ফাজায়েলঃ
হুজুর সাঃ এরসাদ ফরমাইয়াছেন, যে ব্যক্তি আমার উম্মতের জন্য দ্বীনি বিষয়ের উপর ৪০ টি হাদিস সংরক্ষন করিবে আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন আলেম হিসাবে উঠাইবেন এবং আমি তাহার জন্য সুপারিশকারী ও সাক্ষী হব।
১।হযরত ওসমান রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে কোরান শরীফ শিখে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়।
২।হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা ফরমান, যে ব্যাক্তি কোরান শরীফে মশগুল থাকার কারনে যিকির করার ও দোয়া করার অবসর পায় না আমি তাকে সকল দোয়া করনেওয়ালাদের চাইতে বেশী দিয়া থাকি। আর আল্লাহ তায়ালার কালামের মর্যাদা সমস্ত কালামের উপর এইরুপ যেমন স্বয়ং আল্লাহতায়ালার মর্যাদা সমস্ত মাখলুকের উপর।
৩।হযরত উকবা ইবনে আমের রাঃ
হতে বর্নিত, আমরা মসজিদে নববীর ছুফফায় বসা ছিলাম। এমন সময় হুজুর পাক সাঃ তশরীক আনিলেন এবং বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কে ইহা পছন্দ করে যে সকাল বেলা বুতহান বা আকিক নামক বাজারে গিয়া কোন রুপ গোনাহ বা আত্নীয়তার বন্ধন ছিন্ন না করিয়া ২টি অতি উত্তম উটনী লইয়া আসিবে? সাহাবা কেরাম রাঃ আরজ করিলেন ইহা তো আমাদের সকলেই পছন্দ করিবে। হুজুর সাঃ বলিলেন মসজিদে গিয়া ২টি আয়াত পড়া বা ২টি আয়াত শিক্ষা দেয়া ২টি উটনী হতে, ৩টি আয়াত ৩টি উটনী হতে এমনিভাবে ৪টি আয়াত ৪টি উটনী হতে উত্তম এবং ঐগুলির সমপরিমান উট হতে উত্তম।
৪।হযরত আয়েশা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, কোরানের পারদর্শী ব্যাক্তি ঐ সকল ফেরেশতাদের দলভুক্ত হবে যারা লেখার কাজে নিয়োজিত এবং নেককার। আর যে ব্যক্তি কষ্ট করিয়া ঠেকিয়া ঠেকিয়া কোরান শরীফ পড়ে সে দ্বিগুন সওয়াব পাবে।
৫।হযরত ইবনে ওমর রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, ২ ব্যক্তি ছাড়া কারো উপর হাছাদ (অর্থাৎ হিংসা) জায়েজ নাই। এক ঐ ব্যক্তি যাকে আল্লাহতায়ালা কোরান শরীফ তেলোয়াতের তওফীক দিয়াছেন এবং সে দিন রাত উহাতে মশগুল থাকে। দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যাহাকে আল্লাহতায়ালা প্রচুর ধনসম্পদ দান করেছেন এবং সে দিন রাত্র উহা হতে (আল্লাহর রাস্তায় খরচ করিতে থাকে)
৬।হযরত আবু মুসা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে মুসলমান কোরান তেলোয়াত করে তার দৃষ্টান্ত হলো তুরনজ বা কমলালেবুর ন্যয়। যার খোশবুও উত্তম এবং স্বাদ ও চমতকার। আর যে মুসলমান কোরান শরীফ পাঠ করে না তার দৃষ্টান্ত হলো খেজুরের ন্যয়। যার কোন খোশবু নাই কিন্তূ স্বাদ খুবই মিষ্ট। আর যে মুনাফিক কোরান শরীফ পাঠ করে না তার দৃষ্টান্ত হলো হাঞ্জাল ফলের ন্যয়। যার স্বাদ তিক্ত এবং কোন খোশবু নাই। আর যে মুনাফিক কোরান শরীফ পাঠ করে তার দৃষ্টান্ত হলো সুগন্ধি ফুলের ন্যয়। যার খোশবু চমতকার কিন্তূ স্বাদ তিক্ত।
৭।হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, আল্লাহতায়ালা এই কিতাব অর্থা কোরানে পাকের দ্বারা বহু লোককে উচ্চ মর্যাদা দান করেন এবং বহু লোককে নিচু ও অপদস্থ করেন।
৮।হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, ৩ টি জিনিস কেয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নিচে থাকিবে। প্রথমত কালামে পাক। উহা সেদিন বান্দার ব্যাপারে ঝগড়া করিবে। এই কোরানের জাহের এবং বাতেন ২ টি দিক রয়েছে। দ্বিতীয়ত আমান ত। তৃতীয়ত আত্নীয়তা। ইহা সেদিন উচ্চ আওয়াজে বলিতে থাকিবে, যে ব্যক্তি আমাকে রক্ষা করেছে আল্লাহ তায়ালা তাকে আপন রহমতের সাথে মিলাইয়া দিন। আর যে ব্যক্তি আমাকে ছিন্ন করেছে আল্লাহ তায়ালা তাকে আপন রহমত হথে পৃথক করিয়া দিন।
৯।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন ছাহেবে কোরানকে বলা হবে, কোরান শরীফ পড়িতে থাক এবং বেহেশ্তের মর্যাদার স্তরসমূহে আরোহন করিতে থাক এবং থামিয়া থামিয়া পড় যেভাবে তুমি দুনিয়াতে থামিয়া থামিয়া পড়িতে। তোমার মর্যাদা উহাই হইবে যখন তুমি শেষ আয়াতে পৌছিবে।
১০।হযরত ইবনে মাসউদ রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোরানের একটি অক্ষর পড়িবে, উহার বিনিময়ে সে একটি নেকী লাভ করিবে এবং এক নেকীর সওয়াব ১০ নেকীর সমান হবে। আমি এই কথা বলি না যে পুরা আলিফ-লাম-মীম একটি অক্ষর বরঙ আলিফ এক অক্ষর, লাম এক অক্ষর, মীম এক অক্ষর।
১১।হযরত মুয়ায জুহানী রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোরান পড়িবে এবং উহার উপর আমল করিবে তাহার পিতামাতাকে কেয়ামতের দিন এমন একটি মুকুট পড়ানো হবে, যাহার আলো সূর্যের আলো হতেও বেশী হবে যদি সেই সূর্য তোমাদের ঘরে হয়। সুতরাং যে নিজে কোরানের উপর আমল করে তার সম্পর্কে তোমাদের কি ধারনা।
১২।হযরত উকবা ইবনে আমের রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যদি কোরান শরীফকে কোন চামড়ার মধ্যে রেখে আগুনের মধ্যে ফেলিয়া দেয়া হয়, তবে উহা পুড়িবে না।
১৩।হযরত আলী রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোরান পড়িল, অতঃপ র উহার হেফজ ইয়াদ করিল এবং উহার হালাল কে হালাল এবং হারাম কে হারাম জানিল, আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন এবং তাহার পরিবারের এমন ১০ জন লোকের জন্য তাহার সুপারিশ কবুল করবেন যাদের জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গিয়েছে।
১৪।হযরত আবু হুরায়রা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, তোমরা কোরান শিক্ষা কর। অতঃপর উহা তেলোয়াত কর। কেননা যে ব্যক্তি কোরান শিক্ষা করে ও তেলোয়াত করে এবং তাহাজ্জুত নামাজ পড়িতে থাকে, তাহার দৃষ্টান্ত ঐ থলির মতো যাহা মেশকের দ্বারা ভরপুর। উহার খোশবু সর্বত্র ছড়াইয়া পড়ে। আর যে ব্যক্তি কোরান শিক্ষা করিল এবং রাত্রে ঘুমাইয়া কাটাইয়া দিল তাহার দ্রৃষ্টান্ত মেশকের ঐ থলির মতো যাহার মুখ বন্ধ করিয়া দেয়া হইয়াছে।
১৫।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তির অন্তরে কোরানের কোন অংশই রক্ষিত নাই, উহা বিরান ঘরের মতো।
১৬।হযরত আয়েশা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, নামাজের ভিতর কোরান তেলোয়াত করা নামাজের বাহিরে কোরান তেলোয়াত করা হইতে উত্তম। আর নামাজের বাহিরে তেলোয়াত করা তাসবীহ ও তাকবীর হইতে উত্তম। আর তাসবীহ পড়া ছদকা হইতে উত্তম। আর ছদকা রোজা হইতে উত্তম। আর রোজা দোযখ হইতে বাচিবার ঢালস্বরুপ।
১৭।হযরত আবু হুরায়রা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কি কেহ ইহা পচ্ছন্দ করে যে, সে বাড়ি ফিরিয়া ৩ টি মোটা তাজা গর্ভবর্তী উটনী পাইয়া যাবে? আমরা আরজ করিলাম, অবশ্যই আমরা ইহা পচ্ছন্দ করি। হুজুর সাঃ বলিলেন, কেহ যদি নামাজে ৩ টি আয়াত তেলোয়াত করে তবে উহা ৩ টি মোটা তাজা গর্ভবর্তী উটনী হইতে উত্তম।
১৮।হযরত আউস ছাকাফী রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, কোরান শরীফ মুখস্থ পড়িলে ১০০০ গুন ছওয়াব হয়। আর দেখিয়া পড়িলে ২০০০ গুন পর্যন্ত ছওয়াব বৃদ্ধি পায়।
১৯।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, মানুষের অন্তরেও মরিচা পড়িয়া যায় যেমন লোহাতে পানি পাওয়ার কারনে মরিচা পড়িয়া যায়। জিজ্ঞাসা করা হইল ইয়া রাসুলুল্লাহ সাঃ ইহা পরিষ্কার করার উপায় কি? তিনি বলিলেন, মৃত্যুকে বেশী করিয়া স্মরন করা এবং কোরান পাকের তেলোয়াত করা।
২০।হযরত আয়েশা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, প্রত্যেক জিনিসের কোন না কোন গর্ব ও মর্যাদার বিষয় থাকে, যাহা দ্বারা সে গর্ব করিয়া থাকে। আমার উম্মতের গর্ব ও মর্যাদার বিষয় হলো কোরান শরীফ।
২১।হযরত আবূ যর গিফারী রাঃ
বলেন, আমি হুজুর পাক সাঃ এর নিকট দরখাস্ত করিলাম যে আমাকে কিছু নসীহত করুন। হুজুর সাঃ ফরমাইলেন, তাকওয়া অবলম্বন কর কেননা উহা সমস্ত নেক আমলের মুল। আমি আরজ করিলাম আরো কিছু নসীহত করুন। হুজুর সাঃ ফরমাইলেন, কোরান তেলোয়াতের এহতেমাম কর কেননা উহা দুনিয়াতে তোমার জন্য নূর এবং আখেরাতে সঞ্চিত ধনভান্ডার।
২২।হযরত আবু হুরায়রা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যখন কোন জামাত আল্লাহর ঘরে একত্রিত হয়ে কোরান পাকের তেলোয়াত ও দাওর করে, তখন তাদের উপর ছাকীনা নাজিল হয়, আল্লাহর রহমত তাদের ঢাকিয়া লয়, রহমতের ফেরেশ্তাগন তাদের ঢাকিয়া লয় এবং আল্লাহ পাক ফেরেশ্তাদের মজলিসে তাদের আলোচনা করেন।
২৩।হযরত আবূ যর রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, তোমরা আল্লাহ তায়ালার প্রতি রুজু ও তাঁর দরবারে নৈকট্য ঐ জিনিস হতে অধিক আর কোন জিনিস দ্বারা হাসিল করিতে পারিবে না, যাহা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা হতে বের হয়েছে অর্থাৎ কালামে পাক।
২৪।হযরত আনাস রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, লোকদের মধ্যে হতে কিছু লোক আল্লাহ তায়ালার ঘরোয়া খাছ লোক। সাহাবীগন আরজ করিলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ সাঃ তাহারা কোন লোক। হুজুর সাঃ ফরমাইলেন, তাহারা হলো কোরান শরীফ ওয়ালা। তাহারাই আল্লাহ তায়ালার আপন ও খাছ লোক।
২৫।হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা কারো প্রতি এত মনোযোগ দেন না যত মনোযোগের সহিত ঐ নবীর আওয়াজকে শুনেন যিনি সুমিষ্ট স্বরে আল্লাহর কালাম পাঠ করেন।
২৬।হযরত ফাযালা ইবনে উবাইদ রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা কোরান তেলোয়াতকারীর আওয়াজ ঐ ব্যক্তির চেয়ে অধিক মনোযোগের সহিত শ্রবন করেন যে আপন গায়িকা বাঁদীর গান কান লাগাইয়া শ্রবন করিতেছে।
২৭।হযরত উবাইদা মুলাইকী রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, হে কোরানওয়ালাগন ! তোমরা কোরান শরীফের সহিত টেক লাগাইও না। রাত্র দিন কোরানের হক আদায় করিয়া তেলোয়াত কর। কোরান পাকের প্রচার প্রসার কর ও উহাকে মধুর সুরে তেলোয়াত কর। উহার অর্থের মধ্যে চিন্তাফিকির কর যাহাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। দুনিয়াতে উহার বদলা চাইও না, আখেরাতে উহার জন্য বড় বদলা ও প্রতিদান রহিয়াছে।
২৮।হযরত ওয়াসেলা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, আমাকে তাওরাতের পরিবর্তে ৭ টি তিওয়াল দেয়া হয়েছে। যবূর এর পরিবর্তে মিঈন এবং ইঙ্গিল এর পরিবর্তে মাছানী দেয়া হয়েছে। আর মুফাসসাল আমাকে অতিরিক্ত দেয়া হয়েছে।
২৯।হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ
বলেন, একদিন আমি গরীব মুহাজেরদের জামাতের সাথে বসে ছিলাম। তাহাদের নিকট এই পরিমান কাপড়ও ছিল না যাহা দ্বারা পুরা শরীর ঢাকিতে পারেন। একজন আরেকজনের আড়াল গ্রহন করিতেছিলেন। এক ব্যক্তি কোরান শরীফ পড়িতেছিলেন। এমন সময় হুজুর পাক সাঃ তশরীফ আনিলেন এবং একেবারে আমাদের নিকট দাঁড়াইয়া গেলেন। হুজুর পাক সাঃ এর আগমনে তেলোয়াতকারী চুপ হয়ে গেলেন। তখন হুজুর পাক সাঃ সালাম করিলেন, অতঃপর জিজ্ঞাসা করিলেন তোমরা কি করিতেছিলে? আমরা আরজ করিলাম আল্লাহর কালাম শুনিতেছিলাম। হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহতায়ালার জন্য যিনি আমার উম্মতের মধ্যে এমন লোক পয়দা করেছেন, যাহাদের নিকট আমাকে বসিবার হুকুম করা হয়েছে। অতঃপর হুজুর পাক সাঃ আমাদের মাঝখানে এমনভাবে বসিলেন যেন আমরা সকলেই সমান দুরত্বে থাকি, কাহারো নিকটেও নয় আবার কাহারো নিকট হতে দুরেও নয়। অতঃপর আমাদের গোলাকার হইয়া বসিতে বলিলেন। সকলেই হুজুর পাক সাঃ এর দিকে মুখ ফিরিয়া বসিয়া গেলেন। হুজুর পাক সাঃ এরশাদ ক রিলেন, হে গরীব মুহাজেরীন ! তোমাদের জন্য সুসংবাদ। কেয়ামতের দিন তোমরা পরিপূর্ন নূর প্রাপ্ত হবে এবং তোমরা ধনীদের হতে অর্ধদিন আগে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আর এই অর্ধদিন ৫০০ বছরের সমান হবে।
৩০।হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোরান পাকের ১ টি আয়াত শুনে তাহার জন্য দ্বিগুন ছওয়াব লেখা হয়। আর যে ব্যক্তি তেলোয়াত করে তাহার জন্য কিয়ামতের দিন নূর হবে।
৩১।হযরত উকবা ইবনে আমের রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, শব্দ করে কোরান তেলোয়াতকারী প্রকাশ্যে ছদকা করনেওয়ালার সমতূল্য। আর আস্তে তেলোয়াতকারী গোপনে ছদকা করার সমতূল্য।
৩২।হযরত জাবের রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, কোরান পাক এমন সুপারিশকারী যার সুপারীশ কবুল করা হয়েছে এবং এমন বিতর্ককারী যার বিতর্ক মানিয়া লওয়া হয়েছে। যে ব্যক্তি উহাকে সম্মুখে রাখে তাকে সে জান্নাতের দিকে টানিয়া লইয়া যায়। আর যে উহাকে পিছনে ফেলে সে তাহাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে।
৩৩।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, রোযা ও কোরান উভয়েই বান্দার জন্য সুপারিশ ক রে। রো্যা আরজ করে হে আল্লাহ আমি তাকে দিনের বেলা খাওয়া ও পানাহার হতে বিরত রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। কোরান শরীফ বলে হে আল্লাহ আমি তাকে রাত্রে ঘুম থেকে বিরত রেখেছি, আমার সুপারিশ কবুল করুন। সুতরাং উভয়ের সুপারিশ কবুল করা হয়।
৩৪।হযরত সায়ীদ ইবনে সুলাইম রঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে কোরানের চেয়ে বড় আর কোন সুপারিশকারী হবে না। না কোন নবী, না কোন ফেরেশ্তা আর না অন্য কেহ।
৩৫।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোরান শরীফ পড়িল সে এলমে নবু্য্যতকে আপন দুই পাঁজরের মাঝখানে ধারন করিল, যদিও তার নিকট ওহী পাঠানো হয় না। কোরানের বাহকের জন্য ইহা উচিত নয় যে কোন ব্যক্তি তার সাথে গ্বোসা করলে সেও তার সাথে গ্বোসা করবে অথবা মূর্খদের সাথে মুর্খতা করবে। কেননা তার ভিতর আল্লাহর কালাম রয়েছে।
৩৬।হযরত ইবনে ওমর রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, ৩ ব্যক্তি এমন হবে যারা কেয়ামতের ভয়ঙ্কর বিপদেও ভীত হবে না। তাহাদের হিসাব নিকাশও দিতে হবে না। সমস্ত মাখলুক যখন তাহাদের নিজেদের হিসাব নিকাশে ব্যস্ত থাকবে তখন তারা মেশকের টিলার উপর আনন্দ করবে।
প্রথমত ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর সন্তূষ্টির জন্য কোরান শরীফ পড়েছে এবং এমনভাবে ইমামতি করেছে যে মুক্তাদিগন তার উপর সন্তূষ্ট ছিল।
দ্বিতীয়ত ঐ ব্যক্তি যে শধুমাত্র আল্লাহর সন্তূষ্টির জন্য মানুষকে নামাজের দিকে ডাকে।
তৃতীয়ত ওই ব্যক্তি যে নিজের মনিব এবং অধীনস্থ লোক উভয়ের সাথে সদ্ব্যবহার করে।
৩৭।হযরত আবূ যর রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, হে আবূ যর, তুমি যদি সকালবেলা গিয়া কালামুল্লাহ শরীফের ১ টি আয়াত শিক্ষা কর তবে উহা ১০০ রাকাত নফল নামাজ অপেক্ষা উত্তম। আর যদি এলেমের ১ ট অধ্যায় শিক্ষা কর, চাই উহার উপর আমল করা হউক বা না হউক তবে উহা ১০০০ রাকাত নফল নামাজ অপেক্ষা উত্তম।
৩৮।হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোন রাত্রে ১০ টি আয়াত তেলোয়াত করিবে সে ঐ রাত্রে গাফেলদের মধ্যে গন্য হবে না।
৩৯।হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ
হতে বর্নিত হুজুর পাক সাঃ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি এই ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায় করিবে, সে গাফেলদের মধ্যে গন্য হবে না। আর যে ব্যক্তি কোন রাত্রে ১০০ টি আয়াত তেলোয়াত করিবে সে ঐ রাত্রে কানেতীন (দীর্ঘক্ষন দাঁড়াইয়া নামাজ আদায়কারী) দের অন্তর্ভূক্ত হবে।
৪০।হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ
হতে বর্নিত জীবরাঈল আঃ হুজুর পাক সাঃ কে সংবাদ দিলেন যে, বহু ফেতনা প্রকাশ পাবে। হুজুর সাঃ জিজ্ঞাসা করিলেন যে এইগুলি হতে বাঁচিয়া থাকার উপায় কি? তিনি বলিলেন কোরান শরীফ।
Post a Comment