السلام عليكم

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (তওবা) করবে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। [আবূ দাঊদ: ১৫২০; ইবন মাজা: ৩৮১৯]

অযু

| comments

ওজুর ফজিলত
হযরত উসমান বিন আফ্ফান রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সঠিকভাবে ওজু করে তার দেহের পাপ-পঙ্কিলতা নখের প্রান্তভাগ দিয়ে বেরিয়ে যায়। (মুসলিম)

অজুর বিবরণ
১.মনে মনে ওজুর নিয়ত করা। মুখে উচ্চারণ করা নিস্প্রয়োজন।
২.“বিসমিল্লাহ” বলে ওজু শুরু করা।
৩. প্রথমেই হাতের কব্জিদ্বয় ধৌত করা।
৪. এরপর গড়গড়া কুলি করা, নাকে পানি দেয়া এবং নাক ঝেড়ে ফেলা।
৫. অতঃপর মুখমণ্ডল ধৌত করা। (মুখের সীমানা: মাথার চুলের অগ্রভাগ থেকে নীচের থুতি পর্যন্ত এবং এক কান থেকে অপর কান পর্যন্ত।)
৬. তারপর আঙ্গুলের ডগা থেকে কনুই পর্যন্ত হস্তদ্বয় ধৌত করা। প্রথমে ডান হাত, তারপর বাম হাত।
৭. এরপর হাত ভিজিয়ে পুরো মাথা ও দুই কান একবার মাসেহ্ করা।
৮. সবশেষে দুই পা টাকনু পর্যন্ত ধৌত করা। প্রথমে ডান পা, তারপর বাম পা।
৯. ওজু শেষে এই দোয়া পড়া
أَََشْهَدُ أَنْ لا إلَه إِلّا الله وَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ

লক্ষনীয়: ওজুর প্রতিটি অঙ্গ তিনবার ধৌত করা সুন্নত। তবে একবার বা দুইবার ধৌত করলেও ফরজ আদায় হবে। কিন্তু মাথা একবার মাসেহ করাই সুন্নত। একাধিক বার মাথা মাসেহ করা শরীয়ত বিরোধী।

ওযু সংক্রান্ত বিভিন্ন ত্রুটি
১. নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা।
২. পানি অপচয় করা।
৩. ওজুর অঙ্গ সমূহের কোন অংশে পানি না পৌঁছানো।
৪. গর্দান মাসেহ করা।
৫. ওজুর কোন একটি অঙ্গ তিনবারের অধিক ধোয়া।
৬. মাথা একাধিক বার মাসেহ্ করা।
৭. বায়ু বের হওয়ার কারণে শৌচ করা। অথচ শৌচ করতে হয় শুধুমাত্র পেশাব বা পায়খানার পর।
৮. ওজুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধারাবাহিকভাবে না ধোয়া। এতে ওজু পূর্ণতা পায় না।
৯. নখে নেইল-পালিশ বা এ জাতীয় কোন কিছূ লাগানো। যাতে ওজু ও গোসলের পানি যথাস্থানে পৌঁছে না।
১০. অনেকের ধারণা ওজুর শুরুতে হাতের কব্জিদ্বয় ধুয়ে নিলে পরবর্তীতে হাত ধোয়ার সময় কব্জি আর ধোয়া লাগে না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। জানা উচিত, ওজুর শুরুতে হাতের কব্জি ধৌত করা সুন্নত। আর মুখমণ্ডল ধোয়ার পর আঙ্গুলের ডগা থেকে কনুই পর্যন্ত সম্পূর্ণ হাত ধৌত করা ওজুর ফরজ। সুন্নত আদায়ের দ্বারা ফরজ আদায় হয় না। সে জন্য মুখ ধোয়ার পর কব্জি সহ পুরো হাত ধুইতে হবে।
১১. পায়ের গোড়ালি ও নিচের পাতায় পানি না পৌঁছানো।
অসুস্থ ব্যক্তির পবিত্রতার পদ্ধতি
১. অপারগ না হলে অসুস্থ ব্যক্তির উপরও পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা ফরজ। অতএব রুগ্নব্যক্তি ছোট অপবিত্রতা ( পায়খানা, পেশাব, বায়ুক্রম ইত্যাদি) থেকে ওজুর মাধ্যমে পবিত্র হবেন। আর বড় অপবিত্রতা (স্ত্রী সহবাস, স্বপ্ন-দোষ ইত্যাদি) থেকে গোসলের মাধ্যমে পবিত্র হবেন।
২. রূগ্নব্যক্তি যদি পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জনে অক্ষম হন তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবেন। বালিযুক্ত দেয়ালেও তায়াম্মুম করতে পারেন।
৩. রোগী যদি একাকি পবিত্রতা অর্জনে অক্ষম হন তবে অন্য কেউ তাকে ওজু বা গোসল অথবা তায়াম্মুম করিয়ে দিবেন।
৪. ওজুর কোন অঙ্গে ক্ষত বা ঘা থাকলে যদি পানি দ্বারা ক্ষতস্থানের কোন ক্ষতির আশংকা না হয় তবে সে স্থানে পানি পৌঁছাতে হবে। আর যদি ক্ষতির আশংকা হয় তবে হাত ভিজিয়ে সে স্থান মাসেহ করে নিবেন। যদি মাসেহর দ্বারাও কোন ক্ষতির আশংকা হয় তবে তিনি তায়াম্মুম করবেন।
৫. যদি ওজুর কোন অঙ্গে ব্যাণ্ডেজ বা প্লাস্টার করা থাকে তাহলে পানি দিয়ে সে অংশ মাসেহ করবেন, তায়াম্মুম করার প্রয়োজন নেই।
৬. সাধ্যমত সকল ধরনের নাজাসা (নাপাকি) থেকে পবিত্র হওয়া রোগীর উপরও ওয়াজিব । যদি অসুস্থ ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গ পবিত্রতা অর্জনে অক্ষম হন তবে তিনি যে অবস্থায় আছেন সে অবস্থায় নামাজ আদায় করবেন। এভাবে তার নামাজ সহীহ হবে এবং এ নামাজ পুনঃ আদায় করতে হবে না।
৭. রোগী হলেও অপবিত্রতার অজুহাতে নামাজ আদায়ে বিলম্ব করা নাজায়েয। বরং তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যথা সম্ভব পবিত্রতা অর্জন করবেন এবং ঐ অবস্থায় নামাজ আদায় করবেন। অপারগতা বশতঃ তার শরীর বা পোশাক-আশাকে কোন নাজাসা (নাপাকি) থাকলেও কোন অসুবিধা নেই।

লিখেছেনঃ নূরুল্লাহ তারীফ
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. ইসলামী কথা - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template