُتَذَلِّلٍ خَاشِعٍ

হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে নিবেদন জানাই পূর্ণ আনুগত্যে, বিনয়াবনত চিত্তে ও ভীত-বিহ্বল অন্তরে ।

أَنْ تُسَامِحَنِي وَ تَرْحَمَنِي وَ تَجْعَلَنِي بِقِسْمِكَ رَاضِيا قَانِعا

যেন আমার প্রতি তুমি ক্ষমাশীল ও দয়ার্দ্র হও এবং তোমার দেয়া বরাদ্দে খুশী ও পরিতৃপ্ত রাখো।

وَ فِي جَمِيعِ الْأَحْوَالِ مُتَوَاضِعا

এবং আমাকে যে কোন পরিস্থিতিতে বিনম্র ও বিনয়ী রাখো।

اللَّهُمَّ وَ أَسْأَلُكَ سُؤَالَ مَنِ اشْتَدَّتْ فَاقَتُهُ

হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা জানাই এমন এক ব্যক্তির মতো যে চরম সংকটে নিপতিত হয়েছে।

وَ أَنْزَلَ بِكَ عِنْدَ الشَّدَائِدِ حَاجَتَهُ

এবং একমাত্র তোমার দরবারে তার যন্ত্রণা নিবারণের জন্য ভিক্ষা চাচ্ছে।

وَ عَظُمَ فِيمَا عِنْدَكَ رَغْبَتُهُ

এবং তোমার কাছে যে অনন্তকালীন নেয়ামত আছে তা তার আশাকে বহুগুণ বর্ধিত করেছে।

اللَّهُمَّ عَظُمَ سُلْطَانُكَ وَ عَلا مَكَانُكَ وَ خَفِيَ مَكْرُكَ

হে আল্লাহ! বিশাল তোমার সাম্রাজ্য এবং মহিমান্বিত তোমার মর্যাদা এবং তোমার পরিকল্পনা দৃশ্যাতীত।

وَ ظَهَرَ أَمْرُكَ وَ غَلَبَ قَهْرُكَ وَ جَرَتْ قُدْرَتُكَ

অস্তিত্বজগতে তোমার ক্ষমতা স্পষ্ট, তোমার শক্তি সবকিছুর উপর বিজয়ী, তোমার কর্তৃত্ব সর্বব্যাপী।

وَ لا يُمْكِنُ الْفِرَارُ مِنْ حُكُومَتِكَ

এবং অসম্ভব তোমার সাম্রাজ্য থেকে পলায়ন।

اللَّهُمَّ لا أَجِدُ لِذُنُوبِي غَافِرا وَ لا لِقَبَائِحِي سَاتِرا

হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া আমার পাপ ক্ষমা করার কিংবা আমার ঘৃণ্য কাজগুলো গোপন করে রাখার আর কেউ নেই।

وَ لا لِشَيْ‏ءٍ مِنْ عَمَلِيَ الْقَبِيحِ بِالْحَسَنِ مُبَدِّلا غَيْرَكَ

এবং আমার মন্দ কর্মগুলোকে সদ্‌গুণে রূপান্তরিত করার জন্যেও তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই।

لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ سُبْحَانَكَ وَ بِحَمْدِكَ

তুমি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই তুমি অতিশয় পবিত্র এবং সমস্ত প্রশংসা তোমারই।

ظَلَمْتُ نَفْسِي وَ تَجَرَّأْتُ بِجَهْلِي

আমি আমার নিজের উপর জুলুম করেছি এবং আমার এ ধৃষ্টতা জন্মেছে আমার অজ্ঞতার কারণে ।

وَ سَكَنْتُ إِلَى قَدِيمِ ذِكْرِكَ لِي وَ مَنِّكَ عَلَيَّ

(পাপ করতে গিয়ে) আমি নির্ভর করেছিলাম আমার প্রতি তোমার অতীত দয়া এবং তোমার অনুগ্রহের উপর।

اللَّهُمَّ مَوْلايَ كَمْ مِنْ قَبِيحٍ سَتَرْتَهُ

হে আল্লাহ! আমার কত জঘন্য পাপকে তুমি গোপন করেছো।

وَ كَمْ مِنْ فَادِحٍ مِنَ الْبَلاءِ أَقَلْتَهُ [أَمَلْتَهُ‏]

এবং আমার কত কঠিন বিপদকে তুমি সহনীয় করে দিয়েছো।

وَ كَمْ مِنْ عِثَارٍ وَقَيْتَهُ وَ كَمْ مِنْ مَكْرُوهٍ دَفَعْتَهُ

এবং কত বিচ্যুতি হতে আমাকে তুমি রক্ষা করেছো, কত নোংরা কাজ হতে আমাকে দুরে রেখেছো।

وَ كَمْ مِنْ ثَنَاءٍ جَمِيلٍ لَسْتُ أَهْلا لَهُ نَشَرْتَهُ

এবং আমার অসংখ্য সুন্দর প্রশংসা তুমি চতুর্দিকে ছড়িয়েছো যার উপযুক্ত আমি ছিলাম না।

اللَّهُمَّ عَظُمَ بَلائِي وَ أَفْرَطَ بِي سُوءُ حَالِي وَ قَصُرَتْ [قَصَّرَتْ‏] بِي أَعْمَالِي

হে আল্লাহ! আমার যাতনা হয়েছে অসহনীয় এবং দুর্দশা অপরিমেয়, অপরাধপ্রবণতা তীব্র অথচ সৎকর্ম নগণ্য

أَعْمَالِي وَ قَعَدَتْ بِي أَغْلالِي وَ حَبَسَنِي عَنْ نَفْعِي بُعْدُ أَمَلِي [آمَالِي‏]

এবং [পার্থিব আসক্তির] শিকল আমাকে ধরাশায়ী করে রেখেছে। আর মিথ্যে আশার মরীচিকা আমাকে আমার কল্যাণ থেকে দুরে রেখেছে।

وَ خَدَعَتْنِي الدُّنْيَا بِغُرُورِهَا

এবং দুনিয়া তার মোহন মায়ায় আমাকে আবিষ্ট করেছে।

وَ نَفْسِي بِجِنَايَتِهَا [بِخِيَانَتِهَا] وَ مِطَالِي يَا سَيِّدِي

এবং আমার আপন সত্তা পরিণত হয়েছে বিশ্বাসঘাতকতা ও ছলনাপ্রবণতার শিকারে, হে আমার প্রভু!

فَأَسْأَلُكَ بِعِزَّتِكَ

তোমার মহত্ত্বের নামে আমি কাতর মিনতি জানাই।

أَنْ لا يَحْجُبَ عَنْكَ دُعَائِي سُوءُ عَمَلِي وَ فِعَالِي

আমার পাপ ও অপকর্মগুলো যেন আমার দোয়াকে তোমার দুয়ারে পৌঁছুতে বাধাগ্রস্ত না করে।

وَ لا تَفْضَحْنِي بِخَفِيِّ مَا اطَّلَعْتَ عَلَيْهِ مِنْ سِرِّي

এবং তুমি কিছুতেই তোমার জানা আমার গোপন বিষয়গুলো প্রকাশ করে দিয়ে আমাকে অপমানিত করো না ।

وَ لا تُعَاجِلْنِي بِالْعُقُوبَةِ عَلَى مَا عَمِلْتُهُ فِي خَلَوَاتِي مِنْ سُوءِ فِعْلِي

এবং সেসব গোপন অপকর্মের কারণে আমার শাস্তি ত্বরান্বিত করো না।

وَ إِسَاءَتِي وَ دَوَامِ تَفْرِيطِي وَ جَهَالَتِي

আমার ঐসব অপরাধ, পাপাচার, মহা অন্যায় ও অজ্ঞাতবশত: কর্মসমূহ।

وَ كَثْرَةِ شَهَوَاتِي وَ غَفْلَتِي

অতিরিক্ত লালসা ও গাফিলতির কারণে।

وَ كُنِ اللَّهُمَّ بِعِزَّتِكَ لِي فِي كُلِّ الْأَحْوَالِ [فِي الْأَحْوَالِ كُلِّهَا] رَءُوفا

হে আল্লাহ! আমি তোমার মহত্ত্বের উসিলায় তোমার কাছে নিবেদন জানাই সর্বাবস্থায় আমার প্রতি করুণাময় হতে।

وَ عَلَيَّ فِي جَمِيعِ الْأُمُورِ عَطُوفا

এবং প্রতিটি বিষয়ে আমার প্রতি সদয় দৃষ্টি দিতে।

إِلَهِي وَ رَبِّي مَنْ لِي غَيْرُكَ

হে আমার প্রভু! হে আমার প্রতিপালক! তুমি ছাড়া কি আর কেউ আছে

أَسْأَلُهُ كَشْفَ ضُرِّي وَ النَّظَرَ فِي أَمْرِي

যার কাছে আমি বিপদ মুক্তির আবেদন করতে কিংবা আমার সমস্যা অনুধাবনের প্রার্থনা জানাতে পারি ?

إِلَهِي وَ مَوْلايَ أَجْرَيْتَ عَلَيَّ حُكْما

হে আমার উপাস্য! হে আমার অভিভাবক! তুমি আমার (জীবনে চলার) জন্য বিধান নির্ধারণ করেছো

اتَّبَعْتُ فِيهِ هَوَى نَفْسِي

কিন্তু তার পরিবর্তে আমি আমার হীন কামনার দাসত্ব করেছি

وَ لَمْ أَحْتَرِسْ فِيهِ مِنْ تَزْيِينِ عَدُوِّي

এবং আমি শত্রুর প্ররোচনার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকিনি।

فَغَرَّنِي بِمَا أَهْوَى وَ أَسْعَدَهُ عَلَى ذَلِكَ الْقَضَاءُ

সে আমাকে নিরর্থক আশার মায়াজালে বেঁধে নিয়েছে যা আমাকে টেনে নিয়েছে অধঃপাতে এবং নিয়তি তাকে সহায়তা দিয়েছে এ কর্মে ।

فَتَجَاوَزْتُ بِمَا جَرَى عَلَيَّ مِنْ ذَلِكَ بَعْضَ [مِنْ نَقْضِ‏] حُدُودِكَ

এইভাবে আমি তোমার দেয়া ঐবিধানসমূহের কিছু কিছু বিষয়ে সীমালংঘন করেছি ।

وَ خَالَفْتُ بَعْضَ أَوَامِرِكَ

এবং তোমার কিছু কিছু আদেশ অমান্য করেছি ;

فَلَكَ الْحَمْدُ [الْحُجَّةُ] عَلَيَّ فِي جَمِيعِ ذَلِكَ

অতএব ঐ সমস্ত বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে তোমার (যথার্থ) অভিযোগ রয়েছে

وَ لا حُجَّةَ لِي فِيمَا جَرَى عَلَيَّ فِيهِ قَضَاؤُكَ

এবং আমার প্রতি তোমার রায়ের বিরুদ্ধে কোন অজুহাত আমার নেই

وَ أَلْزَمَنِي حُكْمُكَ وَ بَلاؤُكَ

তাই আমি (যথার্থভাবেই) তোমার বিচারের যোগ্য হয়েছি এবং শাস্তির উপযুক্ততা অর্জন করেছি ।

وَ قَدْ أَتَيْتُكَ يَا إِلَهِي بَعْدَ تَقْصِيرِي

এখন আমি অপরাধে অপরাধী হওয়ার পর তোমার দরবারে এসেছি, হে আমার প্রভু!

وَ إِسْرَافِي عَلَى نَفْسِي

আমি আমার উপর জুলুম করেছি।

مُعْتَذِرا نَادِما مُنْكَسِرا مُسْتَقِيلا مُسْتَغْفِرا مُنِيبا

ক্ষমাপ্রার্থী ও অনুতপ্ত হয়ে ভগ্ন হৃদয়ে নত হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করছি ।

مُقِرّا مُذْعِنا مُعْتَرِفا

তোমার কাছে প্রত্যাবর্তন করছি নতশিরে অপরাধ স্বীকার করে

لا أَجِدُ مَفَرّا مِمَّا كَانَ مِنِّي وَ لا مَفْزَعا

কেননা আমার কৃতকর্মের প্রতিফল ভোগ হতে মুক্তির কোন উপায় আমি দেখছি না । না কোন আশ্রয়স্থল দেখছি

أَتَوَجَّهُ إِلَيْهِ فِي أَمْرِي غَيْرَ قَبُولِكَ عُذْرِي

যেখানে আশ্রয় নেবো। একমাত্র তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না করো

وَ إِدْخَالِكَ إِيَّايَ فِي سَعَةِ [سَعَةٍ مِنْ‏] رَحْمَتِكَ

এবং তোমার অনন্ত করুণার রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি ব্যতিরেকে আমার কোন পথও নেই।

اللَّهُمَّ [إِلَهِي‏] فَاقْبَلْ عُذْرِي وَ ارْحَمْ شِدَّةَ ضُرِّي وَ فُكَّنِي مِنْ شَدِّ وَثَاقِي

হে আল্লাহ! আমার তওবা কবুল করো এবং আমার তীব্র যাতনার উপর দয়ার্দ্র হও এবং আমাকে আমার (পাপকাজের) ভারী শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করো।

يَا رَبِّ ارْحَمْ ضَعْفَ بَدَنِي وَ رِقَّةَ جِلْدِي وَ دِقَّةَ عَظْمِي

হে পালনকর্তা! আমার দুর্বল শরীরের উপর দয়ার্দ্র হও এবং আমার কোমল ত্বক ও ভঙ্গুর হাড়গুলোর উপর করুণা করো।

يَا مَنْ بَدَأَ خَلْقِي وَ ذِكْرِي وَ تَرْبِيَتِي وَ بِرِّي وَ تَغْذِيَتِي

যে তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো, আমাকে ব্যক্তিত্ব দিয়েছো এবং আমার সুষ্ঠ প্রতিপালন নিশ্চিত করেছো এবং আমাকে জীবিকা দিয়েছো

هَبْنِي لابْتِدَاءِ كَرَمِكَ وَ سَالِفِ بِرِّكَ بِي

দয়া করে আমার উপর তোমার সেই পরিমাণ রহমত ও বরকত বর্ষণ পুনরারম্ভ করো, যে পরিমাণ ছিলো আমার জীবনের সূচনালগ্নে ।

يَا إِلَهِي وَ سَيِّدِي وَ رَبِّي

হে আমার ইলাহ্‌! হে আমার মালিক! হে আমার প্রভু!

أَ تُرَاكَ مُعَذِّبِي بِنَارِكَ بَعْدَ تَوْحِيدِكَ

তুমি কি প্রজ্জ্বলিত অগ্নিতে আমাকে দগ্ধ হয়ে শাস্তি পেতে দেখবে যদিও আমি তোমার একত্বে বিশ্বাস স্থাপন করেছি?

وَ بَعْدَ مَا انْطَوَى عَلَيْهِ قَلْبِي مِنْ مَعْرِفَتِكَ

যদিও আমার অন্তর পরিপূর্ণ তোমার (পবিত্র) জ্ঞানে

وَ لَهِجَ بِهِ لِسَانِي مِنْ ذِكْرِكَ

এবং আমার জিহ্বা বারংবার তোমাকে যিকির করেছে

وَ اعْتَقَدَهُ ضَمِيرِي مِنْ حُبِّكَ

তোমার ভালবাসায় আমার অন্তর হয়েছে প্রেমার্ত ?

وَ بَعْدَ صِدْقِ اعْتِرَافِي

এবং যখন আমি তোমার কর্তৃত্বের কাছে একান্ত হৃদয়ে ভুল স্বীকার করেছি

وَ دُعَائِي خَاضِعا لِرُبُوبِيَّتِكَ

এবং বিনয়ের সাথে আকুল হৃদয়ে তোমাকে প্রতিপালক স্বীকার করেছি

هَيْهَاتَ أَنْتَ أَكْرَمُ مِنْ أَنْ تُضَيِّعَ مَنْ رَبَّيْتَهُ

না, যাকে তুমি নিজেই লালন-পালন করেছো তাকে ধ্বংস করা থেকে তুমি অনেক মহান

أَوْ تُبْعِدَ [تُبَعِّدَ] مَنْ أَدْنَيْتَهُ أَوْ تُشَرِّدَ مَنْ آوَيْتَهُ

কিংবা যাকে তুমি নিজেই রক্ষণাবেক্ষণ করেছো তাকে তোমার থেকে দুরে তাড়িয়ে দেয়া থেকে তুমি অনেক মহান

أَوْ تُسَلِّمَ إِلَى الْبَلاءِ مَنْ كَفَيْتَهُ وَ رَحِمْتَهُ

কিংবা যাকে তুমি আদর-যত্ম করেছো এবং যার প্রতি তুমি দয়ার্দ্র থেকেছো, তাকে যন্ত্রণার মাঝে ত্যাগ করে ফেলে রাখার মতো তুমি নও ।

وَ لَيْتَ شِعْرِي يَا سَيِّدِي وَ إِلَهِي وَ مَوْلايَ

হে আমার মালিক! আমার ইলাহ্‌ ! আমার প্রভু !

أَ تُسَلِّطُ النَّارَ عَلَى وُجُوهٍ خَرَّتْ لِعَظَمَتِكَ سَاجِدَةً

আমার জানতে ইচ্ছে করে তুমি কি ঐসব মুখকে অগ্নিতে প্রজ্জ্বলিত করবে যেসব মুখ তোমার মহত্ত্বের সম্মুখে সিজদাবনত হয়েছে

وَ عَلَى أَلْسُنٍ نَطَقَتْ بِتَوْحِيدِكَ صَادِقَةً

কিংবা ঐসব জিহ্বাকে যেগুলো একনিষ্ঠভাবে তোমার একত্ব ঘোষণা করেছে

وَ بِشُكْرِكَ مَادِحَةً وَ عَلَى قُلُوبٍ اعْتَرَفَتْ بِإِلَهِيَّتِكَ مُحَقِّقَةً

এবং সব সময় তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছে অথবা ঐ সব হৃদয়কে দগ্ধ-বিদগ্ধ করবে যেগুলো দৃঢ়তার সঙ্গে তোমার প্রভুত্বকে মেনে নিয়েছে

وَ عَلَى ضَمَائِرَ حَوَتْ مِنَ الْعِلْمِ بِكَ حَتَّى صَارَتْ خَاشِعَةً

কিংবা ঐ অন্তরসমূহ আগুনে ফেলবে, যেগুলো জ্ঞান ও পরিচিতির কারণে তোমার প্রতি অনুগত হয়েছে

وَ عَلَى جَوَارِحَ سَعَتْ إِلَى أَوْطَانِ تَعَبُّدِكَ طَائِعَةً

কিংবা ঐসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে প্রজ্জ্বলিত করবে যেগুলো তোমার ইবাদতের স্থানগুলোয় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আনুগত্যের জন্য যেতো

وَ أَشَارَتْ بِاسْتِغْفَارِكَ مُذْعِنَةً

এবং তোমার প্রতি আস্থা রেখে তোমার ক্ষমা ভিক্ষার কঠোর প্রয়াস চালিয়েছে ?

مَا هَكَذَا الظَّنُّ بِكَ

এ তোমার কাছ থেকে কিছুতেই আশা করা যায় না

وَ لا أُخْبِرْنَا بِفَضْلِكَ عَنْكَ يَا كَرِيمُ

কেননা তোমার থেকে এমন কোন বৈশিষ্ট্য আমরা দেখিনি হে দয়াবান ।

يَا رَبِّ وَ أَنْتَ تَعْلَمُ ضَعْفِي عَنْ قَلِيلٍ مِنْ بَلاءِ الدُّنْيَا وَ عُقُوبَاتِهَا

হে প্রতিপালক! তুমি তো জানো যে এ দুর্বলের জন্য এই দুনিয়ার সামান্য কষ্ট ও শাস্তিই কত অসহনীয়

وَ مَا يَجْرِي فِيهَا مِنَ الْمَكَارِهِ عَلَى أَهْلِهَا

আর সেখানে যা ঘটবে কি ভয়ানক অবস্থা হবে তার অধিবাসীদের উপর

عَلَى أَنَّ ذَلِكَ بَلاءٌ وَ مَكْرُوهٌ قَلِيلٌ مَكْثُهُ يَسِيرٌ بَقَاؤُهُ قَصِيرٌ مُدَّتُهُ

যদিও পৃথিবীর কষ্ট ও আযাব স্বল্পস্থায়ী সামান্য ও দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়

فَكَيْفَ احْتِمَالِي لِبَلاءِ الْآخِرَةِ وَ جَلِيلِ [حُلُولِ‏] وُقُوعِ الْمَكَارِهِ فِيهَا

তাহলে আমি কেমন করে পরকালের কষ্ট আর সেখানকার শাস্তি সইবো

وَ هُوَ بَلاءٌ تَطُولُ مُدَّتُهُ وَ يَدُومُ مَقَامُهُ

যে শাস্তির মেয়াদ দীর্ঘ, যেখানে অনন্তকাল অবস্থান করতে হবে।

وَ لا يُخَفَّفُ عَنْ أَهْلِهِ

যার অধিবাসীদের থেকে শাস্তি কমানো হবে না

لِأَنَّهُ لا يَكُونُ إِلا عَنْ غَضَبِكَ وَ انْتِقَامِكَ وَ سَخَطِكَ

কেননা এ শাস্তি একমাত্র তোমার ক্রোধ ও কঠোর ন্যায়বিচারের পরিণতি

وَ هَذَا مَا لا تَقُومُ لَهُ السَّمَاوَاتُ وَ الْأَرْضُ

যা আসমান ও জমিন সহ্য করতে অক্ষম?

يَا سَيِّدِي فَكَيْفَ لِي [بِي‏] وَ أَنَا عَبْدُكَ الضَّعِيفُ الذَّلِيلُ

হে প্রভু! তবে আমার কি হবে, যে আমি তোমার দুর্বল হীন বান্দা

الْحَقِيرُ الْمِسْكِينُ الْمُسْتَكِينُ يَا إِلَهِي وَ رَبِّي وَ سَيِّدِي وَ مَوْلايَ

ক্ষুদ্র, নগণ্য ও ম্রিয়মান দাসানুদাস? হে আমার উপাস্য! আমার মালিক! আমার প্রভু! আমার পালনকর্তা!

لِأَيِّ الْأُمُورِ إِلَيْكَ أَشْكُو

কোন্‌ বিষয়ে আমি তোমার কাছে অভিযোগ জানাবো

وَ لِمَا مِنْهَا أَضِجُّ وَ أَبْكِي

আর কোনটা নিয়ে আমি অশ্রু ঝরাবো, আর বিলাপ করবো

لِأَلِيمِ الْعَذَابِ وَ شِدَّتِهِ أَمْ لِطُولِ الْبَلاءِ وَ مُدَّتِهِ

শাস্তির যাতনা ও তার তীব্রতার জন্য নাকি শাস্তির মেয়াদের দীর্ঘতার জন্যে ?

فَلَئِنْ صَيَّرْتَنِي لِلْعُقُوبَاتِ مَعَ أَعْدَائِكَ

অতএব যদি তুমি আমাকে তোমার শত্রুদের সাথে শাস্তি দিতে নিয়ে যাও

وَ جَمَعْتَ بَيْنِي وَ بَيْنَ أَهْلِ بَلائِكَ

এবং তোমার আযাব ভোগকারী লোকদের সাথে আমাকেও একত্র করো

وَ فَرَّقْتَ بَيْنِي وَ بَيْنَ أَحِبَّائِكَ وَ أَوْلِيَائِكَ

আর তোমার প্রেমিক ও অলী-আওলীয়াদের কাছ থেকে আমাকে পৃথক করে নাও

فَهَبْنِي يَا إِلَهِي وَ سَيِّدِي وَ مَوْلايَ وَ رَبِّي

তাহলে হে আমার উপাস্য! হে আমার মালিক! হে আমার অভিভাবক! হে প্রতিপালক!

صَبَرْتُ عَلَى عَذَابِكَ فَكَيْفَ أَصْبِرُ عَلَى فِرَاقِكَ

আমি তোমার এ শাস্তি সয়ে নেবো, কিন্তু তোমার থেকে এ বিচ্ছিন্নতা আমি কীভাবে সহ্য করবো ?

وَ هَبْنِي [يَا إِلَهِي‏] صَبَرْتُ عَلَى حَرِّ نَارِكَ

কিংবা ধরা যাক আমি তোমার আগুনের প্রজ্জ্বলন সইতে পারলাম

فَكَيْفَ أَصْبِرُ عَنِ النَّظَرِ إِلَى كَرَامَتِكَ

কিন্তু কেমন করে আমি তোমার ক্ষমা ও দয়ার বঞ্চনা সয়ে নেবো?



أَمْ كَيْفَ أَسْكُنُ فِي النَّارِ وَ رَجَائِي عَفْوُك

কেমন করে আমি আগুনের মাঝে বসবাস করবো যখন তোমার ক্ষমার উপর ভরসা করে আমি আশায় বুক বেঁধেছি?

فَبِعِزَّتِكَ يَا سَيِّدِي وَ مَوْلايَ

হে আমার প্রভু! আমার অভিভাবক! তোমার মহামর্যাদার শপথ

أُقْسِمُ صَادِقا لَئِنْ تَرَكْتَنِي نَاطِقا

আমি বিশ্বস্ত অন্তরের শপথ করে বলছি, তুমি যদি দোজখের আগুনের মধ্যেও আমার বাক্‌শক্তি রক্ষা কর

لَأَضِجَّنَّ إِلَيْكَ بَيْنَ أَهْلِهَا ضَجِيجَ الْآمِلِينَ [الْآلِمِينَ‏

তাহলেও আমি সেখান থেকে একজন দৃঢ় আশাবাদীর মতো আশা নিয়েই তোমার কাছে কাতর আকুতি জানাতে থাকবো।

لَأَصْرُخَنَّ إِلَيْكَ صُرَاخَ الْمُسْتَصْرِخِينَ

আমি তোমার কাছে একজন সহায়হীনের মতোই সাহায্য প্রার্থনা করবো

وَ لَأَبْكِيَنَّ عَلَيْكَ بُكَاءَ الْفَاقِدِينَ

একজন নিঃস্ব ব্যক্তির মতোই আমি তোমার কাছে আকুল হয়ে কাঁদবো

وَ لَأُنَادِيَنَّكَ أَيْنَ كُنْتَ يَا وَلِيَّ الْمُؤْمِنِينَ

আর তোমাকে ডাক ছেড়ে বলবো, হে মু'মিনদের অভিভাবক তুমি কোথায় ?

يَا غَايَةَ آمَالِ الْعَارِفِينَ يَا غِيَاثَ الْمُسْتَغِيثِينَ

হে সাধকদের সাধনার চুড়ান্ত লক্ষ্য, হে সাহায্য প্রার্থীদের সাহায্যকারী

يَا حَبِيبَ قُلُوبِ الصَّادِقِينَ وَ يَا إِلَهَ الْعَالَمِينَ

হে সত্যপথিকদের প্রাণপ্রিয় প্রেমিক, হে জগতসমূহের প্রভু, কোথায় তুমি ?

أَ فَتُرَاكَ سُبْحَانَكَ يَا إِلَهِي

হে খোদা! তুমি সমস্তকিছু থেকে অতিশয় পবিত্র

وَ بِحَمْدِكَ تَسْمَعُ فِيهَا صَوْتَ عَبْدٍ مُسْلِمٍ سُجِنَ [يُسْجَنُ‏] فِيهَا بِمُخَالَفَتِهِ

আর সকল প্রশংসা একমাত্র তোমারই, তুমি কি একবারও ফিরে দেখবে না যে, একজন আত্মসমর্পণকারী দাস তার অবাধ্যতার কারণে দোযখের আগুনে বন্দী

وَ ذَاقَ طَعْمَ عَذَابِهَا بِمَعْصِيَتِهِ

এবং অন্যায় আচরণের কারণে এর শাস্তি ভোগ করছে

وَ حُبِسَ بَيْنَ أَطْبَاقِهَا بِجُرْمِهِ وَ جَرِيرَتِهِ

আর পাপ ও অপরাধের কারণে সে জাহান্নামের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে বন্দী হয়ে আছে

وَ هُوَ يَضِجُّ إِلَيْكَ ضَجِيجَ مُؤَمِّلٍ لِرَحْمَتِكَ

তোমার দয়ার উপর দৃঢ় আস্থা নিয়ে তোমার প্রতি সুতীব্র আবেদন জানাচ্ছে।

وَ يُنَادِيكَ بِلِسَانِ أَهْلِ تَوْحِيدِكَ

তোমার তাওহীদে দৃঢ় বিশ্বাসী ব্যক্তির মতো তোমাকে ডাকছে

وَ يَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِرُبُوبِيَّتِكَ يَا مَوْلايَ

এবং তোমার প্রভুত্বের প্রতি ভরসা করে তোমার প্রতি চেয়ে আছে, হে আমার অধিকর্তা!

فَكَيْفَ يَبْقَى فِي الْعَذَابِ وَ هُوَ يَرْجُو مَا سَلَفَ مِنْ حِلْمِكَ

তোমার অতীত ক্ষমা, অনুকম্পা ও রহমতের উপর পূর্ণ ভরসা রাখার পরও কেমন করে সেই বান্দা কঠিন আযাবের মাঝে নিমজ্জিত থাকবে ?

أَمْ كَيْفَ تُؤْلِمُهُ النَّارُ وَ هُوَ يَأْمُلُ فَضْلَكَ وَ رَحْمَتَكَ

কিংবা কেমন করে দোযখের আগুন তাকে কষ্ট দিবে যখন সে তোমার মহত্ব ও দয়ার প্রতি বুক বেঁধে আছে?

أَمْ كَيْفَ يُحْرِقُهُ لَهِيبُهَا وَ أَنْتَ تَسْمَعُ صَوْتَهُ

কিংবা কেমন করে দোযখের আগুনের লেলিহান শিখায় সে প্রজ্বলিত হবে অথচ তুমি তার আর্তনাদ শুনতে পাবে?

وَ تَرَى مَكَانَهُ أَمْ كَيْفَ يَشْتَمِلُ عَلَيْهِ زَفِيرُهَا

এবং আগুনের মধ্যে তাকে দেখতে পাবে তাহলে কিভাবে আগুনের শিখা তাকে গ্রাস করে নিবে?

وَ أَنْتَ تَعْلَمُ ضَعْفَهُ أَمْ كَيْفَ يَتَقَلْقَلُ بَيْنَ أَطْبَاقِهَا

অথচ তুমি তো জানো সে কি ভীষণ দুর্বল তাহলে কিভাবে সে দোযখের স্তরগুলোর চাপে নিষ্পিষ্ট হতে থাকবে?

وَ أَنْتَ تَعْلَمُ صِدْقَهُ أَمْ كَيْفَ تَزْجُرُهُ زَبَانِيَتُهَا

তুমি তো তার নিষ্ঠার কথা জানো তাহলে কেমন করে দোযখের প্রহরীরা তাকে কষ্ট দেবে

وَ هُوَ يُنَادِيكَ يَا رَبَّهْ

অথচ সে কেবলই ডাকছে ‘ইয়া রব্ব'! ‘ইয়া রব্ব'! বলে ?

أَمْ كَيْفَ يَرْجُو فَضْلَكَ فِي عِتْقِهِ مِنْهَا فَتَتْرُكُهُ [فَتَتْرُكَهُ‏] فِيهَا

কেমন করে তুমি তাকে ফেলে রাখবে (দোযখের মাঝে) যখন তার দৃঢ় বিশ্বাস যে, তোমার অপার করুণা তাকে এখান থেকে মুক্ত করবে?

هَيْهَاتَ مَا ذَلِكَ الظَّنُّ بِكَ

হায়! এমনটা তোমার কাছে কখনো আশা করা যায় না ।

وَ لا الْمَعْرُوفُ مِنْ فَضْلِكَ

তোমার করুণার রূপও এমনটা নয়

وَ لا مُشْبِهٌ لِمَا عَامَلْتَ بِهِ الْمُوَحِّدِينَ مِنْ بِرِّكَ وَ إِحْسَانِكَ

কিংবা তোমার একত্বে বিশ্বাসীদের প্রতি তুমি যে করুণা ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করো তার সাথেও এর কোন মিল নেই

فَبِالْيَقِينِ أَقْطَعُ لَوْ لا مَا حَكَمْتَ بِهِ مِنْ تَعْذِيبِ جَاحِدِيكَ

অতএব আমি নিশ্চিত হয়ে ঘোষণা করছি যে, যদি তুমি অবিশ্বাসীদের জন্য শাস্তি নির্ধারণ না করতে

وَ قَضَيْتَ بِهِ مِنْ إِخْلادِ مُعَانِدِيكَ

এবং তোমার শত্রুদের আবাস হিসাবে দোযখকে নির্ধারিত না করতে

لَجَعَلْتَ النَّارَ كُلَّهَا بَرْدا وَ سَلاما

তাহলে তুমি দোযখকে শীতল ও প্রশান্তিময় করে তুলতে

وَ مَا كَانَ [كَانَتْ‏] لِأَحَدٍ فِيهَا مَقَرّا وَ لا مُقَاما [مَقَاما]

এবং কোন মানুষকেই দোযখে থাকতে ও বসবাস করতে হতো না ;

لَكِنَّكَ تَقَدَّسَتْ أَسْمَاؤُكَ

অথচ পবিত্র তোমার নামসমূহ

أَقْسَمْتَ أَنْ تَمْلَأَهَا مِنَ الْكَافِرِينَ

তুমি শপথ করেছো যে অবিশ্বাসীদের দিয়ে দোযখ পূর্ণ করবে

مِنَ الْجِنَّةِ وَ النَّاسِ أَجْمَعِينَ

জ্বিন ও মানুষের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী

وَ أَنْ تُخَلِّدَ فِيهَا الْمُعَانِدِينَ

এবং একে তোমার বিরুদ্ধবাদীদের চিরস্থায়ী নিবাসে পরিণত করবে

وَ أَنْتَ جَلَّ ثَنَاؤُكَ قُلْتَ مُبْتَدِئا وَ تَطَوَّلْتَ بِالْإِنْعَامِ مُتَكَرِّما

আর মহিমান্বিত তোমার গুণাবলী তুমি নিজেই সূচনালগ্নে তোমার অপার অনুগ্রহে তুমি ঘোষণা করেছো, সমগ্র সৃষ্টিকে তুমি নেয়ামত ও করুণা দিয়েছো।

أَ فَمَنْ كَانَ مُؤْمِنا كَمَنْ كَانَ فَاسِقا لا يَسْتَوُونَ

একজন মুমিন আর একজন দুর্নীতিপরায়ণ মানুষ কি সমান? তারা সমান হতে পারে না

إِلَهِي وَ سَيِّدِي فَأَسْأَلُكَ بِالْقُدْرَةِ الَّتِي قَدَّرْتَهَا

হে আমার প্রভু ও অভিভাবক! তোমার কাছে আমি প্রার্থনা করছি তোমার ঐ শক্তির নামে যা সমগ্রবিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করে

وَ بِالْقَضِيَّةِ الَّتِي حَتَمْتَهَا وَ حَكَمْتَهَا

এবং তোমার চূড়ান্ত ও কার্যকরী শক্তির নামে

وَ غَلَبْتَ مَنْ عَلَيْهِ أَجْرَيْتَهَا

এবং যা দ্বারা তুমি সবকিছুর উপর সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর কর

أَنْ تَهَبَ لِي فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَ فِي هَذِهِ السَّاعَةِ

দয়া করে আমাকে এই রাতের এই প্রহরে ক্ষমা করে দাও

كُلَّ جُرْمٍ أَجْرَمْتُهُ وَ كُلَّ ذَنْبٍ أَذْنَبْتُهُ

আমি যেসব অপরাধে অপরাধী এবং যেসব পাপে পাপী হয়েছি

وَ كُلَّ قَبِيحٍ أَسْرَرْتُهُ وَ كُلَّ جَهْلٍ عَمِلْتُهُ

সেই সমস্ত ঘৃণ্য কাজের জন্য যা আমি গোপন রেখেছি, সেই সমস্ত প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অপকর্মের জন্য যা আমি করেছি

كَتَمْتُهُ أَوْ أَعْلَنْتُهُ أَخْفَيْتُهُ أَوْ أَظْهَرْتُهُ

অন্ধকারে কিংবা দিবালোকে এবং যা স্বীকার কিংবা অস্বীকার করেছি

وَ كُلَّ سَيِّئَةٍ أَمَرْتَ بِإِثْبَاتِهَا الْكِرَامَ الْكَاتِبِينَ

এবং সেই সকল মন্দ কাজের জন্য যা লিপিবদ্ধ হয়েছে সম্মানিত লিপিকারদের দ্বারা যাদের তুমি আদেশ করেছো

الَّذِينَ وَكَّلْتَهُمْ بِحِفْظِ مَا يَكُونُ مِنِّي

যাদের তুমি দায়িত্ব দিয়েছো আমার সমস্ত ক্রিয়া-কর্ম লিপিবদ্ধ করতে

وَ جَعَلْتَهُمْ شُهُودا عَلَيَّ مَعَ جَوَارِحِي

এবং তাদেরকে তুমি নিয়োগ করেছো আমার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো আমার কার্যকলাপের সাক্ষী হতে

وَ كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيَّ مِنْ وَرَائِهِمْ

এবং ঐসকল ফেরেশতাদের উর্ধ্বে তুমি নিজেই আমার কার্যকলাপের মহাপর্যবেক্ষক

وَ الشَّاهِدَ لِمَا خَفِيَ عَنْهُمْ وَ بِرَحْمَتِكَ أَخْفَيْتَهُ

এবং তোমার অশেষ করুণায় তুমি যেসব মন্দ কর্ম ওদের কাছে গোপন রাখো তার সবই তো তোমার কাছে পরিষ্কার

وَ بِفَضْلِكَ سَتَرْتَهُ وَ أَنْ تُوَفِّرَ حَظِّي

এবং তোমার মহত্বের দ্বারা পরিবৃত করেছো [আমার অপরাধগুলো] এবং আমাকে একটি বিরাট অংশ দান করো।

مِنْ كُلِّ خَيْرٍ أَنْزَلْتَهُ [تُنْزِلُهُ‏]

তোমার দেওয়া প্রতিটি কল্যাণ হতে

أَوْ إِحْسَانٍ فَضَّلْتَهُ [تُفَضِّلُهُ‏]

এবং প্রতিটি সুমহান অনুগ্রহ

أَوْ بِرٍّ نَشَرْتَهُ [تَنْشُرُهُ‏] أَوْ رِزْقٍ بَسَطْتَهُ [تَبْسُطُهُ‏]

এবং যেসব কল্যাণ তুমি প্রকাশ ঘটিয়েছো ও প্রতিটি জীবিকা যা তুমি বৃদ্ধি করেছো

] أَوْ ذَنْبٍ تَغْفِرُهُ أَوْ خَطَإٍ تَسْتُرُهُ

এবং যেসব অপরাধ তুমি ক্ষমা করবে ও ত্রুটিসমূহ তুমি গোপন করে রাখবে।

‏ يَا رَبِّ يَا رَبِّ يَا رَبِّ

"ইয়া রব্ব"! "ইয়া রব্ব"! "ইয়া রব্ব"!

يَا إِلَهِي وَ سَيِّدِي وَ مَوْلايَ وَ مَالِكَ رِقِّي

হে উপাস্য প্রভু! হে মনিব! হে মাওলা! হে আমার মুক্তির মালিক

يَا مَنْ بِيَدِهِ نَاصِيَتِي

হে যিনি আমার ভাগ্য নিয়ন্ত্রক

يَا عَلِيما بِضُرِّي [بِفَقْرِي‏] وَ مَسْكَنَتِي يَا خَبِيرا بِفَقْرِي وَ فَاقَتِي

হে যিনি আমার যাতনা ও নিঃস্বতা সম্পর্কে পরিজ্ঞাত, যিনি আমার দুঃসহায়তা ও অনাহার সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন

يَا رَبِّ يَا رَبِّ يَا رَبِّ

"ইয়া রব্ব"! "ইয়া রব্ব"! "ইয়া রব্ব"!

أَسْأَلُكَ بِحَقِّكَ وَ قُدْسِكَ وَ أَعْظَمِ صِفَاتِكَ وَ أَسْمَائِكَ

তোমার মহামর্যাদা ও বিশুদ্ধ সত্তা এবং পরিপূর্ণ নিখুঁত গুণাবলী ও নাম সমূহের উসিলায় আমি তোমার কাছে মিনতি করছি ।

أَنْ تَجْعَلَ أَوْقَاتِي مِنَ [فِي‏] اللَّيْلِ وَ النَّهَارِ بِذِكْرِكَ مَعْمُورَةً

আমার সমস্ত প্রহর, দিবা ও রাত্রি যেন তোমাকে স্মরণের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়

وَ بِخِدْمَتِكَ مَوْصُولَةً وَ أَعْمَالِي عِنْدَكَ مَقْبُولَةً

এবং একাধারে যেন তোমার উপাসনায় থাকতে পারি এবং আমার সকল কর্মকে তোমার গ্রহণযোগ্য করে তোলো

حَتَّى تَكُونَ أَعْمَالِي وَ أَوْرَادِي [إِرَادَتِي‏] كُلُّهَا وِرْدا وَاحِدا

যেন আমার আচরণ ও কথোপকথন সবই একই লক্ষ্যে বিশুদ্ধভাবে তোমার জন্যই সম্পাদিত হয়

وَ حَالِي فِي خِدْمَتِكَ سَرْمَدا

এবং আমার সমগ্রজীবন যেন ব্যয়িত হয় তোমার আনুগত্য চর্চায়।

يَا سَيِّدِي يَا مَنْ عَلَيْهِ مُعَوَّلِي يَا مَنْ إِلَيْهِ شَكَوْتُ أَحْوَالِي

হে আমার মালিক! যার উপর আমার সমস্ত ভরসা, যার কাছে আমি আমার সমস্ত দুর্দশার কথা খুলে বলি

يَا رَبِّ يَا رَبِّ يَا رَبِّ

"ইয়া রব্ব"! "ইয়া রব্ব"! "ইয়া রব্ব"!

قَوِّ عَلَى خِدْمَتِكَ جَوَارِحِي وَ اشْدُدْ عَلَى الْعَزِيمَةِ جَوَانِحِي

তোমার দাসত্বের জন্য আমার দেহকে শক্তিশালী করে তোলো এবং লক্ষ্যের প্রতি আমার মনোবলকে দৃঢ় রাখো ;

وَ هَبْ لِيَ الْجِدَّ فِي خَشْيَتِكَ

আর আমার মধ্যে প্রদান কর খোদাভীতি

وَ الدَّوَامَ فِي الاتِّصَالِ بِخِدْمَتِكَ

এবং সর্বক্ষণ তোমার খেদমতের তীব্র আকাঙ্ক্ষা

حَتَّى أَسْرَحَ إِلَيْكَ فِي مَيَادِينِ السَّابِقِينَ

যেন আমি তোমাকে আনুগত্যের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তীদের চেয়ে অগ্রগামী হয়ে তোমার পানে অগ্রসর হতে পারি

وَ أُسْرِعَ إِلَيْكَ فِي الْبَارِزِينَ [الْمُبَادِرِينَ‏]

এবং তোমার দিকে ধাবমান সকল দ্রুতগামীর চেয়ে দ্রুততর তোমার কাছে পৌঁছাতে পারি

وَ أَشْتَاقَ إِلَى قُرْبِكَ فِي الْمُشْتَاقِينَ

আর যারা একাগ্রনিষ্ঠায় তোমার নৈকট্য লাভ করেছে তাদের মতোই যেন আমি নিজেকে তোমার নৈকট্য লাভের সাধনায় নিয়োজিত করতে পারি

‏ وَ أَدْنُوَ مِنْكَ دُنُوَّ الْمُخْلِصِينَ

এবং বিশুদ্ধ ব্যক্তিদের মতোই যেন আমি তোমার নৈকট্যপ্রাপ্ত হতে পারি

وَ أَخَافَكَ مَخَافَةَ الْمُوقِنِينَ

এবং বিশ্বস্ত মনের অধিকারীগণ যেভাবে তোমাকে ভয় করে আমিও যেন সেভাবে ভয়ে চলতে পারি

وَ أَجْتَمِعَ فِي جِوَارِكَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ

এবং আমি যেন মুমিনদের সাথে তোমার অপার করুণার ছায়াতলে থাকতে পারি।

اللَّهُمَّ وَ مَنْ أَرَادَنِي بِسُوءٍ فَأَرِدْهُ

হে আল্লাহ্‌ ! যে আমার অনিষ্ট চায় তুমি তারই অনিষ্ট কর !

وَ مَنْ كَادَنِي فَكِدْهُ

আর যে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাকেই ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিণত কর !

وَ اجْعَلْنِي مِنْ أَحْسَنِ عَبِيدِكَ نَصِيبا عِنْدَكَ

এবং আমাকে তোমার শ্রেষ্ঠ দাসদের সঙ্গে স্থান দান কর যা তোমার অনুগ্রহ ছাড়া অর্জন সম্ভব নয়

وَ أَقْرَبِهِمْ مَنْزِلَةً مِنْكَ وَ أَخَصِّهِمْ زُلْفَةً لَدَيْكَ

এবং আমাকে দান কর তোমার সর্বনিকটতম দাসদের ও একান্ত বিশেষ বান্দাদের অবস্থান

فَإِنَّهُ لا يُنَالُ ذَلِكَ إِلا بِفَضْلِكَ

নিশ্চয় তোমার অনুগ্রহ ও করুণা ব্যতীত এ স্থান লাভ করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়

وَ جُدْ لِي بِجُودِكَ وَ اعْطِفْ عَلَيَّ بِمَجْدِكَ

তোমার অনুগ্রহ থেকে আমাকে [ক্ষমা] দান কর এবং তোমার নিঃশর্ত করুণা থেকে আমাকে বঞ্চিত করো না

وَ احْفَظْنِي بِرَحْمَتِكَ وَ اجْعَلْ لِسَانِي بِذِكْرِكَ لَهِجا

এবং তোমার অপার করুণায় আমাকে [দুনিয়া ও আখেরাতে] রক্ষা কর এবং আমার জিহ্বাকে সর্বক্ষণ তোমার গুণকীর্তনে পরিচালিত করো

وَ قَلْبِي بِحُبِّكَ مُتَيَّما

এবং আমার অন্তর যেন তোমার প্রেমে কাতর ও অস্থির হয়ে ওঠে

وَ مُنَّ عَلَيَّ بِحُسْنِ إِجَابَتِكَ

করুণা কর আমার প্রতি একটি দয়ার্দ্র প্রত্যুত্তর দিয়ে

وَ أَقِلْنِي عَثْرَتِي وَ اغْفِرْ زَلَّتِي

আমার পদস্খলনগুলো মুছে দাও এবং আমার ত্রুটিগুলো মার্জনা করে দাও!

فَإِنَّكَ قَضَيْتَ عَلَى عِبَادِكَ بِعِبَادَتِكَ

কেননা তুমিই তো তোমার বান্দাদের জন্য দয়া করে নির্ধারণ করেছো উপাসনাকে

وَ أَمَرْتَهُمْ بِدُعَائِكَ وَ ضَمِنْتَ لَهُمُ الْإِجَابَةَ

আদেশ করেছো প্রার্থনা জানাতে এবং নিশ্চয়তা দিয়েছো এসবের জবাব দানের

فَإِلَيْكَ يَا رَبِّ نَصَبْتُ وَجْهِي

তাই তোমার পানেই হে প্রতিপালক আমি মুখ ফিরিয়েছি

وَ إِلَيْكَ يَا رَبِّ مَدَدْتُ يَدِي

এবং তোমার দিকে ভিক্ষার হাত উঠিয়েছি, হে প্রতিপালক!

فَبِعِزَّتِكَ اسْتَجِبْ لِي دُعَائِي

অতএব তোমার মহামর্যাদার উসিলায় আমার দোয়া কবুল কর

وَ بَلِّغْنِي مُنَايَ وَ لا تَقْطَعْ مِنْ فَضْلِكَ رَجَائِي

এবং আমার আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ কর। কিছুতেই আমাকে হতাশ করো না

وَ اكْفِنِي شَرَّ الْجِنِّ وَ الْإِنْسِ مِنْ أَعْدَائِي

এবং তুমি আমায় রক্ষা কর জ্বীন ও মানুষের মধ্যে যারা আমার শত্রু তাদের অনিষ্ট হতে

يَا سَرِيعَ الرِّضَا اغْفِرْ لِمَنْ لا يَمْلِكُ إِلا الدُّعَاءَ

হে [প্রভু ] যে তুমি দ্রুত সন্তুষ্ট হও! তাকে তুমি ক্ষমা কর দোয়া ছাড়া যার অন্য কোন সম্বল নেই

فَإِنَّكَ فَعَّالٌ لِمَا تَشَاءُ يَا مَنِ اسْمُهُ دَوَاءٌ

কেননা তোমার যা ইচ্ছা তুমি তো তাই করতে পার। হে [প্রভু ] যার নামে দূর্গতির মুক্তি

وَ ذِكْرُهُ شِفَاءٌ وَ طَاعَتُهُ غِنًى

যার স্মরণেই সমস্ত কষ্টের প্রতিকার এবং যার আনুগত্যেই সম্পদ

ارْحَمْ مَنْ رَأْسُ مَالِهِ الرَّجَاءُ وَ سِلاحُهُ الْبُكَاءُ

রহম করো তার উপর যার মূলধন শুধু আশা আর অবলম্বন শুধুই কান্না

يَا سَابِغَ النِّعَمِ يَا دَافِعَ النِّقَمِ

হে সমস্ত নেয়ামতের পূর্ণতাদানকারী ও সমস্ত দুর্যোগের ত্রাণকর্তা

يَا نُورَ الْمُسْتَوْحِشِينَ فِي الظُّلَمِ

হে অন্ধকারে পথভ্রান্ত একাকীদের দিশা আলোক!

الظُّلَمِ يَا عَالِما لا يُعَلَّمُ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ

হে সর্বজ্ঞ! যাকে কখনো শিখানো হয়নি! মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরদের উপর শান্তি বর্ষণ করো

وَ افْعَلْ بِي مَا أَنْتَ أَهْلُهُ

এবং আমার প্রতি তা-ই করো যা করা তোমাকে মানায়

وَ صَلَّى اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ وَ الْأَئِمَّةِ الْمَيَامِينِ مِنْ آلِهِ [أَهْلِهِ‏] وَ سَلَّمَ تَسْلِيما [كَثِيرا]

শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর রাসূলের উপর এবং তাঁর বংশধরদের মধ্য হতে পবিত্র ইমামদের উপর এবং তাঁদের দান করো অপার ও অসীম প্রশান্তি ।
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template