السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

মাযহাব

| comments

মাযহাবের সঠিক অর্থ চলার পথ, কিন্তু মাযহাব অনুসারীগণ এর অর্থ করেন মত ও পথ। এই অর্থে দুনিয়ার যত মত ও পথ আছে সবই মাযহাব। এ পৃথিবীতে বর্তমানে পাঁচটি মাযহাব আছে, চারটি প্রসিদ্ধ আরেকটি অপ্রসিদ্ধ।
১. হানাফী মাযহাব,
২. মালেকী মাযহাব
৩. শাফেয়ী মাযহাব,
৪. হাম্বলী মাযহাব।
মসজিদে উপস্থিত আমরা সকলেই হানাফী মাযহাবের। ইমাম আবূ হানিফা রহ. দ্বীনের পথে সঠিকভাবে চলার জন্য আমাদেরকে নিখুঁত দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি তাবেয়ী ছিলেন। স্বচক্ষে সাহাবাদেরকে দেখেছেন। এই বৈশিষ্ট্য অন্য কোন ইমামের নেই। দ্বিতীয় ইমাম হলেন, ইমাম মালেক রহ.। তিনি ইমাম আবূ হানিফা রহ. এর ছাত্রতুল্য। তৃতীয় ইমাম হলেন, ইমাম শাফেয়ী রহ.। তিনি ইমাম আবূ হানিফা রহ.-এর প্রথম স্তরের শীর্ষ ছাত্রদ্বয়ের তথা ইমাম আবূ ইউসূফ ও ইমাম মুহাম্মদ বিন হাসান শায়বানী রহ. এর ছাত্র, অর্থাৎ ইমাম আবূ হানিফা রহ. এর নাতি ছাত্র। চতুর্থ ইমাম হলেন, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহ.। তিনিও ইমাম আবূ হানিফা রহ. এর নাতি ছাত্র।

ইমাম আবু হানিফার মত ও পথ হানাফী মাযহাব। অনুরূপ ইমাম মালেকের মত ও পথ মালেকী মাযহাব, ইমাম শাফেয়ীর মত ও পথ শাফেয়ী মাযহাব ও ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলের মত ও পথ হাম্বলী মাযহাব। তা হলে নবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মত ও পথ নিঃসন্দেহে মুহাম্মদী মাযহাব। আর সকলের মত ও পথের চেয়ে মুহাম্মদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মত ও পথ যে অতি উত্তম ও উত্কৃষ্ট মত ও পথ এ কথা কোন মুসলমানকে বলে দিতে হবে না। কাজেই অন্যান্য সকলের মত ও পথকে বর্জন করে মহানবীর মহাপবিত্র মত ও পথেই আমাদেরকে চলতে হবে। অন্য কারো মতে ও পথে চলার জন্য নির্দেশ নাই।

যে সকল ইমামদের নামে মাযহাবের নামকরণ হয়েছে তাদের জন্মের আগে মাযহাব ছিল না, তাঁদের যামানায় মাযহাবের উদ্ভব হয় নাই। মাযহাব হয়েছে তাঁদের মৃত্যুর বহুদিন পরে। ইমাম আবু হানিফার জন্ম ৮০ হিজরীতে, মৃত্যু ১৫০ হিজরীতে; ইমাম মালেকের জন্ম ৯০ হিজরীতে, মৃত্যু ১৭৯ হিজরীতে; ইমাম শাফেয়ীর জন্ম ১৫০ হিজরীতে, মৃত্যু ২০৪ হিজরীতে; আর ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলের জন্ম ১৬৪ হিজরীতে, মৃত্যু ২৪১ হিজরীতে। যেদিন ইমাম আবু হানিফার মৃত্যু হল সেই দিন ইমাম শাফেয়ীর জন্ম হয়েছে। এই দুই জনের পরস্পরের সঙ্গে কারো দেখা সাক্ষাত হয় নাই। মাযহাবের উদ্ভব হয়েছে ৪০০ হিজরীতে। ইমাম আবু হানিফার মৃত্যুর ২৫০ বত্সর পরে। এই চার ইমামের জন্মের পূর্বেও ইসলাম ছিল, মুসলিম ছিল। তখন যদি কারোর মত ও পথের প্রয়োজন না হয়ে থাকে তাহলে ৪০০ বত্সর পরে প্রয়োজন হবার বা ফরয হবার কোন যুক্তি থাকে না। তখনও মুসলিমদের কাছে কুরআন ও হাদীস ছিল, এখনও আছে, কাজেই কুরআন ও হাদীসই যথেষ্ট। সুতরাং নির্ভুল কুরআন হাদীসই মুসলিমদের মেনে চলতে হবে। চার মাযহাবের কোন একটিও মেনে চলার জন্য আল্লাহ ও রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ নাই।

বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ, এখানকার জনগোষ্ঠির প্রায় ৮৬% মুসলমান। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান ধর্মভীরু সুন্নী, কিন্তু সঠিক ধর্মীয় শিক্ষাদীক্ষার অভাবে তারা প্রায়শঃই বিভিন্ন ধরণের শিরক, বিদ’আতকে ইসলামী শরিয়াহ-র অংশ হিসাবে গণ্য করে আসছে। এরা মাযহাব সম্বন্ধে খুবই সচেতন, এক মাযহাব অনুসারী অন্য মাযহাবীকে তাচ্ছিল্যভাবে দেখে।

এদের বেশীর ভাগের ধারণা চারজন ইমামের অনুসরণীয় মাযহাব স্বীকার করা ফরজ, শরীয়তের উপর আমল করতে চার ইমামের একজনের পয়রবী করা ওয়াজিব, বিপরীত করলে অর্থাত্ যে কোন একটি মাযহাব না মানলে শরীয়ত হতে খারিজ হতে হবে, এক মাযহাব-এ থেকে অন্য মাযহাবের কোন অংশ অনুসরণ করা যাবে না, চারজনের মধ্যে আজীবন শুধু মাত্র একজনের অন্ধ অনুসরণ করতে হবে ইত্যাদি।

চার মাযহাব ফরয হবার কোন দলীল নেই
আমাদের সমাজে প্রচার রয়েছে চার মাযহাবে চার ফরয। কিছু একটি ফরয হলে তা সমস্ত মুসলিম জাতির জন্যই ফরয হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে মাযহাব অনুসরণের কারণে মুসলিম জাতি বিভক্ত হয়ে পড়েছে। অর্থাৎ যিনি হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করেন, তিনি হাম্বলী, মালেকী ও শাফেয়ী মাযহাবের অনুসরণ করেন না। এমনিভাবে অন্য মাযহাবীরাও একে অন্যের মাযহাব মানেন না। তাদের কথা হল চার ফরয তথা চার মাযহাবের যে কোন একটি মানলেই হল। তাহলে তো পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের এক ওয়াক্ত মানলে বা পড়লেই হয়। চার মাযহাব ফরয করতে কোন নবীর আগমন ঘটেনি বরং অজ্ঞ জাহেল ব্যক্তিই মাযহাব ফরয দাবী করে মুরতাদ, কাফেরের পরিচয় দিয়েছে। যাদের নামে মাযহাব মানা হচ্ছে তাঁরা কি আদৌ এ মাযহাব তৈরী করেছেন? প্রকৃত ঘটনা হল এই যে,

ইমামগণ প্রচলিত মাযহাব তৈরী করেন নি বা কাউকে তৈরী করতেও বলেননি এবং তাদের উপর চার মাযহাব ফরযও হয়নি। বরং চারশত হিজরীর পর, অতিভক্তির পরিণতির কারণে এই চার মাযহাবের উদ্ভব হয়।

যদি ধরেও নেয়া হয় যে ইমামগণ চার মাযহাব তৈরী করেছেন, কিন্তু তা ফরয হল কি ভাবে? তাঁরাতো নবী ছিলেন না। তাদের নিকট ওহীও আসত না। এগুলি তাঁদের নামে মিথ্যা অপবাদ ব্যতীত আর কিছুই না। তাঁদের সময় এবং তাঁদের পূর্বে একটি মাযহাবই ছিল। তাঁরা ঐ একটি মাযহাবকেই মানতেন এবং অন্যকে মানতে বলতেন। ঐ একটি মাযহাবই ফরয যা নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে।

হাদীসকে আঁকড়ে ধরার প্রতি ইমামগণের উপদেশ
চার ইমামকে (রহঃ) আমাদের তরফ হতে আল্লাহ উত্তম বদলা দান করুন। তাঁরা প্রত্যেকেই তাদের নিকট যে হাদীস সমূহ পৌঁছেছিল সে অনুযায়ী ইজতেহাদ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে যে মতানৈক্য হয়েছিল তার বিশেষ কারণ হল যে, কারো নিকট কতক হাদীস পৌঁছেছিল যা অন্যের নিকট পৌঁছেনি, কারণ তদানীন্তন যুগে হাদীস সংকলিত হয় নি। আর হাদীসের হাফেযগণ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন, কেউ ছিলেন হিজাযে (মক্কা ও মদীনায়), আর কেউ ছিলেন শ্যামে (সিরিয়ায়), কেউ বা ইরাকে, আবার কেউ মিসরে অথবা অন্যান্য ইসলামী দেশে। সে যুগে এক স্থান হতে অন্য স্থানের যোগাযোগ ছিল অত্যন্ত কঠিন ও কষ্টকর। কাজেই আমরা দেখতে পাই যে, ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) যখন ইরাক ছেড়ে মিসরে গেলেন তখন তিনি ইরাকের পুরাতন মাযহাব ত্যাগ করলেন। কেননা ততক্ষণে তাঁর সামনে বহু নুতন নুতন সহীহ হাদীস উপস্থাপিত হয়েছিল।

ইমামগণের মধ্যে মতানৈক্যের একটি উদাহরণ উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ইমাম শাফেয়ীর (রহঃ) মতে কোন মহিলাকে স্পর্শ করলে ওযু নষ্ট হয়ে যায়। অপরদিকে ইমাম আবু হানিফার (রহঃ) মতে ওযু নষ্ট হয় না। দুই ইমামের মতামতের এই বৈষম্যতার কারণে আমাদের অপরিহার্য কর্তব্য হল, কুরআন ও সহীহ হাদীসের দিকে প্রত্যাবর্তন করা। কারণ মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ

“অতঃপর কোনো ব্যাপারে তোমরা যদি একে অপরের সাথে মতবিরোধ করো, তাহলে সে বিষয়টি (ফয়সালার জন্যে) আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাও, যদি তোমরা (সত্যিকার অর্থে) আল্লাহর ওপর এবং শেষ বিচার দিনের ওপর ঈমান এনে থাকো! (তাহলে) এই পদ্ধতিই হবে (তোমাদের বিরোধ মিমাংসার) সর্বোত্কৃষ্ট উপায় এবং বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহের ব্যাখ্যার দিক থেকেও (এটি) হচ্ছে উত্তম পন্থা।
{সূরা আন্ নিসা, আয়াত ৫৯}

আর আমরাতো কেবল আল্লাহর নিকট হতে অবতারিত কুরআনের অনুসরণ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। আর রাসূল (সঃ) সহীহ হাদীসের মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা দান করেছেন। তাই এরশাদ হচ্ছেঃ

“(হে মানুষ, এ কিতাবে) তোমাদের মালিকের কাছ থেকে তোমাদের কাছে যা কিছু পাঠানো হয়েছে তোমরা তার (যথাযথ) অনুসরণ করো এবং তা বাদ দিয়ে তোমরা অন্য কোনো অলি আউলিয়ার পৃষ্ঠপোষকদের অনুসরণ করো না; (আসলে) তোমরা খুব কমই উপদেশ মেনে চলো।
{সূরা আল আ’রাফ, আয়াত ৩}

সত্য কোন সময় একাধিক হতে পারে না। প্রকৃত সত্য হল, ওযু ভঙ্গের কারণগুলির মধ্যে কোন মহিলাকে স্পর্শ করা অন্তর্ভুক্ত নয় বিধায় কোন মহিলার শরীর স্পর্শ করলে ওযু ভঙ্গ হবে না।

সুতরাং কোন মুসলিমের সামনে কোন সহীহ হাদীস উপস্থাপিত হলে তাকে একথা বলা জায়েয নয় যে, এটা আমাদের মাযহাব বিরোধী। কারণ সমস্ত ইমামের ইজমা (ঐকমত্য) হচ্ছে যে সহীহ হাদীস গ্রহণ করবে এবং ঐ সমস্ত মতবাদ পরিহার করবে যা সহীহ হাদীসের পরিপন্থী।

ইসলামে বিভিন্ন দল/ফিরকা সৃষ্টি
রাসূল (স.) বলেছেন, "বনী ইসরাঈল বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল, আর আমার উম্মত তিহাত্তর দলে বিভক্ত হবে।" সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন, "হে আল্লাহর রাসূল (স.), সে দল কারা?" উত্তরে রাসূল (স.) বললেন, "আমি এবং আমার সাহাবাগণ যে তরীকার উপর চলছে, যে দল সেই তরীকা মত চলবে সেই দলই বেহেশতী।" (তিরমিজী)

রাসূল (স.)-এর পর খোলাফায়ে রাশেদীন এই কোরআন ও সুন্নাহর জীবন ব্যবস্থার উপর কায়েম ছিলেন, এক চুল পরিমাণও ব্যতিক্রম ঘটতে দেননি। পরবর্তীকালে অন্যান্য সাহাবা ও তাবেয়ীগণও কোরআন ও সুন্নাহর মধ্যে কিছুমাত্র রদবদল হতে দেননি। বরং রাসূল (স.)-এর কোন হাদীস তাঁদের সম্মুখে উপস্থিত হলে বিনা শর্তে তা মেনে নিতেন। সাজাবা কেরাম ও তাবেয়ীগণের পরবর্তী যুগে যেমন নানা দেশের, নানা বর্ণের, নানা ধর্মের লোক ইসলামের পতাকা তলে আসতে লাগল তেমনি তাদের সঙ্গে সঙ্গে নানা ধর্মমত ও দার্শনিক মতবাদও আসা শুরু হল। ফলে, মুসলিমগণ নীতিগতভাবে এক আল্লাহকে সার্বভৌম শক্তির অধিকারী ও তাঁর রাসূল (স.)-কে একমাত্র নেতা বলে স্বীকার করলেও কার্যতঃ তারা বিভিন্ন সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে ইসলামের প্রকৃত নীতি হতে সরে যেতে লাগল এবং কোনো কোনো সম্প্রদায় একেবারে ইসলামের গন্ডীর বাইরে চলে গেল। ফলে, মুসলিম জাতীয় জীবনে ভাঙ্গন শুরু হল। তারা রাসূল (স.)-এর নেতৃত্ব ত্যাগ করে বিভিন্ন নেতার অধীনে ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ল। এভাবে ইসলামে শুরু হল ফিরকাবন্দী। অখন্ড ইসলাম হয়ে গেল খন্ড বিখন্ড।

বিভিন্ন দল/ফিরকার সংখ্যা
হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) তাঁর "৭৩ ফিরকার বিবরণ" গ্রন্থে সমগ্র মুসলিমগণকে প্রথমতঃ ১০ ভাগে বিভক্ত করেছেন, যথা- (১) আহলে সুন্নাত, (২) খারিজী, (৩) শিয়াহ, (৪) মুতাজিলা, (৫) মুরজিয়া, (৬) মুশাব্বিয়া, (৭) জাহমিয়া, (৮) জরারিয়াহ, (৯) নাজ্জারিয়া এবং (১০) কালাবিয়াহ।

উপরোক্ত দলগুলির মধ্যে মুক্তি পাওয়ার যোগ্য দল হল আহলে সুন্নাত কারণ একমাত্র এরাই কোরআন ও সুন্নাহ অবলম্বন ও অনুসরণ করে থাকেন এবং প্রমাণস্থলে উভয়কেই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন।

অন্য ৯টি দল হতে বাহাত্তরটি উপদল বা ফিরকার সৃষ্টি হয়েছে। এ দলগুলো সাহাবাদের বহু জামানার পর সৃষ্টি হলেও কোন কোন সাহাবাদের জীবদ্দশায় দু একটি বিদ'আতের সূত্রপাত হয়েছিল। সাহাবাগণও সূত্রপাতের সঙ্গে সঙ্গেই ঘোর প্রতিবাদ করেছেন। একদিন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) শুনলেন যে কিছু লোক মসজিদে সমবেত হয়ে হালকাবদ্ধভাবে বসে (অর্থাৎ কয়েকজন গোল হয়ে বসে) লাইলাহা ইল্লাল্লাহু, সুবহানাল্লাহ ও দরূদ প্রভৃতি পাঠ করছে। এই খবর পাওয়া মাত্র তিনি মসজিদে এসে সমবেত লোকদের বললেন, "হে লোক সকল, রাসূল (স.)-এর ইন্তেকালের পর এখনও খুব বেশী দিন অতীত হয়নি, তাঁর পরিধেয় বস্ত্র এখনও বিদ্যমান রয়েছে, আর তোমরা এখনই তাঁর শরীয়তকে পরিবর্তন করতে আরম্ভ করে দিয়েছ? দেখ, আমি রাসূলের (স.) যামানায় এভাবে কলেমা ও দরূদ পাঠ করতে দেখিনি।" এভাবে সতর্কবাণী করতে করতে তিনি তাদের মসজিদ হতে তাড়িয়ে দিলেন।

হযরত আবদুল কাদের জিলানী তাঁর উপরোল্লিখিত গ্রন্থে উক্ত নয়টি দল যে বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে সেগুলির নাম উল্লেখ করেছেন নিম্নোক্তভাবেঃ

১ম দল - খারেজী - এরা ১৫টি দলে বিভক্ত
২য় দল - শিয়া - ৩ দলে বিভক্ত, এই ৩টি দল আবার যথাক্রমে (i) ১২, (ii) ৬ ও (iii) ১৪টি উপদলে বিভক্ত
৩য় দল - মুতাজিলা - ৬টি দলে বিভক্ত
৪র্থ দল - মুর্‌জীয়া - ১২টি দলে বিভক্ত
৫ম দল - মুশাব্বিয়া - এরা ৩টি দলে বিভক্ত
অবশিষ্ট ৪টি দল হল জহমিয়া বা জব্‌রিয়াহ, জরারিয়াহ, নজ্জারিয়াহ বা ছেফাতিয়াহ এবং কালাবিয়াহ।
মোট ৭২ উপদল বা ফিরকা

উপরোক্ত দল/উপদলগুলি বহু যামানা পরে সৃষ্টি হলেও কোন কোন সাহাবার জীবদ্দশায়ই দু একটি বিদ'আতের সূত্রপাত হয়েছিল। কিন্তু সাহাবাগণ সূত্রপাতের সঙ্গে সঙ্গেই এর ঘোরতর প্রতিবাদ করেছেন।
(তরীকায়ে মোহাম্মদীয়া, ১ম খন্ড; মোহাম্মদ মতিউর রহমান মোহাম্মদী সালাফী)

বিস্তারিত পড়ুন_
মাযহাব সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা - ১ম পর্ব
মাযহাব সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা - ২য় পর্ব
মাযহাব সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা - ৩য় পর্ব
মাযহাব সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা - ৪র্থ পর্ব
মাযহাব সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা - ৫ম পর্ব
মাযহাব সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা - শেষ পর্ব

সূত্রঃ মুহাম্মদ আবু হেনা সংকলিত 'আমার নামায কি শুদ্ধ হচ্ছে' থেকে উদ্ধৃত, দাওয়াতুল হক, মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী'র ব্লগ
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template